ঢাকা ০১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারখানা শ্রমিকদের বি’ক্ষো’ভে পুলিশের গু’লি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে
ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আনোয়ারা নিট কম্পোজীট কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে, পুলিশ শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করে, এসময় ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কের দুই পাসের ১০ কিলোমিটার দূরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ি যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য সহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। উপজেলার মাওনা রঙ্গিলা এলাকায় মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২ জুলাই সকালে আনোয়ারা নিট কম্পোজিট  কারখানার দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় শ্রমিকরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আ স ম আব্দুর নূর (৫৫) ও কনস্টেবল মো. ইনসান মিয়া (৩২)। আহত শ্রমিকেরা হলেন জামেলা খাতুন (২৮) লিপি আক্তার (৩৪), লিজা আক্তার (২৮) ও সুমি আক্তার (২৩)।
কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক আব্দুর রাহিম বলেন, আমাদের বার্ষিক ছুটি দেওয়া হয় না, এর টাকাও দেওয়া হয় না। সেই টাকার দাবিতে বেলা ১১টা থেকে আমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশ সমানে রাবার বুলেট ছোড়ে। তাতে আমাদের কারখানার ছয়জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক আসমা আক্তার বলেন,দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানা আমাদের ছুটির বার্ষিক টাকা দেই-দিচ্ছি করছে। কিন্তু আমাদের সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবারই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ন্যায্য পাওনার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হলো। আর আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ভাইবোনদের গুলিবিদ্ধ হতে হলো।
কারখানার কাটিং সেকশনের শ্রমিক আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের কেন রাস্তায় নামতে হলো, আপনি শ্রমিক হলে এটা সহজে বোঝাতে পারতেন। আমরা শ্রমিকেরা আজ খুবই অসহায়। সামান্য বেতনে চাকরি করি। তার পরও আন্দোলন করে পাওনা আদায় করতে হয়। পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে, মারধর করে, টিয়ার গ্যাস মেরে আমাদের আহত করে। আমাদের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে ন্যায্য পাওনা আদায় করতে হয়।’
কারখানার শ্রমিক শিল্পী আক্তার বলেন,পুলিশের গুলিতে আমাদের দুজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জামেলা খাতুনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কয়েকজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে আনোয়ার নিট কম্পোজিট কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সায়িম বলেন, কারখানার শ্রমিকেরা আজ সকালে কর্মস্থলে এসে দাবি করেন তাঁদের ছুটির বার্ষিক টাকা দিতে হবে। হঠাৎ এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চলতি মাসে বার্ষিক টাকা দেওয়ার কথা জানালে শ্রমিকেরা রাস্তা অবরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আনোয়ারা নিট কম্পোজিট মিলের আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল পুলিশ। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটি পক্ষ পুলিশকে লক্ষ্য করা ইট ছোড়ে। তাতে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আ স ম আব্দুর নুরের মাথা ফেটে গেছে। আরেকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ

কারখানা শ্রমিকদের বি’ক্ষো’ভে পুলিশের গু’লি

আপডেট সময় ০৮:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আনোয়ারা নিট কম্পোজীট কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে, পুলিশ শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করে, এসময় ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কের দুই পাসের ১০ কিলোমিটার দূরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ি যানজটের সৃষ্টি হয়। গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য সহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। উপজেলার মাওনা রঙ্গিলা এলাকায় মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২ জুলাই সকালে আনোয়ারা নিট কম্পোজিট  কারখানার দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় শ্রমিকরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক আ স ম আব্দুর নূর (৫৫) ও কনস্টেবল মো. ইনসান মিয়া (৩২)। আহত শ্রমিকেরা হলেন জামেলা খাতুন (২৮) লিপি আক্তার (৩৪), লিজা আক্তার (২৮) ও সুমি আক্তার (২৩)।
কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক আব্দুর রাহিম বলেন, আমাদের বার্ষিক ছুটি দেওয়া হয় না, এর টাকাও দেওয়া হয় না। সেই টাকার দাবিতে বেলা ১১টা থেকে আমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশ সমানে রাবার বুলেট ছোড়ে। তাতে আমাদের কারখানার ছয়জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক আসমা আক্তার বলেন,দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানা আমাদের ছুটির বার্ষিক টাকা দেই-দিচ্ছি করছে। কিন্তু আমাদের সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবারই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। ন্যায্য পাওনার জন্য আমাদের আন্দোলন করতে হলো। আর আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ভাইবোনদের গুলিবিদ্ধ হতে হলো।
কারখানার কাটিং সেকশনের শ্রমিক আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের কেন রাস্তায় নামতে হলো, আপনি শ্রমিক হলে এটা সহজে বোঝাতে পারতেন। আমরা শ্রমিকেরা আজ খুবই অসহায়। সামান্য বেতনে চাকরি করি। তার পরও আন্দোলন করে পাওনা আদায় করতে হয়। পুলিশ এসে লাঠিপেটা করে, মারধর করে, টিয়ার গ্যাস মেরে আমাদের আহত করে। আমাদের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে ন্যায্য পাওনা আদায় করতে হয়।’
কারখানার শ্রমিক শিল্পী আক্তার বলেন,পুলিশের গুলিতে আমাদের দুজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে জামেলা খাতুনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কয়েকজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে আনোয়ার নিট কম্পোজিট কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সায়িম বলেন, কারখানার শ্রমিকেরা আজ সকালে কর্মস্থলে এসে দাবি করেন তাঁদের ছুটির বার্ষিক টাকা দিতে হবে। হঠাৎ এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে চলতি মাসে বার্ষিক টাকা দেওয়ার কথা জানালে শ্রমিকেরা রাস্তা অবরোধ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর শিল্প পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আনোয়ারা নিট কম্পোজিট মিলের আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে চেয়েছিল পুলিশ। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটি পক্ষ পুলিশকে লক্ষ্য করা ইট ছোড়ে। তাতে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আ স ম আব্দুর নুরের মাথা ফেটে গেছে। আরেকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।