উখিয়া উপজেলার ৪নং রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন পাঁচ প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নির্ধারিত সময় বিকাল পাঁচটার মধ্যে উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বরাবর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা।
মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী, ফরিদুল আলম (কন্ট্রাক্টর), সাদমান জামি চৌধুরী, মকবুল হোসাইন মিথুন ও আব্দুল মালেক চৌধুরী।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৫ জুলাই; রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ জুলাই; আপিল নিষ্পত্তি ৯ জুলাই; প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১০ জুলাই; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১১ জুলাই ও ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৭ জুলাই। এবার ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দ্বারা।
গেল ২৯ মে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ‘চেয়ারম্যান পদ’ থেকে পদত্যাগ করেন টানা তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। এর পরে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে পড়লে নির্বাচন কমিশন গত ২৭ জুন উপনির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে।
উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দেয় উখিয়ার ভোটাররা। তারা এই নতুন পদ্ধতিটা ঠিকঠাক গ্রহণ করতে পারবে কি না তা নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। আগের দুই ধাপের তুলনায় এ উপজেলায় বেশি ভোট কাস্টিং (৪৫ শতাংশ) হওয়াতে আমরা বলতেই পারি উখিয়াবাসী ইভিএম পদ্ধতিকে সাদরে গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এই উপনির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ হবে, শান্তিপূর্ণ হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও বজায় থাকবে, মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইভিএমে ভোট প্রদান করতে পারবে।
উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে পদত্যাগপত্র জমা দেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, আমার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর (বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) অসমাপ্ত কাজগুলো আমি সম্পন্ন করতে চাই। নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নকে মাদকমুক্ত গড়ে তোলার পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য নতুন প্রতিষ্ঠান গড়া, যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত করাসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন করতে চান তিনি।
ব্যালট পদ্ধতিতে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হেরে যাওয়ায় এবারেও ভোট কারচুপির আশঙ্কায় ছিলেন সাদমান জামি চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা এবারে ইভিএম চেয়েছিলাম এবং সেটা পেয়েছি। যার কারণে নির্বাচন অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ইভিএম পদ্ধতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাদমান জামি চৌধুরী বলেন, ইভিএম দেওয়ায় পঞ্চাশ শতাংশ নিরাপদবোধ করছি। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসিটিভি স্থাপন করা হলে, অবশিষ্ট পঞ্চাশ শতাংশ নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত ফরিদুল আলম বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন আশা করছি।
সবেক ছাত্রলীগ নেতা মকবুল হোসাইন মিথুন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের নেতৃত্ব দরকার। এই নির্বাচনে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, হবে, সেটা আমি জানি। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব।
আগামী ২৭ জুলাই ইভিএম পদ্ধতিতে ১৫টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। রাজাপালং ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে ৪২৫৯৮ জন। এর মধ্যে ২২১৮৭ জন পুরুষ ও ২০৪১১ জন মহিলা ভোটার।