ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুন লেগেছে। আগুনে শ্রমিকপল্লির কমপক্ষে ২০টি কক্ষ পুড়ে গেছে। অনেকই ধারণা করছেন কারখানা খোলা রাখাকে কেন্দ্র করে বহিরাগত শ্রমিকরা কারখানাটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস দেরিতে ঘটনাস্থলে আসায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে আশুলিয়ার জিরানী এলাকার নবী টেক্সটাইল কাছে অ্যামাজন নিটওয়্যার লিমিটেড (আল আমিন ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত) নামের কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে স্থানীয় অ্যামাজন ফ্যাক্টরিতে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। গত কয়েকদিন ধরেই পার্শ্ববর্তী বেক্সিমকো কারখানায় শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। আজ স্থানীয় ডরিন নামে আরও একটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। পরে বেক্সিমকো কারখানার কয়েকশ শ্রমিক অ্যামাজন কারখানায় এসে হট্টগোল করে কাজ বন্ধ করে রাখতে বলেন। এ সময় অ্যামাজন কারখানার মালিক ও স্টাফরা বাধা দিলে বেক্সিমকো কারখানার এক শ্রমিকের মাথা ফাটিয়ে দেওয়াসহ কয়েকজনকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
পরে ক্ষুব্ধ হয়ে বেক্সিমকোর শ্রমিকরা অ্যামাজন কারখানায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন কারখানা থেকে আশপাশের শ্রমিক কলোনিতে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বললেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে না পৌঁছানোয় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না। সকাল ১১টায় আগুন লাগলেও তারা দুপুর পর্যন্ত এখানে আসেনি। কারখানার পাশাপাশি শ্রমিকপল্লির অনেক অসহায় শ্রমিকের মূল্যবান জিনিসপত্রসহ আসবাবপত্র পুড়ে গেছে।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘জিরানী এলাকায় একটি কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা দুটি ফায়ার ইউনিট নিয়ে অনেক আগেই রওনা হলেও পথে আন্দোলনরত শ্রমিকরা বাধা দিয়েছেন। যে কারণে সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারিনি।
দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। তবে ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, এভাবে সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গুলোকে কাজে বাধাগ্রস্ত করলে আমাদের জন্য সঠিক সময়ে কাজ কঠিন হয়ে যায়।