বর্ণিল আয়োজন আর দর্শকদের বাঁধভাঙা উল্লাসে গ্র্যান্ড ফাইনাল আর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো আমানা গ্রুপ ২য় বঙ্গবন্ধু রাজশাহী টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের। শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাইমা রেঞ্জার্স। আর রানার আপ হয়েছে শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংসদ। মঙ্গলবার বিকেলে ফাইনাল খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন টুর্ণামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় রাজশাহী বিভাগীয় ক্রিকেটার্স এসোসিয়েশন এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল। টুর্নামেন্টের পুরস্কার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফি ও ৩ লাখ টাকা এবং রানার আপ দল ট্রফি ও ২ লাখ টাকা পেয়েছে। টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা উপভোগ করতে দর্শকদের ঢল নামে শহীদ কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজশাহী টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে আরো বড় পরিসরে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হবে। আমি যতদিন মেয়র থাকবো সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আরো বেশি সহযোগিতা করা হবে।
মেয়র আরো বলেন, দেশের সর্বক্ষেত্রে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সঙ্গে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুর বাশার সুমন, সাবেক ক্রিকেটার জাবেদ ওমর বেলিম গোল্লা, চ্যাম্পিয়ন দলের ওনার ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক শামসুজ্জামান আওয়াল, রানার আপ দলের ওনার ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, আমানা হোমস এর পরিচালক মেহেদী হাসান রনি, অতিথি আপ্যায়নের চেয়ারম্যান মোঃ আরিফ হোসেন, হোটেল স্টার এর চেয়ারম্যান আজিজুল হক পান্না, টুর্নামেন্ট কমিটির আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম অমি, সদস্য মোঃ শাহাজাদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংঘকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে প্রথম বারের মত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া রাইমা রেঞ্জার্স। টস জিতে শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংঘকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান রাইমা রেঞ্জার্স এর অধিনায়ক শ্রীলঙ্কান জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার থিসারা পেরেরা। অহিনের ৫৭ বলে ৭৫ ও মেহেদী মারুফের ১৮ বলে ৩৪ রানের সুবাদে শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংঘ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান করে। রাইমা রেঞ্জার্স‘র বোলারদের মধ্যে ওয়ালিদ ৪৪ রানে ২ উইকেট ছাড়াও থিসারা পেরেরা, দিলশান মুরাবিরা ও অন্তর ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
১৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কান জাতীয় দলের ক্রিকেটার দিলশান মুরাবিরা ও সোহানের দুরন্ত ব্যাটিং এর দৌলতে খেলা সহজ করে নেয় রাইমা রেঞ্জার্স। দিলশান ১৩ বলে ২৬ ও সোহানের ৪৪ বলে ৬৩ রানের ঝড় ইনিংসে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংঘ। সোহান আউট হয়ে গেলে বাকী কাজটি সারেন অধিনায়ক পেরেরা। তিনি ৩৩ বলে ৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। রাইমা রেঞ্জার্স ১৮.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান তুলে শিরোপা জিতে নেন। শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংঘ‘র রানা ও রকি ১টি করে উইকেট লাভ করেন। টুর্ণামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রাইমা রেঞ্জার্স‘র সোহান এছাড়াও ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন রাইমা রেঞ্জার্স এর অধিনায়ক শ্রীলঙ্কান জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার থিসারা পেরেরা।
এরআগে গত ৩ জুন রাজশাহী কলেজ মাঠে টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন করেছিলেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। টুর্ণামেন্টে অংশগ্রহণকারী ৬টি দল ছিল শহীদ শামসুল আলম স্মৃতি সংসদ, সেস্টিনেলস, মুক্তি সংঘ, রাইমা রেঞ্জার্স, ন্যাশনটেক ক্রিকেটার্স এবং ফাইটার রাজশাহী। টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর ছিল আমানা গ্রুপ। পাওয়ার বাই অতিথি আপ্যায়ন।