আশুলিয়ায় ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকে প্রাননাশের হুমকি এবং বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আশুলিয়ায় অবৈধভাবে ডিসের বিল উত্তোলনে বাধা দেয়ায় বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ আকাশ এর বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে প্রায় তিনলক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছে বলে জানা যায়। আব্দুল লতিফ আকাশ (৩৮) মধ্য গাজীরচট দুই সতিনের পুকুর পাড় এলাকার লোকমান হোসেন মিয়ার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ ঘটিকার সময় মধ্য গাজীরচট দুই সতীন এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে সোহাগ (৩০) এর নেতৃত্বে একই এলাকার মৃত আবু সাইদের ছেলে সিয়াম (২০) ও মোঃ রনি (৩০)সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ থেকে ১২০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ আকাশের বাড়িতে গিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ডাকাডাকি করে। আব্দুল লতিফ আকাশ সেসময় বাড়িতে না থাকায় তারা বাড়িঘর ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালায়।
আব্দুল লতিফ আকাশ জানান, ২০০৮ সাল থেকে আমরা মধ্য গাজীরচট ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামে ডিস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এলাকায় ডিস সংযোগ দিয়ে সুনামের সহিত ব্যবসা করে আসছিলাম। কিন্তু গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে সন্ত্রাসী সোহাগের নেতৃত্বে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অবৈধভাবে আমাদের ডিস নেটওয়ার্ক সীমানায় তাদের সংযোগ ঢুকিয়ে ব্যবসা চালাতে থাকে। এবং এক পর্যায়ে আমার প্রতিষ্ঠানকে আর ব্যবসা করতে দেয় নাই। তারপরও অদ্যাবধি আমি নিয়মিতভাবে আইডিয়াল কেবল নেটওয়ার্কের মাসিক ফিড ভাড়া পরিশোধ করে আসিতেছি। সেই সুত্রে আমার প্রতিষ্ঠানই নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ব্যবসা করার বৈধ অধিকার রাখে। এই ক্ষেত্রে আমি ১নং বিবাদীকে আমার ব্যবসায়ীক সীমানার মধ্যে গ্রাহকদের মাসিক ডিস বিল উত্তোলনে নিষেধ করলে সোহাগ গং আমার ওপর হামলা চালায় ও আমাকে নানা হুমকি-ধামকি প্রদান করে। এতেও তারা দমে না গিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে সোহাগের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন সহ আমাকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। বর্তমানে আমি প্রাণনাশের সংশয়ে আছি এবং শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি ।
অন্য এক অভিযোগে জানা যায়, একই দিনে এই ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আরও এক ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, একই এলাকার ডিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মধ্য গাজিরচট ক্যাবল নেটওয়ার্কের আরেক অংশিদার মোঃ ওসমান গনির উপরেও ২৭ সেপ্টেম্বর বেলা আনুমানিক ১২.৩০ ঘটিকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার ঘটনায়ও পুর্বের অভিযোগের বিবাদী ছাড়াও ১নং বিবাদী সোহাগ হোসেনের আপন বড় ভাই মোঃ কবির হোসেন (৩২)কে ১নং ও তাদের পিতা মোঃ তোতা মিয়া (৬৫)কে ২নং বিবাদী দিয়ে আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে আসামী করে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
মোঃ ওসমান গনি জানা, এই এলাকায় ২০০৮সাল থেকে আমাদের মধ্য গাজিরচট ক্যাবল নেটওয়ার্ক নামের ডিস প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সহিত ব্যবসা করে আসছিলাম। কিন্তু ২০১৮ সালে আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত ডিস সংযোগের সীমানা জবরদখল করে নিয়ে নেয় এবং বিবাদীরা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের সিমানার মধ্যে মাসিক বিল উত্তোলন করতে থাকে। অবৈধ ভাবে ডিস বিল তুলতে আমি ও আমার লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে বিবাদীরা আমাদের উপর এই হামলা চালায় এবং প্রাননাশের হুমকি দেয়। এখন আমি আমার জীবন নিয়ে সংশয়ে আছি বিধায় এর প্রতিকার চেয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ অভিযোগের বিষয়ে বিবাদীগনদের কাছে জানতে চাইলে জানায়, তাদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অসত্য ও হয়রানি মুলকভাবে করা হয়েছে।
এই অভিযোগের তদন্তে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, আমি এই হামলার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু অন্য একটা জরুরী কাজে ব্যস্ত থাকায় এখনো তদন্ত কাজ শুরু করতে পারি নাই। তবে অতি দ্রুতই তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এদিকে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ডিস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এই এলাকাতে যেভাবে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে এবং যেভাবে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মারমুখী হয়ে সঙ্গবদ্ধ ভাবে গোপনে অবস্থান নিয়ে আছে অতিসত্বর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর একটা ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।