রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১ হাজার ১৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নগর ভবনের সিটি হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বাজেট ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। এরআগে বেলা সাড়ে ১১টায় রাসিকের বিশেষ সাধারণ সভায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বাজেটের এর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১ হাজার ৭ কোটি ১৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৩২৩ টাকা ১১ পয়সা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার ৬১৮ কোটি ১১ লক্ষ ২ হাজার ২১০ টাকা ১৭ পয়সা দাঁড়িয়েছে। আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ ধরে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি ৩৪ লক্ষ ৭০ হাজার ১০০ টাকা।
সংবাদ সম্মেনের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ, শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন রাসিক মেয়র।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রায় ১০ লক্ষ জনগোষ্ঠীর রাজশাহী মহানগরী দেশীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে সবুজ, পরিচ্ছন্ন, পরিবেশসম্মত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রিয় নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা ও সিটি কর্পোরেশনের সম্মানিত কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকলের নিরলস প্রচেষ্টায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে। এবার আমার নির্বাচনী ¯েøাগান ছিল ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’। আগামী দিনে আমি ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি সহ আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রæতিসমূহ পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবো।
স্মার্ট রাজশাহী বির্নিমানে রাসিক মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা, ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের দেশ হবে স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ। সেই পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট রাজশাহী বিনির্মাণে প্রকৌশলপত্র তৈরী করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ২০টি প্রকল্পের ১৬২টি উদ্যোগের মাধ্যমে রাজশাহীকে স্মার্ট নগরীতে রুপান্তর করতে লাগবে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা। জরুরি ভিত্তিতে বাছাই করে ২০২৪ সাল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী মোড় পর্যন্ত সড়ক, বিমান চত্বর হতে বিহাস, বিনোদনকেন্দ্রের উন্নয়ন, শেখ রাসেল শিশুপার্ক নির্মাণ, উপশহর মোড় হতে সোনাদিঘী মোড় এবং মালোপাড়া মোড় হতে সাগরপাড়া মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প, রাজশাহী মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ও নর্দমা সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প, রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প, ‘রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন, বন্ধগেট হতে সিটি হাট পর্যন্ত বর্তমান দুইলেন সড়কটি চারলেনে উন্নীতকরণ, ভদ্রা মোড় রেলক্রসিং হতে পারিজাত লেক হয়ে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ চারলেন নির্মাণ, হাইটেক পার্ক সংলগ্ন সড়ক, কোর্ট ঢালুর মোড় হতে কাশিয়াডাঙ্গা সড়ক, সপুরা থেকে পোস্টাল একাডেমি পর্যন্ত সড়ক সহ বিভিন্ন সড়ক ও গুরত্বপূর্ণ মোড় প্রশস্ত করা হয়েছে। ফলে নগরীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।
চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প :২৯৩১ কোটি ৬১ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর উন্নয়নে ১৯৬২ কোটি টাকার টেন্ডার আহŸান করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৮১৬ কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে হতে ইতোমধ্যে ১২২০ কোটি টাকা অবমুক্ত হয়েছে। বর্তমান ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের অত্র প্রকল্পে সরকার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেছে। প্রকল্পের চলমান কাজের সামগ্রিক অগ্রগতি ৫৬%। রাজশাহী মহানগরবাসীর জনদুর্ভোগ লাঘবে ৩০টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ও নতুন রাস্তা এবং নর্দমা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।প্রকল্পের আওতায় সিএন্ডবি মোড়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল নির্মিত হয়েছে। মহানগরীর যানজট নিরসনে ৫টি ফ্লাইওভার ও একটি টানেল নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে মোহনপুর ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন শেষে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিলসিমলা, বন্ধগেট এবং নতুনপাড়া রেলওয়ে ক্রসিং-এ বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান চত্ত¡রে ফ্লাইওভার নির্মাণে টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ভদ্রা মোড়ে অত্যাধুনিক টানেল নির্মাণের নকশা প্রণয়ন কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় ২৫০ কি.মি. কর্পোটিং সড়ক, ২৬৫ কি.মি.সিমেন্ট কনক্রিট সড়ক, ৩৫৬ কি.মি নর্দমা, ১০৪ কি.মি ফুটপাত নির্মাণ কাজ বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন কার্পেটিং রাস্তা ৯৯কি.মি., কার্পেটিং রাস্তা পুনঃনির্মাণ ১০৭ কি.মি. কার্পেটিং রাস্তা প্রশস্তকরণ ৪৫ কি.মি, নতুন সিমেন্ট কনক্রিট ১৮৫ কি.মি.সিমেন্ট কনক্রিট পূন:নির্মাণ ৮০ কি.মি এবং প্রাইমারী ড্রেন ৪.৫ কি.মি. সেকেন্ডারী ড্রেন ৬০ কি.মি.টারসিয়ারী ড্রেন ২৯২ কি.মি.নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পের আওতায় ১৫ টি গণশৌচাগার, ৪ টি ওয়ার্ড কার্যালয় কাম কমিউনিটি সেন্টার, ১০টি দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।এছাড়া প্রকল্পের আওতায় গোরস্থানসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন, ৪টি কাঁচা বাজার, প্রাকৃতিক জলাশয় সমূহের উন্নয়ন, ওয়াকওয়ে সহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চলছে। মিঞাপাড়া পাবলিক লাইব্রেরী ও ধর্মসভার অবশিষ্ট অংশ নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। ৯৩ কোটি ৪৮ লাখ ব্যয়ে তালাইমারী মোড় হতে কাটাখালী বাজার পর্যন্ত অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ ৬ লেন সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।১৯টি জলাশয়ের মধ্যে ১২টি জলাশয়ে মাটি খনন, সাইট ফিলিং, প্রতিরক্ষা প্রাচীর, ওয়াকওয়ে ও বিভিন্ন সৌন্দর্য্য বর্ধন নির্মাণ কাজ চলছে।
হযরত শাহ্ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্প: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৭ হাজার টাকার ‘হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্প’ কাজ চলছে। ইতোমধ্যে উক্ত প্রকল্পের আওতায় শাহ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মসজিদ ও মাজার কমপ্লেক্স নির্মাণে স্থাপত্য নক্সা ও প্রকৌশল নক্সা প্রণয়ন ও নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক নিয়োগ, ৪ তলা মাজার কমপ্লেক্স-এর প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪ তলা মিনারসহ মসজিদ নির্মাণ, মাজার নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, প্রবেশ গেইট নির্মাণ ও ল্যান্ড স্কেপিং করা হবে। ইতোমধ্যে এটির জন্য পরামর্শক নিয়োগসহ ট্রেন্ডার আহবান করে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু কাজ চলমান রয়েছে।
শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর সমাধিসৌধ নির্মাণ প্রকল্প : ৩০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর সমাধিসৌধ নির্মাণ প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদন হয়ে বর্তমান অর্থ বছরে ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও জাতীয় চার নেতার অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘ মেয়াদে রাজশাহী এলাকার ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষিত হবে। দেশের মানুষ আমাদের গৌরব জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর জীবনাদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে। বর্তমান সমাধিসৌধের ভূমি অপ্রতুল হওয়ায় প্রকল্পের আওতায় ১.২৯ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে আধুনিক স্থাপত্য নক্সা অনুসরণে সৌধ নির্মাণ করা হবে। যা বাস্তবায়িত হলে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে রাজশাহী মহানগরী অনেক গুরুত্ব পাবে।
লোকাল গর্ভমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপনস এ্যান্ড রিকভারি শীর্ষক প্রকল্প: লোকাল গর্ভমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপনস এ্যান্ড রিকভারি শীর্ষক প্রকল্প এর আওতায় ৫৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪.৯২৭ কি.মি কার্পেটিং রাস্তা, ৮১৫ মি ফুটপাথ, ১৯৮০ বর্গ মিটার নার্সিং ইন্সটিটিউটের সংস্কার কাজ, ৫টি সিডিসি ক্লাষ্টার অফিস ও মার্কেট, ৪২০০ বর্গ মিটার, সিটি হাসপাতাল এর মেরামত কাজ, ১.৬০৫ কি.মি. আরসিসি ড্রেন, ১১৪০ বর্গ মিটার নগরপাড়া শিশু পার্ক নির্মান, ৫০টি ইলেকট্রিক পোল বসানোর কাজ চলমান রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপন করা হবে। রাজশাহী থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের মায়া ও ধুলিয়ান পর্যন্ত নৌ প্রটোকল রুট চালু হলে ভারতের সাথে আমদানি রপ্তানির নতুন করিডোর হবে পদ্মা নদী। এখানে আন্তর্জাতিক নদীবন্দর প্রতিষ্ঠা হলে নৌপথে বিভিন্ন মালামাল পরিবহনের মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত হতে মালামাল অনেক কম খরচে পরিবহন করা সম্ভব হবে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং বেকার সমস্যারও সমাধান হবে। আগামীতে আরো বিভিন্ন দেশের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে রাজশাহীর উন্নয়ন কাজকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে রাসিক মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে রাজশাহীতে তিনটি শিল্পাঞ্চল অনুমোদন দিয়েছেন। এরমধ্যে বিসিক কর্তৃক বিসিক শিল্পনগরী-২ প্রকল্পটি রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের কেচুয়াতৈল এলাকায় ৫০ একর জায়গায় ১৭২ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে। বিসিক শিল্পনগরী-২ প্রকল্পের শিল্প প্লট বরাদ্দ প্রদানের বিষয়ে ইতিমধ্যে পত্রিকায় আবেদন আহবান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ জন নারী উদ্যোক্তাকে প্লট হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে সেখানে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও চামড়া শিল্পপার্ক প্রতিষ্ঠা করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশের বড় বড় শিল্প গ্রæপকে রাজশাহীতে বিনিয়োগে তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক পুরোপুরি চালু হলে সেখানে ১৪ হাজারের অধিক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া রাজশাহী মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় ও বিকেএসপি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং প্রকল্পের পাশর্^বর্তী এলাকাসমূহে নতুন নতুন অবকাঠামো নির্মাণের ফলে শহর আরো বিকশিত ও কর্মমুখর হবে। ইতোমধ্যে নগরীতে ব্যাপক অবকাঠামো নির্মিত হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ড কার্যালয়কে সেবার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বিবেচনা করে নাগরিক সেবা প্রদানে গুরুপূর্ণ ভুমিকায় নিয়োজিত রাখা হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন, শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান নার্সিং কলেজ স্থাপন করা হবে। রাজশাহী-আব্দুলপুর রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণের উদ্যোগ, হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী মহানগরীকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার-এর গৃহিত ৮ম পঞ্চবার্ষিকী, এসডিজি, স্মার্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান’কে ভিত্তি ধরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন ধরনের স্বল্প মেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ৫ বছর স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা (২০২৪-২০২৯) হচ্ছে, ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। নদী ও বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা। সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ। রাজশাহী মহানগরীর প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ প্রকল্প (৪য় পর্যায়) শুরু করা। মহানগরীর কুমারপাড়া গুলগোফুর পেট্রোল পাম্প হতে সাহেব বাজার বড় মসজিদ, বড়কুঠি, পাঠানপাড়া, শিমুলতলা ক্লাব হয়ে ফায়ারব্রিগেড মোড় পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর চকপাড়া এলাকায় স্যাটেলাইট টাউন উন্নয়ন প্রকল্প। মহানগরীর ওয়ার্ড পর্যায়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সড়কবাতিতে আলোকায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। রিজিলিয়েন্ট আরবান এ্যান্ড টেরিটরিয়্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। আন্তর্জাতিক নৌবন্দর স্থাপন। রাজশাহীতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন ও বাস চলাচল চালু করা। বঙ্গবন্ধু রিভারসিটি‘র সূচনা। ১০ বছর দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা (২০৩০-২০৪০) হচ্ছে, ১৫০ শয্যা রাজশাহী সিটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর সম্প্রসারিত এলাকায় সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন প্রকল্প।রাজশাহী মহানগরীর ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাপনার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এলাকায় পরিচ্ছন্ন কর্ম নিবাস নির্মাণ কাজ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীতে শেখ রাসেল সায়েন্স সিটি ও সাফারি পার্ক নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী মহানগরীর আন্ডার পাস প্রকল্প।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাজেট প্রণয়ন কমিটির আহবায়ক ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নিযাম উল আযীম, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলী, ১নং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর তাহেরা খাতুন, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাসেল জামান, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান। সভায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।
মঞ্চে রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম, ভারপ্রাপ্ত সচিব আল মাহমুদ রনি, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু-সালেহ নূর-ঈ-সাইদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন ডলার, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।