গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে এক কলেজছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় গত শুক্রবার মামলা করা হয়েছে। এতে এক মৃত ব্যক্তিকে আসামি করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্বজনেরা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনের সময় নির্বিচারে ছোড়া গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্র আসীর ইনতিশারুল হক। তাঁর বাবা আ হা ম এনামুল বাদী হয়ে গত ৪ অক্টোবর শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ১৭০ নম্বর আসামি করা হয়েছে মৃত কালা মিয়াকে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কালা মিয়া শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত ২৫ সেপ্টেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। কালা মিয়া কাওরাইদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন।
কালা মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন ঠিক। তাই বলে মৃত মানুষকে হত্যা মামলার আসামি করতে হবে? বাবা গত ২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। তাহলে কী করে বাবার নামে মামলা নিল পুলিশ? আমরা পরিবারের সদস্যরা খুবই কষ্ট পেয়েছি।’
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম খান বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর কালা মিয়া মারা যান। ওই দিন তাঁর বাড়িতে জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আমি জানাজা ও দাফনের সময় উপস্থিত ছিলাম।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে কালা মিয়ার জড়িত বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন কাওরাইদ ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুল হক। তিনি বলেন, ‘যে মানুষটা ২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেল, তাঁকে কীভাবে হত্যা মামলায় আসামি করে? এটা পুলিশের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ।’
গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, ‘মামলার বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের কাজ হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘এজাহারের সময় আসামি মৃত কি না, শনাক্ত করতে পারিনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
গত শুক্রবার কলেজছাত্র আসীর ইনতিশারুল হকের বাবা আ হা ম এনামুল বাদী হয়ে কালা মিয়া ছাড়াও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ আওয়ামী লীগের ২২৭ জন নেতা-কর্মীর নাম ও অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়ে জানতে বাদী আ হা ম এনামুলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।