রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেখার পরে ছবি তোলায় ওষুধ কোম্পানির ৫ রিপ্রেজেন্টেটিভকে (বিক্রয় প্রতিনিধি) কমরে রশি বাঁধার ঘটনায় জড়িত আনসার সদস্যদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা হাসপাতালের সামনের রাস্তায় এ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় তাঁরা বলেন, গোলাম হয়ে মালিকের কোমরে দড়ি বাঁধায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যালস রিপ্রেজেনটিভস এ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) রাজশাহী মহানগর শাখার উদ্যোগে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে রামেক হাসপাতালের পরিচালকেরও বিচার দাবি করা হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন ফারিয়া কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল খান প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত বক্তারা বলেন- ‘ডাক্তার ও নার্সদের মত আমরাও স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখি। আমরা কোন চোর নই যে, আমাদের মাজায় রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যেতে হবে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায়। পাশাপাশি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও বাধাহীনভাবে হাসাপাতালে রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রবেশধিকারের দাবি জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, রবিবার সকালে বর্হিবিভাগের সামনে ওষুধ কম্পানির ৫ জন রিপ্রেজেন্টেটিভ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিকট থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র চেয়ে নিয়ে ছবি তুলছিলেন। এসময় কর্তব্যরত আনাসার সদস্যরা ছবি তুলতে বাঁধা দিলে উভয়ের বাকবিতন্ডা জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ওই ৫জন ওষুধ কম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভকে আটক করেন আনসার সদস্যরা। এর পর তাঁদেরকোমরে দড়ি বেধে রাস্তার পাশের একটি গাছের সঙ্গে বেধে রাখা হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানির নিকট মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান হেনস্থার শিকার রিপ্রেজেন্টিভরা।
এ বিষয়ে ‘একমি’ ওষুধ কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার মুকিবুল ইসলাম বলেন, ‘হেনস্থার শিকার হওয়াদের মধ্যে আমাদের কম্পানীর দুজন প্রতিনিধি ছিলেন। কিন্তু তারা কি এমন অপরাধ করলেন যে এভাবে প্রকাশ্যে হেনস্থা করতে হলো? করোনানার সময় আমরা জানবাজি রেখে মানুষের মাঝে ওষুধ পৌঁছে দিয়েছি। এখন হয়তো রোগীদের স্বজনদের নিকট থেকে বিনয়ের সঙ্গে ব্যবস্থাপত্র চেয়ে নিয়ে সেগুলোর ছবি তুলেন বা সার্ভে করেন রিপ্রেজেনটিভরা। এই অপরাধে এতো বড় সাজা দিতে হবে আমাদের?’
আমি মানলাম রিপ্রেজেন্টেটিভরা আগত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রের ছবি তুলে বিড়ম্বনায় ফেলেন। এর আগেও নানাভাবে রিপ্রেজেনটিভদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে রিপ্রেজেন্টেটিভদের এভাবে জনসম্মুখে কোমরে রশ্মি বেঁধে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার ঘটানটি প্রথম। এই ধরনের ঘটনা কোন সভ্য সমাজের ক্ষেত্রে মানায়? এর বিচার আমরা আল্লাহয়ই করবেন।’
জানতে চাইলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানি বলেন, রিপ্রেজেনটিভরা ব্যবস্থা দেখার নামে রোগীদের হয়রানি করেন। তাদের নিষেধ করার পরেও হাসপাতাল চত্তরে এসে একই কাজ করেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আনসার সদস্যরা তাই কয়েকজনকে ধরে আটকে রেখেছিল। কিন্তু কোমরে দড়ি বাধার বিষয়টি জানা নাই।’