ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি আমিনুল হক শামীমের বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর প্রভাবশালী এজেন্ট।
এটা মুখে মুখে রটানো কোনো অভিযোগ নয়, আমিনুল হক শামীম নিজেও গর্বের সঙ্গে এ পরিচয় দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পত্র পত্রিকায় কোনো প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিলেই সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে এক দাদাবাবু ফোন দিয়ে নরমে গরমে হুমকি ধমকি দিয়ে থাকেন।
ওই ফোনদাতাও আমিনুল হক শামীম তাদের নিজস্ব লোক দাবি করে বলতেন, তার ব্যাপারে কোনরকম নেগেটিভ আলোচনা মিডিয়ায় আনা যাবে না, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দফতর থেকেই নিষেদ রয়েছে
শামীমের হয়ে পোষ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতো ব্যবহার হতেন ময়মনসিংহের সাবেক ডিসি মিজানুর রহমান ও কয়েক কর্মকর্তা। শামীমের আঙ্গুলি হেলনে তারা যে কাউকে সাইবার এ্যাক্ট ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় আসামি বানিয়ে দিতেন।
এমন একজন কারাগাণ্ডে যান ছাপাখানার শামীম। যা ছিল ময়মনসিংহে আলোচনা সমালোচনা। আমিনুল হক শামীম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিদেশে ৩৬ বারের মত সফরসঙ্গী ছিলেন। শেখ হাসিনার টাকা
দমন কমিশনের (দুদক) নেতৃত্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এ অবস্থায় দুদককে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন
পাচারের বড় মাফিয়া ছিলেন আমিনুল হক শামীম। আমিনুল হক শামীমেনর নির্দেশে ময়মনসিংহের পুলিশের কয়েক কর্মকর্তাকে দিয়ে বিএনপি- জামাতের অনেক নেতাকে আটক করে জঙ্গি সাজিয়ে ডিবির সাবেক ওসিদের নির্মিত ওম ঘরে আটকে বর্বর নির্যাতন চালাতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ময়মনসিংহ জামাত শিবিরের ৪ জন কর্মীকে জঙ্গি বানিয়ে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের সহায় সম্পদ দখল করে নেয় আমিনুল হক শামীম। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে আমিনুল হক শামীম নিজে লাপাড়া হলেও নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে নানা লবিং চালিয়ে যাচ্ছে তার লোকজন।
এদিকে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে, নিরহ লোকদের জমি দখল, রাজনীতিকে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং তৈরীসহ অসংখ্য অপরাধের খলনায়ক আমিনুল হক শামীম। সরকার পতনের পর বিএনপি এক নেতার মাধ্যমে উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ার খাতে আমিনুল হক শামীম নাকি ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বাজেট রয়েছে।
ময়মনসিংহে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গেও গভীর সখ্যতা গড়তে বিকল্প কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন আমিনুল হক শামীম। তিনি ডায়মন্ড ওয়ার্কের পিআরও পরিচয়দানকারী ও অপর একজন ম্যানেজার ইতিমধ্যেই রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের মাঝে দফায় দফায় নানা উপহার সামগ্রি পৌঁছানোর কাজে খুবই ব্যস্থ সময়
কাটাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, হঠাত করেই স্বর্ণ চোরাচালান, হীরা প্রতারণা, ছক্তি বাণিজ্য, নিজস্ব পরিবহন শামীম এন্টারপ্রাইজে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা চালান ময়মনসিংহ নিয়ে আসছেন। তার নির্দেশে ময়মনসিংহ নগরীতে ৯ টি খুন হয়েছে। কিন্তু আসামী হয়েছে নিরহ ব্যাক্তিরা। ৫০ হাজার
কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া আমিনুল হক শামীমকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়েছে। তাকে কেন্দ্র করে সরকারের নানা পর্যায়েও সৃষ্টি হয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতির। সুদক থেকে উচ্চ আদালত সর্বত্রই চলছে তোলপাড়। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমানভিত্তিক পাহাড়সম অভিযোগ থাকা সত্তেও বেজায় দাপটের চরম বেপরোয়া আমিনুল হক শামীমকে কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের আমলে ময়মনসি ংহ সদর- ৪ থেকে এমপি হওয়ার খায়েশ নিয়ে ময়মনসিংহ খোদ ক্ষমতাসীন দলেই মারাক বিভক্তির সূত্রপাত ঘটেছে। ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সরকারদলীয় চার সংসদ সদস্যসহ ত্যাগী নেতা কর্মিদের বিরুদ্ধে আমিনুল হক শামীম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন, শুরু করেছেন বিরোধ, বিভক্তির নানা তেলেসমাতি।
বিভিন্ন দল, মতের দুই শতাধিক বহিরাগত লোককে লেলিয়ে নানা দুর্বৃত্তপনার মাধ্যমে মাফিয়া চক্রনটি সাধারণ মানুষের ভূমি দখল করে এলএ শাখার কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নাম খারিজের মাধ্যমে প্রায় ১০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আর মহা পরিকল্পনায় আছেন
আর মহা পরিকল্পনায় আছেন আরও হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। আমিনুল হক শামীম পৈতৃক নিবাস জামালপুর সদরের। জামালপুর ও ময়মনসিংহের সাধারণ মানুষজনের কাছে আমিনুল হক শামীম বড় ধরনের মাফিয়া ডন হিসেবেই পরিচিত।
অনেকেই মনে করেন, জীবিকার সন্ধানে তিন দশক আগে জামালপুর ছেড়ে ময়মনসিংহে পাড়ি জমানো আমিনুল হক শামীম বিভিন্ন চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে নিজের ভাগ্যকে আমূল বদলে নিয়েছেন। ময়মনসিংহের সকল স্থরের মানুষ এখন ডন শামীম হিসাবে চিনে-জানে। আমিনুল হক শামীমের আস্তানায় এখন দেশি বিদেশি হরেক রকম ধনকুবের, স্মাগলার, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ভিড় লেগেই থাকে। ময়মনসিংহে অঢেল সহায় সম্পদ তার। ভারতের কোলকাতা, কানাডা, মালশিয়ায় ও যুক্তরাষ্ট্রে বোম্বে এবং জয়পুরে তার আলীশান বাড়ি নির্মিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতেও আছে প্রাসাদসম স্থাপনা। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব রয়েছে তার। আছে একাধিক পাসপোর্ট। তার দাপটের কোনো কমতি নেই। ময়মনসিংহের জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে তারই বন্ধু মনির সঙ্গে পার্টনারশিপে ঠিকাদারীর কাজ করতো শামীম। কোনরকম জীবন যাপন করা শামীম ময়মনসিংহ এসেই রাতারাতি ধনাঢ্য হয়ে উঠে। তার মূল ব্যবসা হচ্ছে সোনা চোরাচালান। তার ভাই মেয়র টিটু হলো চালিকা শক্তি। শামীম খুবই পল্টিবাজ মানুষ। আজ যার সঙ্গে গলাগলি ধরে পথ চলবে কালই তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে। একসময় তার ঠিকাদারীর পার্টনার পার্টনার ওয়াসকুরুনি সাথেও তার বিরোধ। ডায়মন্ড বলে নকল ডায়মন্ড বিক্রি করে বলে শুনেছি।