পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহ্রিয়ার আলম, এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষি বান্ধব সরকার, ব্যবসা বান্ধব সরকার। তিনি সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেন। আমাদের যতই সমস্যা থাকুক না কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, ততদিন বাংলাদেশ কখনোই পথ হারাবে না।
আজ বিকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ পৌর মার্কেটের নির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সবসময় সাধারণ মানুষের পক্ষে, সুশাসনের পক্ষে। তিনি সবার চিন্তা করেন। তিনি জনগণের হক নষ্ট করে রাজনীতি করেন না। আমরা জনগণের সঙ্গে প্রতারণার রাজনীতি পছন্দ করি না।
সাধারণ ব্যবসায়ীদের কথা প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২ কোটি ৭৬ লাখে টাকা ব্যয়ে সরদহ বাজারে আজকে যে ধরনের মার্কেট হলো ২০ বছর আগে রাজশাহীর সাহেব বাজারে এমন মার্কেট ছিল না। এখন এ রকম মার্কেট বিভিন্ন বাজারে তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। যাতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা উপকার পায়।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও দালালিকে হালাল করা হয় নাই, ব্যবসাকে হালাল করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সবাই যাতে সুন্দরভাবে ব্যবসা করতে পারে সে দিকে সরকার খেয়াল রাখছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের জন্য আরও সুযোগ তৈরি করা হবে, তবে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, হঠকারিতা করতে দেয়া হবে না। চাঁদাবাজি করে কেউ বাজারের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে অতিদ্রæত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এসময় তিনি ব্যবসায়ীদআশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফকরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোহরাব হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়ার হাজরাপাড়া ঘাটে ‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদীভাঙন হতে রক্ষা প্রকল্প’ এর ১২.১০ কি.মি. ড্রেজিং কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।
ওই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল নদীভাঙন থেকে যেন এলাকার মানুষ রক্ষা পায়। এখানকার মানুষ বার বার নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। এখানে এমন অনেকে ছিলেন যারা নদীভাঙনের শিকার হয়ে পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, চারঘাট থেকে চলে গেছেন; আবার কেউ কেউ নদীভাঙনের শিকার হয়ে কোনোমতে টিকে আছেন।
নদীভাঙনের শিকার মানুষের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী সাড়ে সাত’শ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়েছেন উল্লেখ করে শাহ্রিয়ার আলম বলেন, মানুষের জীবনমান রক্ষার জন্য, কৃষকদের বাঁচানোর জন্য, মসজিদ-মাদ্রাসা-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বসতবাড়ি রক্ষার জন্য এর চেয়ে বেশি পরিমাণ টাকা ব্যয় হলেও তা করা যায়, কিন্তু এর আগে এই সমস্যাগুলোই তুলে ধরার মানুষের অভাব ছিল, অথচ এই প্রকল্প ছাড়া এ অঞ্চলের মানুষ বাঁচবে না। এ প্রকল্পটি এ অঞ্চলের মানুষের বাঁচার দাবি, পৈত্রিক ভিটা-মাটি বাঁচানোর দাবি। কোনো সরকার এটা করেনি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটা করেছেন।
এই প্রকল্পের আওতায় নদীতে এগারোটি ক্রস বার দেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নদীতে প্রথম পর্যায়ে চারটি ও পরে সাতটি ক্রস বার দেয়া হবে। এর ফলে নদী আরও দূরে সরে যাবে আর এটা হলে চকরাজাপুর চরের এক ইঞ্চি মাটিও ভাঙবে না।
শেখ হাসিনা জনগণের জন্য কাজ করেন উল্লেখ করে এ সময় তিনি বলেন, মানুষের কোথায় কী দরকার, কোথায় কী করতে হবে তা শেখ হাসিনা জানেন; কোথায় পানির কল দরকার, কোথায় ড্রেনেজ দরকার, কোথায় ড্রেজিং করতে হবে এগুলো তাঁর মাথায় থাকে। আসলে তিনি জনগণের জন্যই কাজ করেন। আর কেউ তার মতো করে পূর্বে কাজ করেনি।
এ সময় বিএনপি’র সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি’র আমলে এক ইঞ্চি নদীও ক্ষনন করা হয় নাই, তাদের ক্ষমতা আমাদের জানা আছে। তারা শুধু পারে কীভাবে দুর্নীতি করতে হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম, রাজশাহী পওর সার্কেলের তত্তাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফকরুল ইসলাম, বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ ও নদীরক্ষা প্রকল্পে উপকারভোগীরাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।