চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন’ চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সুজিত কুমার বিশ্বাস।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনে আমচাষি, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এই তথ্য জানান।
এর আগে আমচাষি, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা চলতি মাসের ২০ মে থেকে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবি জানান। এর প্রেক্ষিতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন,সকলের মতামত নেওয়ার জন্য এখানে এসেছিলাম। আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালুর দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হবে। তবে অবশ্যই স্থানীয়দের দাবির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই ট্রেন চালু করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে কেজি প্রতি আম পাঠাতে খরচ হয়েছে এক টাকা ৩১ পয়সা। আশা করছি এবারও তাই থাকবে। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে কোচ সংখ্যা বাড়ানো হবে। এছাড়া জনসাধারণকে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহনের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে এ বছর বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে। ট্রেন চালুর আগে ব্যাপক হারে বাজারে বাজারে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আম বুকিংকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে আম বুকিং করা হবে।
সভায় আমচাষি ও ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা প্রতি বছর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম পাঠাই। খরচ কম ও কম সময়ে আম পরিবহন সম্ভব হওয়ায় এতে সুবিধা হয়। তবে কয়েক দিনের জন্য চালু না রেখে পুরো আম মৌসুমে এই ট্রেন চালু রাখার দাবি জানান তিনি।
সভায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার মো. ওবাইদুল্লাহসহ রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশন থেকে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটি ছেড়ে পথিমধ্যে আমনুরা জংশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন, কাঁকনহাট, রাজশাহী, সরদহ রোড, আড়ানী, আব্দুলপুর, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম, জয়দেবপুর ও ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে। ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম ছাড়াও শাকসবজিসহ অন্যান্য ফলমূল পরিবহন করা যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী হয়ে ঢাকাগামী ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনটি চালু হয় ২০২০ সালের ৫ জুন। ওই বছরের ২১ জুলাই পর্যন্ত চলা ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহন হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮২ কেজি। এতে রাজস্ব আয় হয় ২ লাখ ১১ হাজার ৪৫৮ টাকা। দ্বিতীয়বারের মতো ২০২১ সালের ২৭ মে ট্রেনটি চালু করা হয়। সেই বছর আম পরিবহন করা হয় ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭৩ কেজি। রাজস্ব আদায় হয় ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯২০ টাকা। সর্বশেষ গত বছর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৫৫ কেজি আম পরিবহন করা হয়। এতে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৪ টাকা আয় হয়েছিল।