Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির  সঞ্চয় সদস্যদের শত কোটি টাকা আত্মসাত 
ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির  সঞ্চয় সদস্যদের শত কোটি টাকা আত্মসাত 

সমিতির নামে এই টাকা আত্মসাত

রাজশাহীতে একটি সমবায় সমিতির সদস্যদের জমানো শত কোটি টাকা নিয়ে উধাও এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায়
 সমিতির নামে এই টাকা আত্মসাত করা হয়। ঘটনাটি মহানগরীর মহিষবাথান এলাকার।
অভিযুক্ত ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম শামীম আহমেদ সুজন। তিনি রাজশাহী কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন বলে জানিয়ে ভুক্তভোগীরা। সুজন মহিষবাথান এলাকায় পৈত্রিক বাড়িতে ‘ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ খুলে সদস্যদের থেকে কয়েক কোটি টাকা আমানত সংগ্রত করেন।
এলাকাবাসী ও কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের জানানো তথ্যমতে, শামীম আহমেদ সুজন, তার বড়ভাই সুমন এবং তাদের বাবা সাদিকুল ইসলাম মিলে নিজস্ব বাড়িতে ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। সম্প্রতি অতি মুনাফার আশায় সমাবায় সমিতির গ্রাহকদের অর্থ নিয়ে সমালোচিত অনলাইন অ্যাপভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি এমটিএফইপিতে বিনিয়োগ করেছেন। সম্প্রতি এমটিএফই অ্যাপ কেলেঙ্কারির পর বাড়ি বিক্রি করে কৃষি ব্যাংক থেকে নিজ নামে নেয়া ঋণ পরিশোধ করে সুজন গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকদিন থেকে ভাই ভাই সমবায় সমিতির সদস্যদের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
রাজশাহী নগরীর কোট স্টেশন সংলগ্ন মহিষবাথান এলাকায় নিজ বাড়িতে শামীম আহমেদ সুজন ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি পরিচালনা করছেন। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ দেয়ার পাশাপাশি সদস্যদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ ও তাদেরকে মুনাফা প্রদান করত। এক লাখ টাকা আমানতের বিপরীতে প্রতিমাসে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা হতো।
সমিতিটির সদস্য আকলিমা বেগম জানান, তিনি নিনে ও তার শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মিলে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা এই সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগ করেছেন। সুজন তাদেরকে তার কৃষি ব্যাংক শাখায় নিয়ে গিয়ে তার অবস্থা তুলে ধরে এবং প্রলোভন দেখিয়ে ওই টাকা ব্যাংকে না রেখে তার সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগের কথা বলে। কারণ হিসেবে সুজন তাদেরকে জানায় ব্যাংকে রাখলে এক লাখ টাকায় যে অর্থ পাওয়া যাবে তার চাইতে দ্বিগুণ অর্থ মিলবে তার সমবায় সমিতিতে। সদস্য অনুপাতে সমিতিতে ১০০ কোটি টাকার বেশি জমা থাকার কথা।
একই ভাবে হৃদরোগী জালিলা বেগমও ৫০ লাখ টাকা ওই সমবায় সমিতিতে রেখেছিলেন। তিনিও টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ৭০ বছর বয়স্ক ভিক্ষুক সারেদা বেগম বলেন, আমি ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা এই সমিতিতে জমিয়েছে। এখন আমার শেষ সম্বলটাও চলে যাচ্ছে। আমাক বাঁচান।
সমিতির সদস্য নয়ন বলেন, তিনি সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। সদস্যদের ১০০ কোটি টাকার উপরে জমা আছে সমিতিতে। দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় সুনামের সাথে সুজন তার এনজিও পরিচালনা করছিল। সম্প্রতি শুনতে পাই তিনি দুবাই ও ভারতের প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এরপর তিনি সেখান থেকে লোকসানে পড়েন। কৃষি ব্যাংকে চাকরি করে তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন বাইপাসের কাছে তার একটি বাড়ি বিক্রি করে সম্প্রতি ব্যাংকের ওই টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপর থেকে তার আর দেখা নাই।
মো আতিকুল ইসলাম বলেন, তিনি সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। গতমাস থেকে সুজনের বাপের বাড়িতে সমবায় সমিতির অফিস যেটা ছিল তাতে কম্পিউটারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নাই। অফিসেও তালা ঝুলছে। তা দেখে সবার সন্দেহ হয়। এরপর থেকে তার খোঁজ করা হলেও কেউ কোন তথ্য দিতে পারছে না। এখন আমার মত সব সদস্যই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে। এখন মামলা করতেও সাবই ভয় পাচ্ছে। যদি টাকা ফেরত পাওয়া না যায়।
এদিকে  নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সমিতির শতাধিক সদস্য সেখানে জড়ো হয়েছেন। তারা কাউন্সিলর মো. কামরুজ্জামানকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান। বিষয়টি শুনে কাউন্সিলর অভিযুক্ত সুজনের বাবা ও ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান ও তাদের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু বলেন, প্রতারণা শিকার ভুক্তভোগীরা এসেছিলেন আমার কাছে। আমি সুজনের বাবা ও ভাইকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তারা টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
অভিযুক্ত সুজন কোথায় আছেন এবং কত টাকা আমান সমবায় সমিতিতে জমা আছে; তা জানতে সুজনের বড়ভাই সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন তথ্য দিতে চাননি। সুজনের ব্যবহৃত ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: 24nababani@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠন; আহবায়ক দুলু সদস্য সচিব শাহীন

সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির  সঞ্চয় সদস্যদের শত কোটি টাকা আত্মসাত 

আপডেট সময় ০৩:৩২:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩
রাজশাহীতে একটি সমবায় সমিতির সদস্যদের জমানো শত কোটি টাকা নিয়ে উধাও এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায়
 সমিতির নামে এই টাকা আত্মসাত করা হয়। ঘটনাটি মহানগরীর মহিষবাথান এলাকার।
অভিযুক্ত ওই ব্যাংক কর্মকর্তার নাম শামীম আহমেদ সুজন। তিনি রাজশাহী কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন বলে জানিয়ে ভুক্তভোগীরা। সুজন মহিষবাথান এলাকায় পৈত্রিক বাড়িতে ‘ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি’ খুলে সদস্যদের থেকে কয়েক কোটি টাকা আমানত সংগ্রত করেন।
এলাকাবাসী ও কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের জানানো তথ্যমতে, শামীম আহমেদ সুজন, তার বড়ভাই সুমন এবং তাদের বাবা সাদিকুল ইসলাম মিলে নিজস্ব বাড়িতে ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। সম্প্রতি অতি মুনাফার আশায় সমাবায় সমিতির গ্রাহকদের অর্থ নিয়ে সমালোচিত অনলাইন অ্যাপভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি এমটিএফইপিতে বিনিয়োগ করেছেন। সম্প্রতি এমটিএফই অ্যাপ কেলেঙ্কারির পর বাড়ি বিক্রি করে কৃষি ব্যাংক থেকে নিজ নামে নেয়া ঋণ পরিশোধ করে সুজন গা ঢাকা দিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকদিন থেকে ভাই ভাই সমবায় সমিতির সদস্যদের মাঝে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
রাজশাহী নগরীর কোট স্টেশন সংলগ্ন মহিষবাথান এলাকায় নিজ বাড়িতে শামীম আহমেদ সুজন ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভাই ভাই সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি পরিচালনা করছেন। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ দেয়ার পাশাপাশি সদস্যদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ ও তাদেরকে মুনাফা প্রদান করত। এক লাখ টাকা আমানতের বিপরীতে প্রতিমাসে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা লভ্যাংশ প্রদান করা হতো।
সমিতিটির সদস্য আকলিমা বেগম জানান, তিনি নিনে ও তার শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মিলে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা এই সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগ করেছেন। সুজন তাদেরকে তার কৃষি ব্যাংক শাখায় নিয়ে গিয়ে তার অবস্থা তুলে ধরে এবং প্রলোভন দেখিয়ে ওই টাকা ব্যাংকে না রেখে তার সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগের কথা বলে। কারণ হিসেবে সুজন তাদেরকে জানায় ব্যাংকে রাখলে এক লাখ টাকায় যে অর্থ পাওয়া যাবে তার চাইতে দ্বিগুণ অর্থ মিলবে তার সমবায় সমিতিতে। সদস্য অনুপাতে সমিতিতে ১০০ কোটি টাকার বেশি জমা থাকার কথা।
একই ভাবে হৃদরোগী জালিলা বেগমও ৫০ লাখ টাকা ওই সমবায় সমিতিতে রেখেছিলেন। তিনিও টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। ৭০ বছর বয়স্ক ভিক্ষুক সারেদা বেগম বলেন, আমি ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা এই সমিতিতে জমিয়েছে। এখন আমার শেষ সম্বলটাও চলে যাচ্ছে। আমাক বাঁচান।
সমিতির সদস্য নয়ন বলেন, তিনি সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। সদস্যদের ১০০ কোটি টাকার উপরে জমা আছে সমিতিতে। দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় সুনামের সাথে সুজন তার এনজিও পরিচালনা করছিল। সম্প্রতি শুনতে পাই তিনি দুবাই ও ভারতের প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এরপর তিনি সেখান থেকে লোকসানে পড়েন। কৃষি ব্যাংকে চাকরি করে তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কোর্ট স্টেশন সংলগ্ন বাইপাসের কাছে তার একটি বাড়ি বিক্রি করে সম্প্রতি ব্যাংকের ওই টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপর থেকে তার আর দেখা নাই।
মো আতিকুল ইসলাম বলেন, তিনি সাড়ে ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। গতমাস থেকে সুজনের বাপের বাড়িতে সমবায় সমিতির অফিস যেটা ছিল তাতে কম্পিউটারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র নাই। অফিসেও তালা ঝুলছে। তা দেখে সবার সন্দেহ হয়। এরপর থেকে তার খোঁজ করা হলেও কেউ কোন তথ্য দিতে পারছে না। এখন আমার মত সব সদস্যই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছে অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে। এখন মামলা করতেও সাবই ভয় পাচ্ছে। যদি টাকা ফেরত পাওয়া না যায়।
এদিকে  নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সমিতির শতাধিক সদস্য সেখানে জড়ো হয়েছেন। তারা কাউন্সিলর মো. কামরুজ্জামানকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানান। বিষয়টি শুনে কাউন্সিলর অভিযুক্ত সুজনের বাবা ও ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান ও তাদের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু বলেন, প্রতারণা শিকার ভুক্তভোগীরা এসেছিলেন আমার কাছে। আমি সুজনের বাবা ও ভাইকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তারা টাকা দ্রুত ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
অভিযুক্ত সুজন কোথায় আছেন এবং কত টাকা আমান সমবায় সমিতিতে জমা আছে; তা জানতে সুজনের বড়ভাই সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন তথ্য দিতে চাননি। সুজনের ব্যবহৃত ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি।