Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
মোহনপুরে ৩৮ দিনের শিশু হত্যার দায় স্বীকার মায়ের কারাগারে প্রেরন
ঢাকা ০২:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোহনপুরে ৩৮ দিনের শিশু হত্যার দায় স্বীকার মায়ের কারাগারে প্রেরন

মোহনপুরে ৩৮ দিনের শিশু হত্যার দায় স্বীকার মায়ের কারাগারে প্রেরন

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বকপাড়া গ্রামে ১ মাস ৮ দিন বয়সী শিশুকন্যাকে পানিতে ডুবিয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মা তানিয়া খাতুন নিজেই। খবর পেয়ে থানা পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে সুরতহালে পাঠান। এঘটনার পরদিন শিশুটির বাবা আল-আমিন বাদি হয়ে মোহনপুর থানায় মা তানিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। রবিবার (২৮ মে) থানা পুলিশ শিশুটির মা তানিয়া খাতুনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ঐদিন নিহত শিশুটির ঘাতক মা তানিয়াসহ বাবা আল-আমিন, দাদা মফিজ উদ্দিন, দাদি আরজিনা বেগম ও প্রত্যাক্ষদর্শী রোজিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে থানা হেফাজতে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মা তানিয়া খাতুনকে জ্বীনে আসর করায় নিজের কোলের শিশু কন্যাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছর পুর্বে ২০১৭ সালে উপজেলার আকুবাড়ি বগপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন বকপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আল-আমিন। বিয়ের পর তানিয়াকে মাঝেমধ্যে জ্বীন ভূতে ধরে। একারণে তানিয়া শশুর বাড়ির লোকজনদের সাথে অসুভ আচরণ করতে থাকে। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের সংসারে আলিফ (৪) নামে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এরপর গত ২০ এপ্রিল তাদের সংসারে ১ মাস ৮ দিন বয়সী আয়েশা নামে আরেকটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়, গত শনিবার (২৭ মে) বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে ঘুমন্ত বাচ্চা আয়েশাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পানি ভর্তি নান্দিনা (গরুর খাবার পাত্র) এর মধ্যে ফেলে দিয়ে ঘাতক মা তানিয়া খাতুন পাশের পুকুরের দিকে ঘুরতে যায়। আর প্রত্যাক্ষদর্শী রোজিনা বেগম বাড়ির ঐ নান্দিনার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বাচ্চাটিকে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজনদের জানায়। তখন মা তানিয়া খাতুন এসে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে নিজেই চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। পরে পাশের একটি পুকুরের পাহাদারের দায়িত্বে থাকা বাবা ও দাদা বাড়িতে ছুটে এসে জানতে পারেন ঘাতক মা তানিয়া খাতুন নিজেই শিশুটিকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন।
এদিকে, মামলার এজাহার সূত্রে এ হত্যাকাণ্ডের কারন জানা না গেলেও প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেশ কয়টি কারন উঠে এসেছে। পাড়া-প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিশুটির মা তানিয়া খাতুন শশুর-শাশুরি, স্বামী ও ননদদের সাথে মাঝে মধ্যেই কলহে জড়াতেন। এছাড়াও সম্প্রতি তানিয়া খাতুন একটি পরকীয়ার সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এনিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্বামী ও শশুর -শাশুরির সাথে কলহ চলতে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশি শাহিদা বেগম জানান, শিশুটির ঘাতক মা তানিয়া খাতুন বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করতেন। স্বামীর দেয়া সোনার গহনা বিক্রি করে টাকা হারিয়ে ফেলতেন, শাশুড়ীর পালিত হাস মুরগী বিষ দিয়ে মেরে ফেলতেন, এমনকি সংসারের চাল-ডাল চুরি করে বাবার বাড়িতে রেখে আসতেন। কিছুদিন পুর্বে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে শশুড় বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাসা ভাড়া করে স্বামীকে নিয়ে থাকতে।  এরইমধ্যে কলহের জেরে ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস নেয়ার মত ঘটনাও ঘটিয়েছেন। পরবর্তীতে সকল বিবাদ মিটিয়ে ফের শশুড় বাড়িতে ফিরে আসেন তানিয়া। ঘটনার দিন দুপুরে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ফোনে লুকিয়ে কথা বলতে দেখেছেন প্রতিবেশীদের অনেকে। তানিয়ার লুকিয়ে কথা বলা সেই পরকীয়া প্রেমিকের খোঁজ এখনো মেলেনি।
তানিয়ার ননদ আফরোজা বেগম বলেন, খবর পেয়ে আমি বাবার বাড়িতে ছুটে আসি। এসে জানতে পারি আমার ভাবি তার কোলের সন্তানকে হত্যা করেছে। সে আমার ভাই ও বাবা মাকে সবসময় অত্যাচার করে। আমি আসলে আমার সাথেও চরম খারাপ আচরণ করে। আমরা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: 24nababani@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালখালী’র লোকমানের বিরুদ্ধে দুদেকে অভিযোগ 

মোহনপুরে ৩৮ দিনের শিশু হত্যার দায় স্বীকার মায়ের কারাগারে প্রেরন

আপডেট সময় ০৮:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বকপাড়া গ্রামে ১ মাস ৮ দিন বয়সী শিশুকন্যাকে পানিতে ডুবিয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মা তানিয়া খাতুন নিজেই। খবর পেয়ে থানা পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে সুরতহালে পাঠান। এঘটনার পরদিন শিশুটির বাবা আল-আমিন বাদি হয়ে মোহনপুর থানায় মা তানিয়া খাতুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। রবিবার (২৮ মে) থানা পুলিশ শিশুটির মা তানিয়া খাতুনকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ ঐদিন নিহত শিশুটির ঘাতক মা তানিয়াসহ বাবা আল-আমিন, দাদা মফিজ উদ্দিন, দাদি আরজিনা বেগম ও প্রত্যাক্ষদর্শী রোজিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে থানা হেফাজতে নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মা তানিয়া খাতুনকে জ্বীনে আসর করায় নিজের কোলের শিশু কন্যাকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ বছর পুর্বে ২০১৭ সালে উপজেলার আকুবাড়ি বগপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন বকপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে আল-আমিন। বিয়ের পর তানিয়াকে মাঝেমধ্যে জ্বীন ভূতে ধরে। একারণে তানিয়া শশুর বাড়ির লোকজনদের সাথে অসুভ আচরণ করতে থাকে। বিয়ের দেড় বছর পর তাদের সংসারে আলিফ (৪) নামে একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এরপর গত ২০ এপ্রিল তাদের সংসারে ১ মাস ৮ দিন বয়সী আয়েশা নামে আরেকটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়, গত শনিবার (২৭ মে) বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে ঘুমন্ত বাচ্চা আয়েশাকে তুলে নিয়ে গিয়ে পানি ভর্তি নান্দিনা (গরুর খাবার পাত্র) এর মধ্যে ফেলে দিয়ে ঘাতক মা তানিয়া খাতুন পাশের পুকুরের দিকে ঘুরতে যায়। আর প্রত্যাক্ষদর্শী রোজিনা বেগম বাড়ির ঐ নান্দিনার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বাচ্চাটিকে ভাসতে দেখে বাড়ির লোকজনদের জানায়। তখন মা তানিয়া খাতুন এসে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে নিজেই চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। পরে পাশের একটি পুকুরের পাহাদারের দায়িত্বে থাকা বাবা ও দাদা বাড়িতে ছুটে এসে জানতে পারেন ঘাতক মা তানিয়া খাতুন নিজেই শিশুটিকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন।
এদিকে, মামলার এজাহার সূত্রে এ হত্যাকাণ্ডের কারন জানা না গেলেও প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে বেশ কয়টি কারন উঠে এসেছে। পাড়া-প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিশুটির মা তানিয়া খাতুন শশুর-শাশুরি, স্বামী ও ননদদের সাথে মাঝে মধ্যেই কলহে জড়াতেন। এছাড়াও সম্প্রতি তানিয়া খাতুন একটি পরকীয়ার সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। এনিয়ে কয়েকদিন ধরেই স্বামী ও শশুর -শাশুরির সাথে কলহ চলতে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। প্রতিবেশি শাহিদা বেগম জানান, শিশুটির ঘাতক মা তানিয়া খাতুন বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করতেন। স্বামীর দেয়া সোনার গহনা বিক্রি করে টাকা হারিয়ে ফেলতেন, শাশুড়ীর পালিত হাস মুরগী বিষ দিয়ে মেরে ফেলতেন, এমনকি সংসারের চাল-ডাল চুরি করে বাবার বাড়িতে রেখে আসতেন। কিছুদিন পুর্বে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে শশুড় বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাসা ভাড়া করে স্বামীকে নিয়ে থাকতে।  এরইমধ্যে কলহের জেরে ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস নেয়ার মত ঘটনাও ঘটিয়েছেন। পরবর্তীতে সকল বিবাদ মিটিয়ে ফের শশুড় বাড়িতে ফিরে আসেন তানিয়া। ঘটনার দিন দুপুরে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ফোনে লুকিয়ে কথা বলতে দেখেছেন প্রতিবেশীদের অনেকে। তানিয়ার লুকিয়ে কথা বলা সেই পরকীয়া প্রেমিকের খোঁজ এখনো মেলেনি।
তানিয়ার ননদ আফরোজা বেগম বলেন, খবর পেয়ে আমি বাবার বাড়িতে ছুটে আসি। এসে জানতে পারি আমার ভাবি তার কোলের সন্তানকে হত্যা করেছে। সে আমার ভাই ও বাবা মাকে সবসময় অত্যাচার করে। আমি আসলে আমার সাথেও চরম খারাপ আচরণ করে। আমরা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।