all-in-one-wp-security-and-firewall
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114দেশে বিভিন্ন জাতের চাল ছাঁটাই করে মিনিকেট ও নাজিরশাইল নামে বিক্রি হয়। এভাবে ছাঁটাইয়ের (পলিশ) কারণে চালের পুষ্টিমান জাতভেদে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। অন্যদিনে চালকলগুলোতে একটি চালের দানা ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করা হয়। এর অর্ধেকটা কমানো গেলে প্রায় ২৫ লাখ টন চাল সাশ্রয় করা সম্ভব। যা এখন ছাঁটাইয়ের পরে প্রাণীখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও রাইস ব্রান তেলের উপাদান হিসেবেও এটি ভারতে পাচার হচ্ছে।
বুধবার (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ‘নিউট্রিশন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট অব পলিশড রাইস সোলড ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রকাশ করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. আব্দুল অলিম
তিনি বলেন, এ গবেষাণায় আমরা চাল পলিশিংয়ের দুটি ক্ষতিকর দিক পেয়েছি। যার একটা, পলিশিংয়ের কারণে ওপরের আবরণ ছেঁটে ফেলা হয়। এর ফলে পুষ্টিমান কমে যাচ্ছে। কারণ চালের বাইরের আবরণে পুষ্টিমান বেশি থাকে।
আব্দুল অলিম বলেন, এ গবেষণায় আমরা দেখেছি ১০ শতাংশ ছাঁটাই করলে প্রায় ৬০ ভাগ পর্যন্ত পুষ্টি কমে। যেখানে মিলগুলোতে ৫ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত চাল ছাঁটাই করছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। বিশেষ করে পলিশিং চালে মিনারেল ও জিংক-আয়রনের মাত্রা একেবারেই কমে যায়। যেটা থাকাটা স্বাাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এ পলিশিংয়ের পরে সেই চালের পেস্ট দিয়ে বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে প্রাণীখাদ্য তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি ভারতে পাচারও হচ্ছে। প্রাণীখাদ্যও ভারতে পাচার হচ্ছে। অর্থাৎ সেটা চাল পাচারই দাঁড়াচ্ছে। এসব (চাল পলিশ ও পাচার) অর্ধেক রোধ করা সম্ভব হলেও প্রায় ২৫ লাখ টন চাল সাশ্রয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম
তিনি বলেন, চালের উৎসজাত নিয়ে যে প্রতারণা হচ্ছে সেটার কী ক্ষতি জানার জন্য এমন গবেষণার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে। এখন এ গবেষণা ধরে কত শতাংশ ছাঁটাই করা হবে সেটা নির্ধারণ করা হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয় একটি আন্তর্জাতিক সিস্টেমের সঙ্গে সামজস্যপূর্ণ চাল ছাঁটায়ের নিয়ম বেঁধে দিতে চায়। এফএওর (জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) সঙ্গে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরিতে কাজ হচ্ছে।
এদিকে এ গবেষণা পরবর্তী বেশ কিছু সুপারিশ করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছে, ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণের জন্য মোড়কের গায়ে চালের জাতের নাম উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া যে কোনো জাতের চালকে শুধুমাত্র পূর্ণসিদ্ধ অথবা আতপ অবস্থা ব্যতীত বাজারজাত করা যাবে না। কেননা, কোনো কোনো চালের ক্ষেত্রে তা আধাসিদ্ধ অবস্থায় বাজারজাত করা হয়, যা দ্রুত নষ্ট হয় বলে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না।
এছাড়া যে কোনো চালের পলিশিং কোনভাবেই তা ৮ শতাংশের বেশি করা যাবে না এমন সুপারিশ করা হয়েছে। চালে পানির পরিমাণ সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ রাখার পাশাপাশি ধানের আসল জাত ব্যতীত অন্য কোনো নামে চাল বাজারজাত করা যাবে না (যেমন মিনিকেট, নাজিরশাইল)।
ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম সরকার। তিনি বলেন, দেশে যেসব চাল মিনিকেট বা নাজিরশাইল নামে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো আসলে ওই জাত নয়। বিভিন্ন জাতের চাল ছাঁটাই করে এমন নাম দিয়ে ভোক্তাকে প্রতারিত করা হচ্ছে। সেটা বন্ধ করার জন্য কাজ চলছে।
সেমিনারে বেশ কয়েকজন মিলমালিক তাদের মতামত দেন। তারা বলেন, সাদা ধবধবে চালের জনপ্রিয়তা ও চাহিদার কারণে পলিশিংয়ের প্রচলন হয়েছে। খোদ সরকারও এক সময় লাল চাল সংগ্রহ করেনি। তখন লাল চাল পলিশ করে সাদা করে খাদ্যগুদামে দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন, চাহিদা থাকলে যে কোনো পণ্য সেভাবেই বাজারজাতের চেষ্টা করে সবাই। এজন্য জনসচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। পুষ্টিমান থাকলেও মানুষ এখন লাল চাল খেতে চায় না। বাজারে দিলেও সেটা বিক্রি করা যায় না।