নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দামে মানুষের অবস্থা শোচনীয়। বিশেষ করে যারা শ্রমজীবী, তাদের মাস শেষে আয় ব্যয়ের হিসাব মিলানোটাই কঠিন। ঠিক সে সময়ে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভিন্নধর্মী এক উদ্যোগ নিয়ে রাজশাহীতে হাজির হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাজশাহীতে বসেছিল পাঁচ টাকার হাট। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩) সদর উপজেলার নাইস কনভেনশন সেন্টারে ভিন্নধর্মী এ বাজারের আয়োজন করা হয়। এ বাজার থেকে নামমাত্র মূল্যে চাল, ডাল, তেল, আটা, লবন, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরে খুশি দরিদ্র মানুষজন।
বাজারের উদ্বোধনী দিনে প্রায় ২১০টি পরিবার এ সুবিধা পেয়েছে। এ বাজার থেকে এক টাকায় এক কেজি চাল, দুই টাকায় এক কেজি ডাল, তিন টাকায় এক লিটার তেল, এক টাকায় দুই কেজি আলু, চার টাকায় একটি ব্রয়লার মুরগি কেনার সুবিধা পেয়েছে দরিদ্র পরিবারগুলো। এই মূল্যে সর্বোচ্চ ১০ টাকার পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছে প্রতিটি পরিবার। যার বাজার মূল্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
বিদ্যানন্দ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত দরিদ্র মানুষকে পণ্য বাছাই করার স্বাধীনতা দেওয়ার জন্যই এই বাজারের আয়োজন। বিদ্যানন্দ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক ভাবে এই আয়োজন করে চলেছে। বিত্তবানদের সহযোগীত পেলে এই আয়োজন আরও বাড়ানোর কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যানন্দের মানবিক ও ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের পক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আনিসুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার ফারুখ আহমেদ জানান, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পছন্দমতো নামমাত্র মূল্যে বাজার করার এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে পরিবারের কর্তা ব্যক্তি তার পছন্দের বাজার নিয়ে বাড়িতে ফিরে সন্তানদের নিকট সুপার হিরো হতে পারে। এতে করে একদিনের জন্য হলেও তারা নিজেদের সুখী ভাবতে পারবে।
প্রধান অতিথি জানান, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এটি একটি প্রশংসনীয় মানবিক কাজ। বিভিন্ন দুর্যোগে তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায়। রাজশাহীতে সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষদের জন্য এ আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। জেলা প্রশাসন তাদের এ ভালো কাজের পাশে আছে।
উল্লেখ্য রাজশাহীতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নিয়মিত এক টাকায় আহার প্রোগ্রামের মাধ্যমে খাবার বিতরণ এর পাশাপাশি দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়তা দিয়ে থাকে। জন কল্যাণমূলক এসব কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছর একুশে পদকে ভূষিত হয়।