রাজশাহীতে অতিতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার কাঁঠালের দামে রেকর্ড গড়েছে। এবার প্রতিটি ছোট আকারের কাঁঠালও বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা দামে। আর বড় আকারেরগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২৫০ টাকা দামে। যা অতিতে কখনোই হয়নি। গতবার এই সময়ে রাজশাহীতে প্রতিটি ছোট আকারের কাঁঠাল বিক্রি হয়েছে ২০-৩০ টাকা দামে। আর বড়গুলো বড় জোর ১০০ টাকা দামে। এবার সেখানে কাঁঠালে যেন আগুন লেগেছে। এবার রাজশাহীতে সবমিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার কাঁঠাল বেচা-কেনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর কৃষক পর্যায়ে অন্তত ১৬ কোটি দাম পাওয়া যাবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র মতে, এবার জেলায় অতিতের সব রেকর্ড ভেঙে কাঁঠাল চাষের উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এবার সবমিলিয়ে ৫৯০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ৫৮৯ হেক্টর জমিতে। গতবার জেলায় ১১ হাজার ২৭০ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপাদন হয়। যা থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা আয় হয় কৃষকদের। তবে এবার উৎপাদন বেড়ে হবে ১১ হাজার ৩২৮ মেট্রিক টন। এখান থেকে কৃষক পর্যায়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি হবে। আর বাজার পর্যায়ে অন্তত ২০ কোটি টাকার কেনা-বেচা হবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে গতকাল রাজশাহীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ছোট আকারের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে অন্তত ৬০ টাকা দামে। আবার বড়গুলো বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২৫০ টাকা দামে।
রাজশাহীর সাহেব বাজারের ব্যবসায়ী নাজমুল হোসেন বলেন, এবার কাঁঠালের দাম দ্বিগুনের বেশি। গতবার যে কাঁঠাল বিক্রি হয়েছে ২০ টাকায়, এবার সেটি অন্তত ৬০ টাকা। গত বার আমের দামই কম ছিল। এ কারণে কাঁঠালের প্রতি তেমন চাহিদা ছিল না। এবার আমের দাম বেশি হওয়ার কারণে কাঁঠালের দামও বেশি। এবার ২৫০ টাকা দামে রাজশাহীতেই কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে। যা এর আগে সহজে দেখা যায়নি। ফলে এবার কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।’
এ বাজারে কাঁঠাল কিনতে আসা মনিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি কাঁঠালের ভক্ত। সকালে রুটি দিয়ে কাঁঠাল খেতে খুব ভালোবাসি। তাই এই সময়ে অন্তত এক বেলা হলেও কাঁঠাল আমার লাগেই। তবে এবার দাম বেশি। গত বারের চেয়ে দুই-তিন গুন দামে এবার কাঁঠাল কিনতে হচ্ছে। একটা মাঝারি আকারের কাঁঠাল কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। কিন্তু গতবার ছিল বড় জোর ৪০ টাকা।’
রাজশাহীর দুর্গাপুরের কৃষক নাইম ইসলাম বলেন, ‘এবার এক গাছ থেকেই ২৫ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছি। যা কখনোই হয়নি। গতবার গোটা বাগান মিলেও ৫০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করতে পারিনি। এবার অন্তত দেড় লাখ টাকার কাঁঠালই বিক্রি হবে আমার।’
পুঠিয়ার কাঁঠাল চাসি আলী আসগর বলেন, ‘গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার কঁঠালের দাম বেশি পাচ্ছি। এতো দামে কখনোই গাছ থেকে কাঁঠাল বিক্রি করতে পারিনি। এবার চাহিদাও প্রচুর। গতবার তো বেপারিই (ব্যবসায়ী) আসছিল না। এবার কেনার জন্য প্রতিদিন লোক আসছে।’