২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ বছর রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) চেয়ারম্যান পদে ছিলেন তিনি। টানা তিন বার তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় শেখ হাসিনার সরকার। তার সময়কালে রাকাবে ব্যাপক হারে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে, পদন্নোতি বাণিজ্য, ঋণ বাণিজ্য বদলি বাণিজ্যসহ ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসতে থাকে। এসব নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমেও এর আগে খবরও প্রকাশ হয়েছে।তবে শেষ রক্ষা হলো না সেই চেয়ারম্যান রইছউল আলমের গদিটি। গত ৯ আগস্ট তার চেয়ারম্যান পদটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব আফছানা বিলকিস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রইছউল আলম মণ্ডলকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক আইন, ২০১৪ (২০১৪ সনের ১৯ নম্বর আইন) এর ৯ (২) নম্বর ধারা অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব মোঃ রইছউল আলমকে উক্ত আইনের ১১(২)নম্বর ধারা অনুযায়ী উক্ত ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ হতে নির্দেশক্রমে এতদ্বারা প্রত্যাহার করা হলো।
প্রসঙ্গত, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ব্যাংকটিকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে ব্যাংকটি এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রাকাব সূত্র মতে, ২০২০ সালে রাকাবের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম চুক্তিভিত্তক নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক সচিব রইছউল আলম মণ্ডলকে। শেষবার চলতি বছরের ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি তৃতীয় বারের মতো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু তিনি রাজশাহীতে থাকেন না।ঢাকায় থাকেন। মাঝে মাঝে রাকাবের প্রধান কার্যালয় রাজশাহীর নওদাপাড়াতে আসেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে (রাকাব) ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যানই সকল কলকাঠি নাড়েন। এই সুযোগে চেয়ারম্যান গোটা প্রতিষ্ঠানে নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম করে নিজের পকেট ভারী করছেন। নিয়োগ, বদলি ও গোপন পদোন্নতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জন এবং একটি সিন্ডিকেটের মদদদাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সাবেক সচিব রইছউল আলম মণ্ডল তৃতীয় মেয়াদে রাকাবে নিয়োগ পাওয়ার পর প্রধান কার্যালয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। এই চক্রটি ব্যাংকে নিয়োগ (অরনেট ও এসইসিপি প্রকল্প) বাণিজ্য, বদলি, পদোন্নতিতে বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ে।
এসব বিষয়ে রাকাব চেয়ারম্যান রইছউল আলম মন্ডলের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভি করেননি।