গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন মালেকের বাড়ী এলাকায় এক মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক কতৃক নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক বার অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন ( শারিরীক সম্পর্ক ) করার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে গাছা থানায় ঐ প্রতারক ধর্ষকের নাম উলেক্ষ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোক্ত ব্যক্তির নাম হাফেজ হোসাইন মোহাম্মদ আরিফ তানভীর (২৩) পিতা মোঃ জয়নুল আবেদীন সাং গুতিয়ারা, ৩২ নং ওয়ার্ড,গাছা থানা, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর। তিনি গুতিয়ারা নিকটস্থ আলিয়া আবেদিন মহিলা মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন।
অভিযোগ সুত্র ও ভুক্তভোগীর বক্তব্যে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগী হিমি ( ছদ্মনাম) ও আসামি আরিফ তানভীর এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। একসময় হিমি তার মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন তারপর তিনি মাদ্রাসা ছেড়ে স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন এরই মধ্যে তাদের মধ্যে ফেইসবুকে আবারও পরিচয় হয়, নিয়মিত কথা হতো, কথা বলার একপর্যায়ে হাফেজ আরিফ তানভীর হিমিকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের মধ্যে সম্পর্ক চলাকালীন ২৮ / ০৩ / ২০২১ ইং তারিখে হিমিকে তার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানে দেখা করতে বলে এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেয়,এসময় হিমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এর পর থেকে সে বিয়ের কথা বলে নিজ প্রতিষ্ঠান সহ গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে জনৈক আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে আবারও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন পূর্বক ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে হিমির গর্ভে সন্তান আসলে বিবাদী টংগী আবেদা জেনারেল হাসপাতালে ০৮/০৮/২০২১ ইং তারিখে জোরপূর্বক গর্ভপাত করিয়ে বাচ্চা নষ্ট করে। এর পর বিবাদী বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় তার যৌন লালসা মিটানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখে একপর্যায়ে হিমি তাকে বিয়ের বিষয়ে কথা বললে এরিয়ে যায়।
গত ২৮/০৭/২০২৩ তারিখে পুনরায় হিমি আরিফ তানভীর এর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানে দেখা করতে গেলে বিবাদী বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়, পরবর্তী সময় বিবাদীর বড় ভাই গাছা থানা তাতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান শরীফের কাছে নিয়ে যান এবং সেখানেও বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে হিমির মোবাইল ফোন কেরে নেন এবং তাদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তুলা আপত্তিকর ছবি,ভিডিও, ভয়েস রেকর্ড ও চ্যাট লিষ্ট ডিলিট করে দেয়। একপর্যায়ে একটা সাদা কাগজে বিয়ের কথা বলে হিমির সাইন নেন। এর পর থেকে হিমিকে হাসান শরীফ বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে,সে যেনো এসব বিষয়ে কোন কথা না বলে।
অসহায় হিমি তার মাকে নিয়ে সাংবাদিক ও গাছা থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়, এবং গাছা থানায় হিমির মা বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে, গাছা থানা পুলিশ অভিযুক্ত তানভীরকে গ্্েরফতার করেন। তানভীর গ্্েরফতারের পর থেকেই তার বড় ভাই গাছা থানা তাতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান শরীফসহ পরিবারের লোকজন বিষটি ধামা চাপা দেয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে দৌড় ঝাপ শুরু করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে যেনো বিষয়টি প্রকাশ না পায় ৩২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম এবং তানভীরের বড় ভাই গাছা থানা তাতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান শরীফ গাছা প্রেসক্লাবে গিয়ে অনুরোধ করেন এবং আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখায়, সাংবাদিকরা বিষয়টি প্রত্যাক্ষান করলে , কাউন্সিলর সহ তানভীরের স্বজনদের সারাদিন গাছা থানায় দেখা যায়। হিমিকে অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্ন প্্রলোভন দেখায় তারা।
হিমি সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করছে,এবং সরকার দলীয় গাজীপুর মহানগরের বড় বড় নেতাদের মাধ্যমেও বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করছে, সাংবাদিকদের কেনো এ বিষটি জানানো হয়েছে, তার জন্যও অনেক চাপ।
এ বিষয়ে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইব্রাহিম হোসেন বলেন ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে অভিযোগ দেওয়ার পরপরই আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ,হিমির মায়ের অভিযোগটি মামলায় রুপান্তরিত হয়নি এবং অভিযুক্ত তানভীর থানায় আটক রয়েছে।
(চলবে)