ঢাকা ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমতলীতে অর্ধ শতাধিক লুটপাট, দখল ও ভাংচুরের অভিযোগ।

আমতলী উপজেলায় গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যৗল্প চার দিনে অর্ধ শতাধিক লুটপাট, দখল ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পরপরই বিএনপি নামধারী একদল সন্ত্রাসী আমতলী উপজেলা শহর, বাজার ও বিভিন্ন স্ট্যান্ডে লুটপাট, ভাংচুর ও দখল শুরু করে। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত চার দিনে উপজেলার অন্তত অর্ধ শতাধিক লুটপাত, দখল ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত সোমবার উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের বাসভবন এবং হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার বাসভবনে আগুন দেয়।

ওই সন্ত্রাসীরা বরগুনা মহিলা এমপি ফারজানা সুমির কার্যালয়, আওয়ামীলীগ কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খানের কার্যালয়, গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলামের কার্যালয়, যুবলীগ অফিস, পৌরসভা কার্যালয়, ফরিদ ম্যালকারের বাসভবন ও পৌরসভার পাঁচটি গাড়ী ভাংচুর করে। ওইদিন রাতে বিএনপি নেতা আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাতেন দেওয়ানের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী গাজীপুর বন্দরের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের দোকান ভাংচুর করে অন্তত ৬০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে ওই বিএনপি নেতা আন্তঃজেলা গাজীপুর খেয়াঘাট দখল করে নেয়। অপর দিকে উপজেলার গোজখালী বাজারে আল আমিন সিকদার ও ইউপি সদস্য ফোরকান হাওলাদারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ৭টি দোকান ঘর দখল এবং পাঁচটি দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবী করেন ভুক্তভোগী হাসান মাহমুদ। এছাড়া শাখারিয়া স্ট্যান্ডে মোকসেদুল মৃধা নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী পাঁচটি ঘর ভাংচুর ও একটি দোকানের মালামাল লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মালেক ব্যাপারী। মহিলকাটা বাজারের বিএনপি নেতা নাশির হাওলাদার, বাচ্চু হাওলাদার ও খোকনের নেতৃত্বে বাস কাউন্টার ভাংচুর ও দখল করেছে। বুধবার রাতে মহিষকাটা বাজারে আশ্রাব মৃধার বাসার গেট ভেঙ্গে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী বাসার ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আনসার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ঝর্ণা ও মারিয়া নামের দুইজনকে আটক করে। বৃহস্পতিবার আবুল কালাম আজাদ নামের এক সন্ত্রাসীরা পৌরসভার ওয়াবদা এলাকার ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে।

নামধারী বিএনপি নেতাদের এমন তান্ডবে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রিবাজ করছে। ভুক্তভোগীরা আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাসম্মদ আশরাফুল আলমকে দখল, লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ দেয়। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম লুটপাট, দখল ও ভাংচুর এলাকা পরিদর্শণ করেছেন।

আমতলী উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, কেউ বিএনপি’র পদ পদবী ব্যবহার করে ভাংচুর, লুটপাট ও দখল করে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, লুটপাট, ঘর দখল ও ভাংচুর এলাকা পরিদর্শন করেছি।
যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি, আহবায়ক এনামুল সদস্য সচিব টুটুল

আমতলীতে অর্ধ শতাধিক লুটপাট, দখল ও ভাংচুরের অভিযোগ।

আপডেট সময় ০৯:৪৮:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪

আমতলী উপজেলায় গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যৗল্প চার দিনে অর্ধ শতাধিক লুটপাট, দখল ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।

জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পরপরই বিএনপি নামধারী একদল সন্ত্রাসী আমতলী উপজেলা শহর, বাজার ও বিভিন্ন স্ট্যান্ডে লুটপাট, ভাংচুর ও দখল শুরু করে। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত চার দিনে উপজেলার অন্তত অর্ধ শতাধিক লুটপাত, দখল ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত সোমবার উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের বাসভবন এবং হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধার বাসভবনে আগুন দেয়।

ওই সন্ত্রাসীরা বরগুনা মহিলা এমপি ফারজানা সুমির কার্যালয়, আওয়ামীলীগ কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খানের কার্যালয়, গুলিশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. এইচএম মনিরুল ইসলামের কার্যালয়, যুবলীগ অফিস, পৌরসভা কার্যালয়, ফরিদ ম্যালকারের বাসভবন ও পৌরসভার পাঁচটি গাড়ী ভাংচুর করে। ওইদিন রাতে বিএনপি নেতা আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাতেন দেওয়ানের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী গাজীপুর বন্দরের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের দোকান ভাংচুর করে অন্তত ৬০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে ওই বিএনপি নেতা আন্তঃজেলা গাজীপুর খেয়াঘাট দখল করে নেয়। অপর দিকে উপজেলার গোজখালী বাজারে আল আমিন সিকদার ও ইউপি সদস্য ফোরকান হাওলাদারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা ৭টি দোকান ঘর দখল এবং পাঁচটি দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবী করেন ভুক্তভোগী হাসান মাহমুদ। এছাড়া শাখারিয়া স্ট্যান্ডে মোকসেদুল মৃধা নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী পাঁচটি ঘর ভাংচুর ও একটি দোকানের মালামাল লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মালেক ব্যাপারী। মহিলকাটা বাজারের বিএনপি নেতা নাশির হাওলাদার, বাচ্চু হাওলাদার ও খোকনের নেতৃত্বে বাস কাউন্টার ভাংচুর ও দখল করেছে। বুধবার রাতে মহিষকাটা বাজারে আশ্রাব মৃধার বাসার গেট ভেঙ্গে ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী বাসার ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আনসার বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ঝর্ণা ও মারিয়া নামের দুইজনকে আটক করে। বৃহস্পতিবার আবুল কালাম আজাদ নামের এক সন্ত্রাসীরা পৌরসভার ওয়াবদা এলাকার ব্যবসায়ী ইদ্রিস মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করেছে।

নামধারী বিএনপি নেতাদের এমন তান্ডবে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রিবাজ করছে। ভুক্তভোগীরা আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাসম্মদ আশরাফুল আলমকে দখল, লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ দেয়। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম লুটপাট, দখল ও ভাংচুর এলাকা পরিদর্শণ করেছেন।

আমতলী উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, কেউ বিএনপি’র পদ পদবী ব্যবহার করে ভাংচুর, লুটপাট ও দখল করে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, লুটপাট, ঘর দখল ও ভাংচুর এলাকা পরিদর্শন করেছি।
যারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।