কিন্তু প্রথম থেকেই ‘মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন তার ইজারাকৃত জায়গায় রানীনগরের ইজাদার দাদাভাই এন্টারপ্রাইজের বিভিন্ন অনিয়মতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে বারংবার মৌখিক অভিযোগ করেও আশনারুপ ফল না পেয়ে অবশেষে ‘মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ২২/০৪/২০২৪ ইং তারিখে তিনি এ অভিযোগ দাখিল করেন। নিম্নে অভিযোগপত্রটি দেয়া হল।
উক্ত অভিযোগপত্রে ‘মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল অভিযোগ করে বলেন – চলতি বাংলা ১৪৩১ সালে গোদাগাড়ী বালু মহলের নিলামে অংশ নিয়ে আমি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে এই বালু মহলের ইজারা লাভ করি। গত ১লা বৈশাখ এই বালু মহল আমাদের কাছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন বুঝিয়ে দেয়। এরপর থেকে আমরা নিয়ম মেনেই সেখান থেকে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রানীনগরে দাদাভাই এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বালু মহল আছে যার স্বত্ত্বাধিকারী রুহুল আমিন রাসেল। উক্ত বালু মহালের সীমানা গোদাগাড়ী থেকে আনুমানিক ১০ কি.মি. দূরুত্বে অবস্থিত। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল রানীনগর বালু মহল থেকে বালু উত্তোলন করে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর জোতগোশাই নামক স্থানে রাজশাহী ওয়াসার জমিতে অবৈধভাবে বালু মজুত, বিক্রয় ও পরিবহন করছে যা সম্পুর্নভাবে অবৈধ ও বেআইনি। এতে আমার ব্যবসার বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা সরজমিনে গিয়ে তাদেরকে অবৈধ কাজের প্রতিবাধ করলে তারা কোন কর্নপাত করছেনা বরং নানাবিধ হুমকিমূলক কথাবার্তা বলছে। এতে ওই এলাকায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকা দেখা দিয়েছে ।
এ বিষয়ে সরেজমিন গোদাগাড়ীর বালুর ঘাটের ঐ অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায় রানীনগরের দাদাভাই এন্টারপ্রাইজ ইজারাদার এখনোও পাইপ দিয়ে বালু উত্তোলন চলমান রেখেছেন। শুধু তাই নয়, রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কর্তৃক স্বাক্ষরিত স্মারক নং-৩১,৪৩,৮১০০.০১৫.০১.০৯.২৮ অনুযায়ী পর্যালোচনা করে দেখা যায় রাজশাহী জেলা প্রশাসন মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজকে রাজশাহী গোদাগাড়ী থানাধীন ৫ মৌজার চরবার্নিশ, শেখেরপাড়া, এলাহীনগর, পদ্মানদীস এবং ৬ মৌজার কেল্লাবারুইপাড়া বারইপাড়া উজানপাড়া ভাটোপাড়া অংশ বালু উত্তোলনের জন্য অনুমতি প্রদান করেছেন। কিন্তু তারপরও রাজশাহী জেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত জায়গায় চাপাইনবাবগঞ্জের বালু মহাল কিভাবে পাইপ স্থাপনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড চালাতে পারে সেটিই বড় প্রশ্ন।
তবে এই বিষয় নিয়ে রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান – আমরা মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছি। অভিযোগ তদন্ত করে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অন্যদিকে রাজশাহী গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান – রানীনগরের ইজারাদার দাদাভাই এন্টারপ্রাইজ অবশ্যই রাজশাহী সীমান্তে বালু রক্ষনাবেক্ষন কিংবা সংরক্ষনের অধিকার রাখেননা। কেননা রাজশাহী গোদাগাড়ী বালু মহালের স্বত্তাধিকারী ‘মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজ’ এর স্বত্ত্বাধিকারী মুখলেসুর রহমান মুকুল বালু মহাল ইজারা নিয়েছেন। এক্ষেত্রে গোদাগাড়ী অঞ্চলে বাইরের অন্য কোন বালু মহালের কেউ যদি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় তবে অবশ্যই আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
পরবর্তীতে মেসার্স মুন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী মুখলেসুর রহমান মুকুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান – আমি রাজশাহী জেলা প্রশাসনের কাছে থেকে সকল প্রকার নিয়মনীতি মেনে ইজারা নিয়েছি এবং সকল প্রকার আইন মেনে কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু তারপরেও আমার ইজারাকৃত জায়গা কেউ যদি পাইপ লাইন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে তা অনৈতিক ও আইন বিরোধী। বিধায় আমি রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি। তাছাড়াও আমার বালু মহালকে বিতর্কিত করতে ও মূল ঘটনাকে আড়াল করতে ঐ কুচক্রি মহল বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে।