রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ (এনডিসি) বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি যুগোপযোগী উদ্ভাবনী উদ্যোগের কারণেই আজকে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।
আজ সকালে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মাঠে দুই দিনব্যাপী (১৫ ও ১৬ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার উল্লেখ করে জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়েছেন, শেখ হাসিনা দিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর তাঁরই সুযোগ্য তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকার। তিনি সবসময় নতুন নতুন ধারণা দিয়ে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তিকে আজকের উচ্চতায় নিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, আমরা এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এবার স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত হওয়ার পালা।
প্রযুক্তির উৎকর্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদেরকে নিত্য নতুন উদ্ভাবন করতে হবে মন্তব্য করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, এখন পৃথিবীর জনসংখ্যা আটশত কোটি। একশো বছর আগে যেখানে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল দুইশত কোটি, আজকে সেখানে একশো বছরের ব্যবধানে জনসংখ্যা বেড়েছে চারগুণ। তাই ডিজিটালভাবে স্মার্ট হওয়ার বিকল্প নাই, সেজন্য এখন বিশ্বব্যাপী স্মার্ট হওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে অনেক এগিয়েছে উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমরা উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখন খাদ্য উৎপাদন করে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। মাছ উৎপাদনে বিশে^ তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছি। এছাড়া, বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে বিশে^ প্রথম দিকে জায়গায় করে নিতে পেরেছি। এখন আমরা স্মার্ট প্রযুক্তিতে যাবোÑ আর এটা করতে পারলে বাংলাদেশ বিশে^র দুইশোটি দেশের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে জায়গা করে নিতে পারবে বলে এসময় তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরএমপি’র কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ নাসির উদ্দিন, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. মোসা: নূরজাহান বেগম বক্তৃতা করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল হক। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারিয়া পেরেরা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে উদ্ভাবকদের উদ্ভাবনী সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তিবান্ধব নানাবিধ উদ্ভাবনের মাধ্যমে নাগরিক জীবনকে আরও সহজ ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
এবারের মেলায় উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও স্টার্ট আপ (উদ্ভাবক ও শিক্ষার্থী), ডিজিটাল সেবা (সরকারি অফিসসমূহের সেবা), হাতের মুঠোয় সেবা (ডিজিটাল সেন্টারের সেবা যেমন- এজেন্ট ব্যাংকিং একশপ, সরকারি-বেসরকারি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি) এবং শিক্ষা, দক্ষতা, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিসিক, কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ইত্যাদির উদ্ভাবনী উদ্যোগ) বিষয়ে চারটি প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়। মেলায় চারটি প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ তাদের বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর তাদের ডিজিটাল সেবাসমূহ প্রদর্শন করে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) বিকাল চার’টায় এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে।