ঢাকা ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফেনসিডিল সাধারনত ইন্ডিয়াতে তৈরি হয়।

নিশ্চুপ ঘাতক ফেনসিডিল এর ছদ্মনাম ফান্টুস ,ইঞ্চি বা ডাইল।

  • মোঃ আরিফ হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৫১:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মার্চ ২০২২
  • ৫৭৬ বার পড়া হয়েছে

নববানী

মাদকের নাম  ফেনসিডিল (phensidyl)। হাজার টাকার নেশা তোমার সাথে বেঈমানি করতে পারে কিন্তু ১০ টাকার গাঁজা কখনো বেঈমানি করবে না”- ডায়লগটা গাঁজা খোরেদের। ডায়লগটা থেকে বুঝাই যাচ্ছে গাঁজা অনেক হাইভোল্টেজ নেশা। আর এই গাজার নেশাটাকে মিনিমাম ১৫০ গুন বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আধা বোতল ফেনসিডিল ই যথেষ্ট।

ফেনসিডিলকে সাধারনত ছাত্রনেতা, পাতিনেতা, লোকাল মাস্তানদের নেশা বলা হয়। সাধারনত অন্যান্য মাদক থেকে এর দুষ্প্রাপ্যতা এবং বেশী দামের কারনে এটাকে পলিটিক্যাল নেশা বা ভদ্র নেশা বলা হয়। কিন্তু ভয়াবহ সত্য হল রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে সমাজের উঁচুতলার অনেক ভদ্রলোকও এটা সেবন করে।তবে এটায় বেশির ভাগ আসক্ত হল ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে, বর্তমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদীয়মান তরুন নেতা, লোকাল ছাত্র নেতারা। ইদানীং মেয়েদের মধ্যেও এর আসক্তি চোখে পড়ার মত।ফেন্সিডিল  এক ধরনের  কাশির ঔষুধ। সাধারনত ইন্ডিয়া, নেপাল এবং বাংলাদেশের লোকদের মাঝে এর আসক্তি দেখা যায়। তবে এর মাঝে বাংলাদেশের লোকদের মাঝেই এর আসক্তি খুব বেশী। তবে অন্যান্য দেশের মধ্যে একমাত্র সাউথ আফ্রিকাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে এর আসক্তি দেখা যায়।

ফেনসিডিল সাধারনত ইন্ডিয়াতে তৈরি হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছিলো এই ঔষুধ তৈরীর কারখানা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি তা বোঝা যাচ্ছে ভালোভাবেই। বর্তমানে বাংলাদেশে ফেনসিডিল আসক্ত বেড়ে চলছে।ছদ্মনামঃ ফেন্সি/ডাইল/ফান্টা/ফান্টু/ইঞ্চি/টাকা(১০০০টাকা মানে একটা ফেনসিডিল)/মধু/বাঘের দুধ/লাইন/মবিল/মাল ইত্যাদি। মাদকাসক্তরা নিজেদের মধ্যে ফেন্সি নিয়ে আলাপ করার সময় কিংবা কেনার সময় এই ছদ্ম নাম ব্যবহার করে যাতে সাধারন মানুষ কি নিয়ে আলাপ হচ্ছে তা বুঝতে না পারেন। দামঃ বর্তমানে ফেনসিডিল একটু দামী নেশা। সাধারনত একটু রিমোট এরিয়াতে এর বেচাকেনা হয় এবং বেশিরভাগ সময়ই মোটর সাইকেল না থাকলে এটা সংগ্রহ করা কস্টকর। মাঝে মাঝে যারা বিক্রি করে তারাও মোটর সাইকেল ব্যবহার করে ক্রেতার কাছে দিয়ে আসে। সাধারনত লোকাল লিডারদের ছত্রছায়ায় এর বেচা কেনা চলে।  আর দামের ক্ষেত্রে বলা যায়, আজ থেকে ৬-৭বছর আগেও এক বোতল বিক্রি হতো ৪০০-৫০০টাকায়। বর্তমানে এলাকাভেদে এর দামের তারতম্য দেখা যায়। সাধারনত বর্ডার এরিয়াতে ৩০০-৩৫০ টাকায়, বর্ডারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২০০-২৫০টাকায়, এবং অন্যান্য এলাকায় ৭০০-৮০০টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। দামের ক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতা দুইজনই একক সংখ্যা ব্যবহার করে। মানে ৭ টাকা/৮টাকা। এবং এর কেনাবেচা অত্যন্ত তরিত গতিতে সম্পন্ন হয়।
দিন কে দিন ফেনসিডিল আসক্তি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারন হলো এর সেবনের সুবিধার জন্য। অন্য যে কোন ধরনের মাদক সেবনের জন্য নুন্যতম একটু সময় এবং জায়গা দরকার। কিন্তু ফেনসিডিল এর জন্য সময় এবং জায়গা কোনটারই দরকার নেই। অনেকে মোটর সাইকেলের পেছনে বসেও খেয়ে থাকে। সাধারনত দাম একটু বেশী হওয়ার কারনে দুইজন শেয়ার করে এক বোতল খায়।আর এক বোতলে থাকে ১০০মিলি।
যদি গ্রুপ করে খাওয়া হয় অর্থাৎ ৪-৫জন খায় তখন সাধারনত এক জায়গায় বসে গ্লাসে ঢেলে পানি মিশিয়ে খায়।
ফেনসিডিল  সাধারনত ছুটির দিনের আগে, বিশেষ উতসবের দিনে খাওয়া হয়। আবার অনেকে লং জার্নির শুরুতে এটা খেয়ে থাকে। তবে যারা কয়দিন কন্টিনিউ করে তাদের জন্য উতসব লাগেনা। প্রতিদিনি তারা কোন না কোন উতসব বের করে ফেলে।সাধারনত কৌতুহল থেকেই অনেকেই ফেনসিডিল খেয়ে থাকেন। তবে অনেক সময় ডিপ্রেশান, ছ্যাকা খাওয়া মানুষ সহজেই এতে জড়িয়ে পড়েন।
ফেনসিডিল সেবনকারীর সিম্পটমসঃ বেশীরভাগ ফেন্সিখোর স্পটে (যেখানে বেচা কেনা হয়) যেয়েই খেয়ে আসে। সাধারনত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পরার ভয়েই এটা নিয়ে চলাফেরা করেনা।
যারা সাধারনত রেগুলার ফেন্সিখোর তারা বিকেল ৩-৪ টার মধ্যেই খেয়ে ফেলে। তাহলে এর একশনটা ৩-৪ ঘন্টা থাকে। অবশ্য যদি ডুপ্লি ফেন্সি পরে তাহলে ভাবের একশন হওয়ার বদলে পেটে সমস্যা দেখা দেয়।
ফেন্সি খাওয়ার মিনিমাম আধা ঘন্টা পর কড়ড়া চিনি দিয়ে দুধ চা খায়। যারা ফেন্সিখোর তাদের সাধারনত র চা খেতে দেখা যায়না। সবসময়ই কড়ড়া চিনি দিয়ে দুধ চা খায়। আর প্রচুর পরিমানে সিগারেট খেতে থাকে। এবং অনেকসময় তা অবিশ্বাস্য হারে বেড়ে যায়।ফেন্সিখোররা সাধারনত একটু বেশীই চুপচাপ থাকে। অনেকটা ঝিম মেরে থাকে। কোলাহল থেকে দূরে যেয়ে একলা বসে থাকে আর সুযোগ পেলেই সিগারেট খায়। ফেন্সি খাওয়ার ৫-৬ঘন্টা পর অনেকে গাজা খেয়ে থাকে।যারা গাঁজা খায় তারা সাধারনত অনেক রাতে ঘুমায়, ঘুমানোর কিছুক্ষন আগ থেকে গাঁজা সেবন করে। বাসার ছাদে বা বারান্দায় গভীর রাতে গাঁজা খেয়ে রুমে ঢুকে সটান শুয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে। ফেন্সি ও গাঁজা খেয়ে গান শুনতে ভালবাসে অনেকেই,তবে যারা শুধু গাজা খায় তারা হেডফোন লাগিয়ে হাই ভলিউমে গান শুনে। কিন্তু ফেন্সি খাওয়ার পর গাজা খেলে সবাই সাধারনত খুব লো ভলিউমে গান শুনে। এবং তারা একা বা আরেকজন ফেন্সিখোরের সাথেই চলতে বেশী স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে। তবে একটি ব্যাপার বেশ লক্ষ্যনীয় যে ফেন্সিখোরদের মাঝে খুব বেশী মিল মহব্বত থাকে যদিও তারা ভিন্ন ভিন্ন নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে। তবে যারা প্রথম প্রথম ফেন্সি খায় তারা অনেকসমইয়ই তা সহ্য করতে পারেনা। দেখা যায়, শরীর প্রচন্ড গরম হয়ে যায়।কোন স্থান কাল বিবেচনা না করেই যেকোন জায়গাই সটান করে শুয়ে পরে। সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়।
ফেন্সিখোররা সাধারনত কারো চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। সাহস কমে যায়, কথা বার্তা খুব কমে যায়। যেকোন কাজের স্পিড নষ্ট করে দেয়।
ফেন্সি খেলে সাধারনত খুধা অনেক কমে যায়। যারা ফেন্সি খায় তাদের পকেটে বেশীরভাগ সময়ই চকলেট থাকে বিশেষ করে এলপিনেবল চকলেট।
যারা ফেন্সি খায় তারা অনেক মারফতি চিন্তা ভাবনা করে যা সাধারন অবস্থায় সম্ভব না, চিন্তার গভীরতা অনেক বেড়ে যায়। অনেক বেড়ে যায় বলতে গভীরতা মাঝে মাঝে এতই বেড়ে যায় যে সে নিজেও বুঝতে পারেনা।আর সুস্থ্য অবস্থায় এই চিন্তা ভাবনাগুলো কল্পনাতেও আসেনা।
চিকিৎতসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর ক্ষতিকর দিক হচ্ছে, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, রুচি নষ্ট হওয়া, এবডোমিনাল পেইন, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু ফেন্সিখোরদের পরিনতি খুব বেশীই ভয়াবহ। আর বেশীরভাগ ফেন্সিখোরদের কেউই এমনকি পরিবারের সদস্যরাও ট্রেস করতে পারেনা। যারা একেবারেই ফেন্সিখোর তারা একা একা চলাফেরা করে। দিনের বেলায় কাজ না থাকলে বের হয়না। নিজে নিজে খুব বেশী চিন্তা ভাবনা করে। এবং একসময় তা নেগেটিভ পর্যায়ে চলে যায়। সবাইকেই সন্দেহ করতে থাকে। এবং এটা তার নিজের ভেতরেই রেখে দেয়। কারো সাথে শেয়ার করেনা। চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে ফেন্সিখোরদের কনফিডেন্স অনেক বেশী। সবসময়ই ভাবে তারা যা চিন্তা করে তাই সঠিক। আর সবার চিন্তা ভাবনাই ভুল। এবং একটা সময় মানসিকভাবেই অসুস্থ্য হয়ে যায়।যে কোন কাজের প্রতিই তাদের আগ্রহ কমে যায়।যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় ফেন্সিখোরদের চাকরী চলে যায়,ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ

ফেনসিডিল সাধারনত ইন্ডিয়াতে তৈরি হয়।

নিশ্চুপ ঘাতক ফেনসিডিল এর ছদ্মনাম ফান্টুস ,ইঞ্চি বা ডাইল।

আপডেট সময় ০৭:৫১:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মার্চ ২০২২

মাদকের নাম  ফেনসিডিল (phensidyl)। হাজার টাকার নেশা তোমার সাথে বেঈমানি করতে পারে কিন্তু ১০ টাকার গাঁজা কখনো বেঈমানি করবে না”- ডায়লগটা গাঁজা খোরেদের। ডায়লগটা থেকে বুঝাই যাচ্ছে গাঁজা অনেক হাইভোল্টেজ নেশা। আর এই গাজার নেশাটাকে মিনিমাম ১৫০ গুন বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আধা বোতল ফেনসিডিল ই যথেষ্ট।

ফেনসিডিলকে সাধারনত ছাত্রনেতা, পাতিনেতা, লোকাল মাস্তানদের নেশা বলা হয়। সাধারনত অন্যান্য মাদক থেকে এর দুষ্প্রাপ্যতা এবং বেশী দামের কারনে এটাকে পলিটিক্যাল নেশা বা ভদ্র নেশা বলা হয়। কিন্তু ভয়াবহ সত্য হল রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে সমাজের উঁচুতলার অনেক ভদ্রলোকও এটা সেবন করে।তবে এটায় বেশির ভাগ আসক্ত হল ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে, বর্তমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদীয়মান তরুন নেতা, লোকাল ছাত্র নেতারা। ইদানীং মেয়েদের মধ্যেও এর আসক্তি চোখে পড়ার মত।ফেন্সিডিল  এক ধরনের  কাশির ঔষুধ। সাধারনত ইন্ডিয়া, নেপাল এবং বাংলাদেশের লোকদের মাঝে এর আসক্তি দেখা যায়। তবে এর মাঝে বাংলাদেশের লোকদের মাঝেই এর আসক্তি খুব বেশী। তবে অন্যান্য দেশের মধ্যে একমাত্র সাউথ আফ্রিকাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে এর আসক্তি দেখা যায়।

ফেনসিডিল সাধারনত ইন্ডিয়াতে তৈরি হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছিলো এই ঔষুধ তৈরীর কারখানা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি তা বোঝা যাচ্ছে ভালোভাবেই। বর্তমানে বাংলাদেশে ফেনসিডিল আসক্ত বেড়ে চলছে।ছদ্মনামঃ ফেন্সি/ডাইল/ফান্টা/ফান্টু/ইঞ্চি/টাকা(১০০০টাকা মানে একটা ফেনসিডিল)/মধু/বাঘের দুধ/লাইন/মবিল/মাল ইত্যাদি। মাদকাসক্তরা নিজেদের মধ্যে ফেন্সি নিয়ে আলাপ করার সময় কিংবা কেনার সময় এই ছদ্ম নাম ব্যবহার করে যাতে সাধারন মানুষ কি নিয়ে আলাপ হচ্ছে তা বুঝতে না পারেন। দামঃ বর্তমানে ফেনসিডিল একটু দামী নেশা। সাধারনত একটু রিমোট এরিয়াতে এর বেচাকেনা হয় এবং বেশিরভাগ সময়ই মোটর সাইকেল না থাকলে এটা সংগ্রহ করা কস্টকর। মাঝে মাঝে যারা বিক্রি করে তারাও মোটর সাইকেল ব্যবহার করে ক্রেতার কাছে দিয়ে আসে। সাধারনত লোকাল লিডারদের ছত্রছায়ায় এর বেচা কেনা চলে।  আর দামের ক্ষেত্রে বলা যায়, আজ থেকে ৬-৭বছর আগেও এক বোতল বিক্রি হতো ৪০০-৫০০টাকায়। বর্তমানে এলাকাভেদে এর দামের তারতম্য দেখা যায়। সাধারনত বর্ডার এরিয়াতে ৩০০-৩৫০ টাকায়, বর্ডারের পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২০০-২৫০টাকায়, এবং অন্যান্য এলাকায় ৭০০-৮০০টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। দামের ক্ষেত্রে ক্রেতা বিক্রেতা দুইজনই একক সংখ্যা ব্যবহার করে। মানে ৭ টাকা/৮টাকা। এবং এর কেনাবেচা অত্যন্ত তরিত গতিতে সম্পন্ন হয়।
দিন কে দিন ফেনসিডিল আসক্তি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারন হলো এর সেবনের সুবিধার জন্য। অন্য যে কোন ধরনের মাদক সেবনের জন্য নুন্যতম একটু সময় এবং জায়গা দরকার। কিন্তু ফেনসিডিল এর জন্য সময় এবং জায়গা কোনটারই দরকার নেই। অনেকে মোটর সাইকেলের পেছনে বসেও খেয়ে থাকে। সাধারনত দাম একটু বেশী হওয়ার কারনে দুইজন শেয়ার করে এক বোতল খায়।আর এক বোতলে থাকে ১০০মিলি।
যদি গ্রুপ করে খাওয়া হয় অর্থাৎ ৪-৫জন খায় তখন সাধারনত এক জায়গায় বসে গ্লাসে ঢেলে পানি মিশিয়ে খায়।
ফেনসিডিল  সাধারনত ছুটির দিনের আগে, বিশেষ উতসবের দিনে খাওয়া হয়। আবার অনেকে লং জার্নির শুরুতে এটা খেয়ে থাকে। তবে যারা কয়দিন কন্টিনিউ করে তাদের জন্য উতসব লাগেনা। প্রতিদিনি তারা কোন না কোন উতসব বের করে ফেলে।সাধারনত কৌতুহল থেকেই অনেকেই ফেনসিডিল খেয়ে থাকেন। তবে অনেক সময় ডিপ্রেশান, ছ্যাকা খাওয়া মানুষ সহজেই এতে জড়িয়ে পড়েন।
ফেনসিডিল সেবনকারীর সিম্পটমসঃ বেশীরভাগ ফেন্সিখোর স্পটে (যেখানে বেচা কেনা হয়) যেয়েই খেয়ে আসে। সাধারনত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পরার ভয়েই এটা নিয়ে চলাফেরা করেনা।
যারা সাধারনত রেগুলার ফেন্সিখোর তারা বিকেল ৩-৪ টার মধ্যেই খেয়ে ফেলে। তাহলে এর একশনটা ৩-৪ ঘন্টা থাকে। অবশ্য যদি ডুপ্লি ফেন্সি পরে তাহলে ভাবের একশন হওয়ার বদলে পেটে সমস্যা দেখা দেয়।
ফেন্সি খাওয়ার মিনিমাম আধা ঘন্টা পর কড়ড়া চিনি দিয়ে দুধ চা খায়। যারা ফেন্সিখোর তাদের সাধারনত র চা খেতে দেখা যায়না। সবসময়ই কড়ড়া চিনি দিয়ে দুধ চা খায়। আর প্রচুর পরিমানে সিগারেট খেতে থাকে। এবং অনেকসময় তা অবিশ্বাস্য হারে বেড়ে যায়।ফেন্সিখোররা সাধারনত একটু বেশীই চুপচাপ থাকে। অনেকটা ঝিম মেরে থাকে। কোলাহল থেকে দূরে যেয়ে একলা বসে থাকে আর সুযোগ পেলেই সিগারেট খায়। ফেন্সি খাওয়ার ৫-৬ঘন্টা পর অনেকে গাজা খেয়ে থাকে।যারা গাঁজা খায় তারা সাধারনত অনেক রাতে ঘুমায়, ঘুমানোর কিছুক্ষন আগ থেকে গাঁজা সেবন করে। বাসার ছাদে বা বারান্দায় গভীর রাতে গাঁজা খেয়ে রুমে ঢুকে সটান শুয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে। ফেন্সি ও গাঁজা খেয়ে গান শুনতে ভালবাসে অনেকেই,তবে যারা শুধু গাজা খায় তারা হেডফোন লাগিয়ে হাই ভলিউমে গান শুনে। কিন্তু ফেন্সি খাওয়ার পর গাজা খেলে সবাই সাধারনত খুব লো ভলিউমে গান শুনে। এবং তারা একা বা আরেকজন ফেন্সিখোরের সাথেই চলতে বেশী স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করে। তবে একটি ব্যাপার বেশ লক্ষ্যনীয় যে ফেন্সিখোরদের মাঝে খুব বেশী মিল মহব্বত থাকে যদিও তারা ভিন্ন ভিন্ন নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে। তবে যারা প্রথম প্রথম ফেন্সি খায় তারা অনেকসমইয়ই তা সহ্য করতে পারেনা। দেখা যায়, শরীর প্রচন্ড গরম হয়ে যায়।কোন স্থান কাল বিবেচনা না করেই যেকোন জায়গাই সটান করে শুয়ে পরে। সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়।
ফেন্সিখোররা সাধারনত কারো চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে না। সাহস কমে যায়, কথা বার্তা খুব কমে যায়। যেকোন কাজের স্পিড নষ্ট করে দেয়।
ফেন্সি খেলে সাধারনত খুধা অনেক কমে যায়। যারা ফেন্সি খায় তাদের পকেটে বেশীরভাগ সময়ই চকলেট থাকে বিশেষ করে এলপিনেবল চকলেট।
যারা ফেন্সি খায় তারা অনেক মারফতি চিন্তা ভাবনা করে যা সাধারন অবস্থায় সম্ভব না, চিন্তার গভীরতা অনেক বেড়ে যায়। অনেক বেড়ে যায় বলতে গভীরতা মাঝে মাঝে এতই বেড়ে যায় যে সে নিজেও বুঝতে পারেনা।আর সুস্থ্য অবস্থায় এই চিন্তা ভাবনাগুলো কল্পনাতেও আসেনা।
চিকিৎতসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর ক্ষতিকর দিক হচ্ছে, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, রুচি নষ্ট হওয়া, এবডোমিনাল পেইন, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু ফেন্সিখোরদের পরিনতি খুব বেশীই ভয়াবহ। আর বেশীরভাগ ফেন্সিখোরদের কেউই এমনকি পরিবারের সদস্যরাও ট্রেস করতে পারেনা। যারা একেবারেই ফেন্সিখোর তারা একা একা চলাফেরা করে। দিনের বেলায় কাজ না থাকলে বের হয়না। নিজে নিজে খুব বেশী চিন্তা ভাবনা করে। এবং একসময় তা নেগেটিভ পর্যায়ে চলে যায়। সবাইকেই সন্দেহ করতে থাকে। এবং এটা তার নিজের ভেতরেই রেখে দেয়। কারো সাথে শেয়ার করেনা। চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে ফেন্সিখোরদের কনফিডেন্স অনেক বেশী। সবসময়ই ভাবে তারা যা চিন্তা করে তাই সঠিক। আর সবার চিন্তা ভাবনাই ভুল। এবং একটা সময় মানসিকভাবেই অসুস্থ্য হয়ে যায়।যে কোন কাজের প্রতিই তাদের আগ্রহ কমে যায়।যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় ফেন্সিখোরদের চাকরী চলে যায়,ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যায়।