Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠার সফলতার দুই বছর পূর্তি: আরএমপি
ঢাকা ০২:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠার সফলতার দুই বছর পূর্তি: আরএমপি

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ২০২ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠার দুই বছর পূর্তি আজ।
গত  দুই বছর পূর্বে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় ডিজিটাল মাধ্যমে সংগঠিত অপরাধ দমনে মহানগরবাসীর প্রত্যাশাপূরণে ও সাংবাদিকদের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাথমিকভাবে একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে ১ জন এসআই, ১ এএসআই এবং ৩ জন কনস্টেবল-সহ মোট ৬ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সদস্য নিয়ে এই ইউনিট যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ১ জন সহকারী পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ৪ জন এস আই, ৩ জন এ এস আই এবং ১৬ জন কনস্টেবল-সহ সর্বমোট ২৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও চৌকস টিম এই ইউনিটে কাজ করছে।
সাইবার ক্রাইম ইউনিট সরাসরি অপারেশনাল টিম হিসেবে ফিল্ডে কাজ না করলেও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল কার্যক্রমে বিশেষ করে সাইবার অপরাধ ও অপরাধী  শনাক্তকরণ-সহ আসামি গ্রেফতারে সহায়তা প্রদান করছে। মেট্রোপলিটন এলাকার সকল ক্লু-লেস ঘটনা উদ্ঘাটন, অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতার সহায়তায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলার সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত ঘটনার চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণ করছে।
গত ২ বছরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন- সহ পার্শ্ববর্তী এলাকা হতে প্রায় ৮৬১ টির মত ফেইসবুক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ এসেছে এই ইউনিটে। ফেইসবুক সংক্রান্ত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নারীদের বিভিন্ন স্পর্শকাতর ছবি/ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করা, ফেইসবুকে যে কারো ছবি দিয়ে ভুয়া একাউন্ট তৈরি করা, সোসাল মিডিয়ায় বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছেড়ে দিয়ে মানহানি করা, ফেইসবুক একাউন্ট হ্যাকড করা, বিভিন্ন ভুয়া মেসেঞ্জারের মাধ্যমে পর্নো ছবি ও ভিডিও পাঠানোসহ ফেইসবুকের মাধ্যমে সংঘটিত সকল অপরাধ। পূর্ব প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সাবেক প্রেমিক/প্রেমিকাকে হেনস্থা বা ব্লাকমেইল করার জন্য বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন ছবি/ ভিডিও প্রচার করা। ফেইসবুক সংক্রান্ত প্রায় ৮৬১ টি অপরাধের মধ্যে ৮৪০ টির মত নিষ্পত্তি করেছে আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক ট্রানজেকসন/ট্রান্সফার সিস্টেমের অপরাধ। বিভিন্ন ভুয়া অফারের মাধ্যমে পিনকোড নিয়ে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক,  ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন, সংঘবদ্ধ অপরাধীদের বিকাশ, নগদ ও রকেট চক্রের পরিকল্পনামাফিক ফাঁদ-সহ অন্যান্য অপরাধ।  গত ২ বছরে এই সংক্রান্ত প্রায় ৩৫৭ টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
ইমো/হোয়াটসঅ্যাপ/ই-মেইল সংক্রান্ত প্রায় ৫৮ টি’র অধিক অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অপরাধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইমো/হোয়াটসঅ্যাপ/ই-মেইল ব্যবহার করে সম্পর্ক স্থাপন ও আর্থিক প্রতারণার মত ঘটনা। এছাড়াও রয়েছে ই-মেইল হ্যাক করে বিভিন্ন অপ্রীতিকর তথ্য পাঠানো ও ভুয়া বা বেনামে মেইল আইডি খুলে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা।
টিকটক/লাইকি সংক্রান্ত মোট ১৫ টি অভিযোগ এসেছে এবং সবগুলোরই শনাক্তপূর্বক নিষ্পত্তি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপরাধ হলো বিভিন্ন উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত করা।
গত ২ বছরে এই ইউনিট প্রায় ১৫৩ টির মত অপহরণের অভিযোগ সংক্রান্তে ১৩৯ ভিকটিম উদ্ধার-সহ আসামি শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। উল্লেখযোগ্য অপরাধগুলো হলো অপ্রাপ্ত/অল্প বয়সী মেয়ে/ছেলেদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে অপহরণ করা। এছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক বিষয়ে অপহরণ করা।
গত দুই বছরে অনেক হারানো বা চুরি  বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধারের তথ্য উদ্ঘাটনের সফলতা রয়েছে এই ইউনিটের। প্রতিষ্ঠার পর হতে এ যাবত পর্যন্ত প্রায় ২৬০৭ টি বিভিন্ন মোবাইল/ল্যাপটপ উদ্ধার করার তথ্য সরবরাহ  করেছে আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট ।
এই ইউনিট উপরি-উক্ত বিভিন্ন অপরাধ ছাড়াও মেট্রোপলিটন এলাকার অন্যান্য ক্লু-লেস ঘটনা, সংঘবদ্ধ  অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তপূর্বক গ্রেফতারে প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। গত ২ বছরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ-সহ সর্বমোট প্রায় ৪৪৩৬ টির মত অভিযোগ/জিডি এসেছে। এর মধ্যে প্রায় ৪১৬৯ টির মত অপরাধ/জিডি/অভিযোগগুলোর নিষ্পত্তি করেছে আরএমপি’র নব্য গঠিত সাইবার ক্রাইম ইউনিট, যেখানে সফলতার হার প্রায় ৯৪ শতাংশ।
কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজঃ
আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট বাংলাদেশের সকল ইউনিটের মধ্যে সর্বপ্রথম কিশোরদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করেছে। যেখানে রাজশাহী মহানগর এলাকার প্রায় ৫১৫ জন কিশোরের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী মহানগর এলাকার প্রায় ০৯ টির মত কিশোর গ্যাং এর বিস্তারিত তথ্য সংক্ষরণ করেছে। প্রতিদিন আরএমপির প্রত্যেকটি থানার মাধ্যমে ডাটাবেজ এ সংরক্ষিত কিশোরদের তদারকি করা হয়। এছাড়াও ডাটাবেইজে সংরক্ষিত ৫১৫ কিশোরদের নিয়মিত মনিটরিং এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
হ্যালো আরএমপি অ্যাপঃ
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশিং সেবার অন্যতম বহুল তথ্য সম্বলিত ‘হ্যালো আরএমপি ‘ অ্যাপস সাইবার ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক পরিচালিত হয়। এই অ্যাপস ব্যবহার করে আপনার পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন অভিযোগ ও তথ্য প্রদান করতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপস এর মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রয়োজনীয় তথ্য সহজে পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত এই অ্যাপস-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রায় ২৯৫ টির মত অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারঃ
রাজশাহী মহানগর এলাকার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা মনিটরিং,  বিভিন্ন অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার (সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরা ইউনিট)। এই ইউনিটটিও পরিচালিত হয় আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের মাধ্যমে।  রাজশাহী মহানগরীর প্রায় ৫০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে পুরো মহানগরীকে নজরদারির আওতায় নিয়েছে।
সফলতা
১. সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রায় ৪৭৫ টির অধিক চুরির ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও চোর শনাক্তকরণ
২. প্রায় ৮২ টির অধিক ছিনতাই ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তকরণ
৩. প্রায় ৬৮ টির অধিক ইভটিজিং এর ঘটনায় অপরাধী শনাক্তকরণ-সহ মহানগরীর কিশোর অপরাধ দমনে সার্বক্ষণিক মনিটরিং
৪. প্রায় ৯৩ টির অধিক হারানো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন
৫. প্রায় ৩১ টির মত অজ্ঞান পার্টি ঘটনার আসামি শনাক্তকরণ
৬. গত ২ বছরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার প্রায় ৫৩ টির অধিক মারামারি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণ
৭. ছেলে/মেয়ে হারিয়ে যাওয়া ও হারিয়ে যাওয়ার নাটক করা সহ বিভিন্ন ব্যক্তি হারানোর প্রায় ৫৫ টি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন
৮. প্রায় ৭৫ টি সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ শনাক্ত-সহ দ্রুত সংবাদ প্রেরণ
৯. প্রায় ২৩ টির অধিক ক্লু-লেস মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন
১০. এছাড়াও ট্রাফিক কন্ট্রোল, বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রামের মিছিল/মিটিং/সমাবেশ/মানববন্ধন ও বিশেষ দিবসের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং
সর্বোপরি অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার (সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরা ইউনিট) এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫৫ টির অধিক ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
U.S Embassy-এর তত্ত্বাবধানে ATA(Anti Terrorism Assistance) এর আওতায় ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও U.S Embassy ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় অত্যাধুনিক ফরেনসিক যন্ত্রপাতি/সফট্ওয়্যার, তথ্য-প্রযুক্তি ও দক্ষ-প্রশিক্ষিত-চৌকস জনবল নিয়ে একটি ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরি করা হয়ছে যার কার্যক্রম অতি শীগ্রই চালু করা হবে।
সর্বোপরি সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও রাষ্ট্র বিরোধীদের শনাক্ত-সহ অন্যান্য সকল অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট রাজশাহী মহানগরবাসীর সেবায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যোগাযোগের মাধ্যমঃ
সরাসরি – সাইবার ক্রাইম ইউনিট, সি এন্ড বি মোড়, পুরাতন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মোবাইলঃ হট লাইন- ০১৩২০০৬১৯৯৯
সহকারি পুলিশ কমিশনারঃ ০১৩২০০৬১৯৮৩
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: 24nababani@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালখালী’র লোকমানের বিরুদ্ধে দুদেকে অভিযোগ 

সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠার সফলতার দুই বছর পূর্তি: আরএমপি

আপডেট সময় ০৮:১২:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠার দুই বছর পূর্তি আজ।
গত  দুই বছর পূর্বে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় ডিজিটাল মাধ্যমে সংগঠিত অপরাধ দমনে মহানগরবাসীর প্রত্যাশাপূরণে ও সাংবাদিকদের প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাথমিকভাবে একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে প্রধান করে ১ জন এসআই, ১ এএসআই এবং ৩ জন কনস্টেবল-সহ মোট ৬ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সদস্য নিয়ে এই ইউনিট যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ১ জন সহকারী পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে ৪ জন এস আই, ৩ জন এ এস আই এবং ১৬ জন কনস্টেবল-সহ সর্বমোট ২৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি দক্ষ, প্রশিক্ষিত ও চৌকস টিম এই ইউনিটে কাজ করছে।
সাইবার ক্রাইম ইউনিট সরাসরি অপারেশনাল টিম হিসেবে ফিল্ডে কাজ না করলেও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সকল কার্যক্রমে বিশেষ করে সাইবার অপরাধ ও অপরাধী  শনাক্তকরণ-সহ আসামি গ্রেফতারে সহায়তা প্রদান করছে। মেট্রোপলিটন এলাকার সকল ক্লু-লেস ঘটনা উদ্ঘাটন, অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতার সহায়তায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জেলার সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত ঘটনার চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণ করছে।
গত ২ বছরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন- সহ পার্শ্ববর্তী এলাকা হতে প্রায় ৮৬১ টির মত ফেইসবুক সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ এসেছে এই ইউনিটে। ফেইসবুক সংক্রান্ত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নারীদের বিভিন্ন স্পর্শকাতর ছবি/ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করা, ফেইসবুকে যে কারো ছবি দিয়ে ভুয়া একাউন্ট তৈরি করা, সোসাল মিডিয়ায় বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছেড়ে দিয়ে মানহানি করা, ফেইসবুক একাউন্ট হ্যাকড করা, বিভিন্ন ভুয়া মেসেঞ্জারের মাধ্যমে পর্নো ছবি ও ভিডিও পাঠানোসহ ফেইসবুকের মাধ্যমে সংঘটিত সকল অপরাধ। পূর্ব প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সাবেক প্রেমিক/প্রেমিকাকে হেনস্থা বা ব্লাকমেইল করার জন্য বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন ছবি/ ভিডিও প্রচার করা। ফেইসবুক সংক্রান্ত প্রায় ৮৬১ টি অপরাধের মধ্যে ৮৪০ টির মত নিষ্পত্তি করেছে আরএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও আর্থিক ট্রানজেকসন/ট্রান্সফার সিস্টেমের অপরাধ। বিভিন্ন ভুয়া অফারের মাধ্যমে পিনকোড নিয়ে বিকাশ একাউন্ট হ্যাক,  ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন, সংঘবদ্ধ অপরাধীদের বিকাশ, নগদ ও রকেট চক্রের পরিকল্পনামাফিক ফাঁদ-সহ অন্যান্য অপরাধ।  গত ২ বছরে এই সংক্রান্ত প্রায় ৩৫৭ টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
ইমো/হোয়াটসঅ্যাপ/ই-মেইল সংক্রান্ত প্রায় ৫৮ টি’র অধিক অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত অপরাধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইমো/হোয়াটসঅ্যাপ/ই-মেইল ব্যবহার করে সম্পর্ক স্থাপন ও আর্থিক প্রতারণার মত ঘটনা। এছাড়াও রয়েছে ই-মেইল হ্যাক করে বিভিন্ন অপ্রীতিকর তথ্য পাঠানো ও ভুয়া বা বেনামে মেইল আইডি খুলে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা।
টিকটক/লাইকি সংক্রান্ত মোট ১৫ টি অভিযোগ এসেছে এবং সবগুলোরই শনাক্তপূর্বক নিষ্পত্তি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপরাধ হলো বিভিন্ন উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত করা।
গত ২ বছরে এই ইউনিট প্রায় ১৫৩ টির মত অপহরণের অভিযোগ সংক্রান্তে ১৩৯ ভিকটিম উদ্ধার-সহ আসামি শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। উল্লেখযোগ্য অপরাধগুলো হলো অপ্রাপ্ত/অল্প বয়সী মেয়ে/ছেলেদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে অপহরণ করা। এছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক বিষয়ে অপহরণ করা।
গত দুই বছরে অনেক হারানো বা চুরি  বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল উদ্ধারের তথ্য উদ্ঘাটনের সফলতা রয়েছে এই ইউনিটের। প্রতিষ্ঠার পর হতে এ যাবত পর্যন্ত প্রায় ২৬০৭ টি বিভিন্ন মোবাইল/ল্যাপটপ উদ্ধার করার তথ্য সরবরাহ  করেছে আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট ।
এই ইউনিট উপরি-উক্ত বিভিন্ন অপরাধ ছাড়াও মেট্রোপলিটন এলাকার অন্যান্য ক্লু-লেস ঘটনা, সংঘবদ্ধ  অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তপূর্বক গ্রেফতারে প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। গত ২ বছরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ-সহ সর্বমোট প্রায় ৪৪৩৬ টির মত অভিযোগ/জিডি এসেছে। এর মধ্যে প্রায় ৪১৬৯ টির মত অপরাধ/জিডি/অভিযোগগুলোর নিষ্পত্তি করেছে আরএমপি’র নব্য গঠিত সাইবার ক্রাইম ইউনিট, যেখানে সফলতার হার প্রায় ৯৪ শতাংশ।
কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজঃ
আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট বাংলাদেশের সকল ইউনিটের মধ্যে সর্বপ্রথম কিশোরদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি করেছে। যেখানে রাজশাহী মহানগর এলাকার প্রায় ৫১৫ জন কিশোরের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়া রাজশাহী মহানগর এলাকার প্রায় ০৯ টির মত কিশোর গ্যাং এর বিস্তারিত তথ্য সংক্ষরণ করেছে। প্রতিদিন আরএমপির প্রত্যেকটি থানার মাধ্যমে ডাটাবেজ এ সংরক্ষিত কিশোরদের তদারকি করা হয়। এছাড়াও ডাটাবেইজে সংরক্ষিত ৫১৫ কিশোরদের নিয়মিত মনিটরিং এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
হ্যালো আরএমপি অ্যাপঃ
আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশিং সেবার অন্যতম বহুল তথ্য সম্বলিত ‘হ্যালো আরএমপি ‘ অ্যাপস সাইবার ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক পরিচালিত হয়। এই অ্যাপস ব্যবহার করে আপনার পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন অভিযোগ ও তথ্য প্রদান করতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপস এর মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রয়োজনীয় তথ্য সহজে পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত এই অ্যাপস-এর মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রায় ২৯৫ টির মত অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারঃ
রাজশাহী মহানগর এলাকার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা মনিটরিং,  বিভিন্ন অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার (সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরা ইউনিট)। এই ইউনিটটিও পরিচালিত হয় আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের মাধ্যমে।  রাজশাহী মহানগরীর প্রায় ৫০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে পুরো মহানগরীকে নজরদারির আওতায় নিয়েছে।
সফলতা
১. সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রায় ৪৭৫ টির অধিক চুরির ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও চোর শনাক্তকরণ
২. প্রায় ৮২ টির অধিক ছিনতাই ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তকরণ
৩. প্রায় ৬৮ টির অধিক ইভটিজিং এর ঘটনায় অপরাধী শনাক্তকরণ-সহ মহানগরীর কিশোর অপরাধ দমনে সার্বক্ষণিক মনিটরিং
৪. প্রায় ৯৩ টির অধিক হারানো ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন
৫. প্রায় ৩১ টির মত অজ্ঞান পার্টি ঘটনার আসামি শনাক্তকরণ
৬. গত ২ বছরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার প্রায় ৫৩ টির অধিক মারামারি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণ
৭. ছেলে/মেয়ে হারিয়ে যাওয়া ও হারিয়ে যাওয়ার নাটক করা সহ বিভিন্ন ব্যক্তি হারানোর প্রায় ৫৫ টি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন
৮. প্রায় ৭৫ টি সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ শনাক্ত-সহ দ্রুত সংবাদ প্রেরণ
৯. প্রায় ২৩ টির অধিক ক্লু-লেস মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন
১০. এছাড়াও ট্রাফিক কন্ট্রোল, বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রামের মিছিল/মিটিং/সমাবেশ/মানববন্ধন ও বিশেষ দিবসের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং
সর্বোপরি অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার (সেন্ট্রাল সিসি ক্যামেরা ইউনিট) এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫৫ টির অধিক ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন-সহ আসামি শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
U.S Embassy-এর তত্ত্বাবধানে ATA(Anti Terrorism Assistance) এর আওতায় ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সহায়তায় সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও U.S Embassy ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায় অত্যাধুনিক ফরেনসিক যন্ত্রপাতি/সফট্ওয়্যার, তথ্য-প্রযুক্তি ও দক্ষ-প্রশিক্ষিত-চৌকস জনবল নিয়ে একটি ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব তৈরি করা হয়ছে যার কার্যক্রম অতি শীগ্রই চালু করা হবে।
সর্বোপরি সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও রাষ্ট্র বিরোধীদের শনাক্ত-সহ অন্যান্য সকল অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট রাজশাহী মহানগরবাসীর সেবায় সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যোগাযোগের মাধ্যমঃ
সরাসরি – সাইবার ক্রাইম ইউনিট, সি এন্ড বি মোড়, পুরাতন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মোবাইলঃ হট লাইন- ০১৩২০০৬১৯৯৯
সহকারি পুলিশ কমিশনারঃ ০১৩২০০৬১৯৮৩