রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানের প্রীতিভোজে কনস্টবলের প্লেটে ভাত বেড়ে দিলেন বাংলাদেশ পুলিশের কিংবদন্তী ইন্সপেক্টর জেনারেল ড.বেনজীর আহমেদ বিপিএম(বার)।
এসময় বাহিনীর সব চাইতে কনিষ্ঠ পদের পুলিশ সদস্যের প্লেটে ভাত খুলে দেওয়ার দৃশ্য দেখে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, সত্যিই মান্যবর আইজিপি স্যারের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের।বাহিনী প্রধানের কনস্টেবলের প্রতি মহানুভবতা দেখে আমরা মুদ্ধ হয়েছি।তিনি আরো বলেন,আইজিপি স্যার একজন নিরহংকারী ও মানবিক মানুষ।তাঁর মহানুভবতা কে আমরা স্যালুট জানাই এবং শ্রদ্ধা করি। সত্যিই তিনি অন্যন্য ও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের জনগণের প্রথম ভরসাস্থল হতে চায়। সে লক্ষ্যে সকল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহবান জানান তিনি।
আইজিপি (০১ জুলাই) বিকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আরএমপি পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আরএমপি কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল (অতিরিক্ত আইজি) আবু হাসান মোহম্মদ তারিক, রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আব্দুল বাতেন, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বক্তব্য রাখেন। আরএমপির পুলিশ কর্মকর্তাগণ, রাজশাহী রেঞ্জের বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারগণ, নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, দেশ ও সমাজ যত এগিয়ে যাবে পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যশা তত বাড়বে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পুলিশকে প্রস্তুত হতে হবে।
তিনি বলেন, সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এখন ছাত্র শিক্ষককে পিটিয়ে মারছে। এক শিক্ষক অপর শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের লেলিয়ে দেয়। সামাজিক অপরাধের ফলে সৃষ্ট এ ধরনের জঘন্য অপরাধ মোকাবেলা করতে হবে। সবাইকে হাতে হাত রেখে দেশ ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে।
আইজিপি বলেন, বর্তমানে চিরায়ত অপরাধ যেমন- চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি কমছে। আবার অর্থনৈতিক অপরাধ, সাইবার ক্রাইম বাড়ছে। এ ধরনের অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে এসব অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিশাল ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, আমরা এ দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উন্মেষ ঘটানোর অপপ্রয়াস দেখেছি। বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
আইজিপি নগরবাসীর নিরাপত্তায় আরএমপির অনন্য ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ইনোভেটিভ পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের নিরাপত্তায় আরও সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আরএমপির কার্যক্রমের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রর্দশন করা হয়। এ উপলক্ষে ‘অগ্রযাত্রায় আরএমপি’ শীর্ষক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এর আগে সকালে আইজিপি বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে আরএমপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আরএমপি পুলিশ লাইন্সে এসে শেষ হয়।
আইজিপি এ উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। তিনি আরএমপি পুলিশ লাইন্স পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং ‘অনাবাদি জমিতে সবজি চাষ সুস্বাস্থ্য বার মাস’ শ্লোগানে আরএমপি পুলিশ লাইন্সের অনাবাদি জমিতে শাক সবজি চাষ উদ্বোধন করেন। তিনি সেখানে আমড়া ও সফেদা গাছের চারা রোপন করেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ চারটি থানা নিয়ে ১৯৯২ সালের ১ জুলাই যাত্রা শুরু করে। বর্তমান এখন থানার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২টি।