all-in-one-wp-security-and-firewall
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114ঢাকার সাভারে টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদার নামের এক ব্যক্তিকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়। তবে এখানেই দুষ্কৃতিকারীরা থেমে যায়নি, হামলা চালিয়েছে মামলার বাদী ইমরান হোসেন গোলদারের বসত বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনায়। প্রতিবাদ করলে তার পরিবারের উপর নেমে আসে বিভিন্ন হয়রানি। শুধু তাই নয় মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবারকে। আলোচিত জামাল হোসেন গোলদারের হত্যাকারীদের চক্রান্ত থেকে বাঁচতে এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাভার উপজেলা পরিষদ চত্তরে মানববন্ধনের আয়োজন করে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী। মানববন্ধনের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন গোলদার।
জানা গেছে, গত ২০২২ সালে বৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারের নিকট হতে ২ লাখ টাকা নেন আওয়ামীলীগ নেতা ও ঠিকাদার ফোরকান হাকিম । কিন্ত এক বছর পার হলেও ঠিকাদার হাকিম বৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন দিতে পারেনি। এতে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় জামাল হোসেন গোলদারকে। এতে ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করলে সেই মামলা তুলে নিতে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে বাদীকে হয়রানি করছে।
ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারের হত্যাকাণ্ডের দায়ে তিনজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন আদালত। তারা হলেন- সাভার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে ফোরকান হাকিম (৪৮), লোকমান হাকিম (৫১) ও গোফরান হাকিম (৪৫)।
এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীদের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনাও ঘটিয়েছে আসামিরা।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ- ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান হামিদ, সাভার দক্ষিণ রাজাসন ঘাসমহল এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো: শাহজাহান (৪৩), একই এলাকার মো: আরশেদের স্ত্রী মোছা: মোর্শেদা বেগম (৪৬), দিলু মিয়ার ছেলে মো: ডালিম মিয়া (২৮) ও শাহজাহান (৩২), মৃত ছামির আলী আব্দুল গনি (৪৮), মৃত আব্দুল আলীর ছেলে রহম ওরফে রহমত আলী, মোঃ শাকিল আহমেদ স্ত্রী রুম্মান শারমিন (৩০), ও শাকিল আহমেদ (৩৫) বিভিন্ন সময় হামলা ও ভাঙচুরের সাথে জড়িত। এ ঘটনায় তাদের আসামি করে আদালতের মাধ্যমে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
আসামীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি থেকে বাঁচতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। তার একটি নথি গণমাধ্যম কর্মীদেরকেও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ পত্রের তথ্য অনুসারে, আসামীরা তিতাস গ্যাসের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগকারী দলের মাফিয়া চক্রের সদস্য। ব্যবসায়ী জামাল হোসেন গোলদারকে সাভার আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার বৈধ-অবৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন করে দিতে পারবে বলে জানায়। সেজন্য নিজ বাড়িতে বৈধ গ্যাস সংযোগ লাইন নেওয়ার জন্য ২০২২ সালের অক্টোবরে আসামীদের ২ লাখ টাকা দেয়। এই লাইনে ২/৩ মাসের মধ্যে গ্যাস সংযোগ হবে বলে জানায় আসামীরা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় তাদের তাগাদা দেয়। কিন্তু আসামীরা দীর্ঘদিন পরেও গ্যাস সংযোগ না দেওয়ায় জামাল হোসেন গোলদার তাদের কাছে টাকা ফেরত চায়। তবে টাকা ফেরত না দিয়ে পরিবারের লোকজনদের উপর হয়রানি করতে থাকে। পরে গত বছরের ১৬ই সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জামাল হোসেন গোলদারকে হত্যা করে। এ ঘটনায় জেল হাজতে থাকা আসামিদের রিমান্ডে আনে পুলিশ। তবে মামলা প্রত্যাহারের জন্য জামাল হোসেন গোলদার ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে অভিযুক্তরা। এছাড়া বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এদিকে মামলা প্রত্যাহার না করায় উল্টো নিহতের ছেলেকে ছিনতাইকারী বলে মারধর করে পুলিশে দেয় ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান হামিদসহ অন্যরা। অভিযোগ পত্রে বিভিন্ন সময় তুচ্ছ ঘটনায় পরিবারকে হেনস্থার কথা উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগে নিহতের ভাই ইমরান হোসেন গোলদার বলেন, বিবাদীদের কথামতো মামলা প্রত্যাহার না করায় আসামীদের ষড়যন্ত্রে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। নিহত জামাল হোসেন গোলদারের ছেলে রিয়াজুল ইসলামকে (১৭) গত বছরের নভেম্বর মাসে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে সুরুচি হোটেলের সামনে একা পেয়ে রায়হান, ফোরকান, আনোয়ার, ইমরানসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী মারধরসহ হত্যার চেষ্টা করে। এবং তাকে ছিনতাইকারী বানিয়ে সাভার মডেল থানায় সোপর্দ করে। পরে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে জানতে পেরে ছাত্রলীগ নেতা রায়হান হামিদসহ ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। পরিবারের পক্ষ থেকে দায়েরকৃত হত্যা মামলা এবং হত্যার চেষ্টা মামলা ভিন্ন খাতে নিতে উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন প্রাপ্ত প্রধান আসামী ফোরকান হাকিম বাদী হয়ে উল্টো পরিবারের সদস্যদের নামে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি ফোরকান হাকিমের দায়েরকৃত সেই মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। গত ৫আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাভার পৌর যুবদলের ৮ নং ওয়ার্ডের ৪ নং সহ-সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও উস্কে দিয়ে ইমরান হোসেন গোলদার কে যুবলীগ কর্মী বা নেতা বলে প্রচার করে এবং পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে সাভারের দক্ষিণ রাজাসন এলাকার সাইনবোর্ডের মোড়ে অবস্থিত দুই তলা বিশিষ্ট ভবনে গোডাউনের ইট ও গেইট ভেঙে অনুমানিক ৩৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ভাঙচুর করে আরও ১২ লাখ সহ মোট ৫০ লাখ ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি করে।
পরে মানববন্ধনটি উপজেলা চত্তর থেকে মিছিল সহকারে সাভার মডেল থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ।
এ সময় নিহতের স্ত্রী মশিউরা বেগম, ছেলে রিয়াজুলসহ শতাধিক স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেয়।