সোমবার (২৯মে) সকাল ৯টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত চলে ভবনটি ভাঙ্গার কাজ।,
ঘুন্টি এলাকায় ভবনটি ভাঙ্গার দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোদাগাড়ীর সহকারি কমিশনার (ভূমি) সবুজ হাসান, পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে
সকাল ৯টার দিকে বুলডোজার দিয়ে ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করে।
এর আগেও একাধিকবার ওই মার্কেটটি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ভাঙতে গেলে প্রভাবশালী কাউন্সিলর ও তার ভাই মাদক সম্রাট আব্দুর রহিম টিপুর প্রভাবে তা সম্ভব হয়নি। এনিয়ে ওই এলাকায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ ছিলো।
সোমবার আবার মার্কেটটি ভাঙার কাজ শুরু হলে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় উৎসুক জনসাধারণ তা দেখার জন্য ভীড় জমায়। ওই মার্কেটটি ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে ভাঙার কাজটি দেখতে যায়।
এই মার্কেটটি ভাঙায় স্থানীয় জনগণ স্বস্থি প্রকাশ করে বলেন, একমাত্র এই ভবনটির কারণে গোদাগাড়ী - আমনুরা রাস্তাটি চালু হয়নি। এখন আমাদের খুব ভালো লাগছে ও রাস্তাটি চালু হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।
ভবনটি ভাঙার কাজ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। ভাঙার কাজ শুরুতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভাঙার কাজ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকলে পুরো সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান, গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুনসুর রহমান সার্বক্ষণিক স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, গোদাগাড়ীর সাগুয়ান ঘুন্টি এলাকায় রেলের সরকারি জমি দখল করে ১২৫ ফুট দৈর্ঘ্যের এই ভবন বানিয়েছিলেন মূলত গোদাগাড়ী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম ও তাঁর ভাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তলিকাভূক্ত মাদক সম্রাট আব্দুর রহিম টিপু।
তারা সরকার দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় এলাকায় প্রভাবশালী হয়ে উঠে। ফলে প্রশাসনকেও এই অবৈধ ভবনটি ভাঙতে প্রচুর বেগ পেতে হয়।
সরকারি জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত এই ভবনের কারণে সাত মাস আগে ২১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সড়ক চালু করা যায়নি। রেলবাজার থেকে আমনুরা পর্যন্ত সড়কটি নির্মানের জন্য কাজ শুরু হলে সব কাজই সম্পন্ন হয়। শুধুমাত্র ওই ভবনটি রাস্তার উপর থাকার করনে রাস্তাটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
গোদাগাড়ী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী মুনসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে তাঁর নির্দেশনায় ভবনটি ভাঙা হয়েছে।
গোদাগাড়ীর রেলবাজারে সড়কটির একটি নামফলক রয়েছে। এতে লেখা, ‘রেলবাজার থেকে আমনুরা সড়ক ভায়া মাওলানার গেট, ধুলিশংক রাতাহারি।’ ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের সাড়ে ১৯ কিলোমিটার পড়েছে গোদাগাড়ীতে।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ডন এন্টারপ্রাইজ ও মো. ওয়াসীমুল হক জেভি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণ করছে। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর এই সড়কের নির্মাণকাজের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ার পর গত ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যে রাস্তার নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোদাগাড়ীর এক প্রভাবশালী পরিবারের মার্কেটটি।
গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে এই ভবন ভাঙার নির্দেশ এসেছে। আমরা আইন মেনেই সকল কাজ করছি। নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ দেওয়া হয়েছে। এই ভবটির কারণে রাস্তাটি চালুর বাঁধাগ্রস্থ হয়ে আছে। রাস্তাটি চালু হলে হাজারো মানুষের উপকার হবে।