Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
অনুমতি ছাড়াই রাজশাহীতে নদী দখল করে চলছে মেলা
ঢাকা ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পদ্মার চরে এ আয়োজন করা হলেও নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি।

অনুমতি ছাড়াই রাজশাহীতে নদী দখল করে চলছে মেলা

ফাইল ছবি।

রাজশাহীতে পদ্মা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পুকুরসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। এবার সেই নদী দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আনন্দ মেলার স্টলসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। এমনকি ইট-বালু দিয়ে পাকা করে ঝরনাও করা হয়েছে। মাসব্যাপী এ আনন্দ মেলার জন্য জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে কোনো অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে না করে একমাত্র নিজেদের স্বার্থে এ নদীর চর দখল করে আয়োজন করা হয়েছে এ মেলা। কিন্তু মেলার নামে দর্শক টানতে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে প্রতারণার। এতে করে পকেট কাটছে সাধারণ মানুষের। আবার মেলায় প্রবেশের পর নানাভাবে হয়রানির শিকারও হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ নিয়ে চরস ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো আয়োজকদের পক্ষে থেকে নাজেহাল করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু অনুমোদনহীন এ মেলা চলছেই প্রশাসনের নাকের ডগায়।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, গত ১৯ মে থেকে রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠের নিচে পদ্মার চরে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী আনন্দ মেলা। এ মেলার জন্য ৪৩টি স্টল এবং একটি সার্কাসের প্যান্ডেল করা হয়েছে। মেলার মধ্যস্থলে ইট-বালু দিয়ে গোলাকার পানির ঝরনা করা হয়েছে। দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য খেলনা, নারীদের জন্য পোশাক, বাড়ির তৈজসপত্রসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন দুটি করে সাকার্স শো আয়োজন করা হচ্চে। মেলার মূলকেন্দ্রে প্রবেশ করতে প্রথমে ১০ টাকার টিকিট কাটতে হচ্ছে। এর পর সার্কাস শো দেখতে চেয়ারে ১৩০ টাকা এবং গ্যালারির জন্য ১০০ টাকা করে জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে। টিকিটের মাধ্যমে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মার শহর রক্ষার বাঁধের নিচেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব আলম খান ববিনের নেতৃত্বে এ মেলাটি চলছে। এছাড়া মেলার ৮ অংশিদারের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও যুবলীগ নেতা আপেল হোসেন শাহীন খান, ও শাহীন আলম।
গত শনিবার বিকেলে এ মেলায় গিয়ে কথা হয় দর্শনার্থী সুমাইয়া ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাতির খেলা দেখানো হবে বলে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু সার্কাসের প্যান্ডেলের ভিতরে ১৩০ টাকার চেয়ারের টিকিট গিয়ে ঢুকে হাতির দেখা পেলাম না। শুধু কয়েকজন ব্যক্তি শারীরিক কিছু কসরত দেখিয়ে শেষ করে দিল। আর কয়েকটা গান। পুরা টাকাটায় জলে গেলো। দর্শকদের সঙ্গেও প্রতারণা করলো এরা।’
মেলার ৪৩টি স্টলের মধ্যে একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী বলেন, এখানে স্টল দিতে এক মাসের কথা বলে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ২৫০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। এভাবে প্রতিটি স্টল থেকেই টাকা উত্তোলন হচ্ছে।
মেলার আগত দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফি নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। এই টাকাও চলে যাচ্ছে আয়োজক কমিটির পকেটে। এর বাইরে সার্কাসের প্যান্ডেল থেকে প্রতিদিন ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ লাখ টাকা আয় করছেন আয়োজকরা। এর বাইরে স্টল বরাদ্দের নামে আদায় করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের এ মেলায় অন্তত কোটি টাকা আয়ের মিশন নিয়ে নেমেছেন ওই প্রভাবশালীরা। কিন্তু পদ্মার চরে এ আয়োজন করা হলেও নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘এই ধরনের কোনো অনুমতি আমাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। কিন্তু চর দখল করে মেলা কিভাবে চলছে সেটি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের নিকট থেকে ২০ দিনের জন্য মেলাটির অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে চর দখলের জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানি না।
জনপ্রিয় সংবাদ

বটিয়াঘাটা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠন; আহবায়ক দুলু সদস্য সচিব শাহীন

পদ্মার চরে এ আয়োজন করা হলেও নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি।

অনুমতি ছাড়াই রাজশাহীতে নদী দখল করে চলছে মেলা

আপডেট সময় ০২:১১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জুন ২০২২
রাজশাহীতে পদ্মা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পুকুরসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। এবার সেই নদী দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আনন্দ মেলার স্টলসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। এমনকি ইট-বালু দিয়ে পাকা করে ঝরনাও করা হয়েছে। মাসব্যাপী এ আনন্দ মেলার জন্য জেলা প্রশাসক দপ্তর থেকে কোনো অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কোনো প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে না করে একমাত্র নিজেদের স্বার্থে এ নদীর চর দখল করে আয়োজন করা হয়েছে এ মেলা। কিন্তু মেলার নামে দর্শক টানতে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে প্রতারণার। এতে করে পকেট কাটছে সাধারণ মানুষের। আবার মেলায় প্রবেশের পর নানাভাবে হয়রানির শিকারও হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ নিয়ে চরস ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো আয়োজকদের পক্ষে থেকে নাজেহাল করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের। কিন্তু অনুমোদনহীন এ মেলা চলছেই প্রশাসনের নাকের ডগায়।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, গত ১৯ মে থেকে রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠের নিচে পদ্মার চরে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী আনন্দ মেলা। এ মেলার জন্য ৪৩টি স্টল এবং একটি সার্কাসের প্যান্ডেল করা হয়েছে। মেলার মধ্যস্থলে ইট-বালু দিয়ে গোলাকার পানির ঝরনা করা হয়েছে। দোকানগুলোতে শিশুদের জন্য খেলনা, নারীদের জন্য পোশাক, বাড়ির তৈজসপত্রসহ নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন দুটি করে সাকার্স শো আয়োজন করা হচ্চে। মেলার মূলকেন্দ্রে প্রবেশ করতে প্রথমে ১০ টাকার টিকিট কাটতে হচ্ছে। এর পর সার্কাস শো দেখতে চেয়ারে ১৩০ টাকা এবং গ্যালারির জন্য ১০০ টাকা করে জনপ্রতি আদায় করা হচ্ছে। টিকিটের মাধ্যমে এ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মার শহর রক্ষার বাঁধের নিচেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহবুব আলম খান ববিনের নেতৃত্বে এ মেলাটি চলছে। এছাড়া মেলার ৮ অংশিদারের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও যুবলীগ নেতা আপেল হোসেন শাহীন খান, ও শাহীন আলম।
গত শনিবার বিকেলে এ মেলায় গিয়ে কথা হয় দর্শনার্থী সুমাইয়া ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘হাতির খেলা দেখানো হবে বলে মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু সার্কাসের প্যান্ডেলের ভিতরে ১৩০ টাকার চেয়ারের টিকিট গিয়ে ঢুকে হাতির দেখা পেলাম না। শুধু কয়েকজন ব্যক্তি শারীরিক কিছু কসরত দেখিয়ে শেষ করে দিল। আর কয়েকটা গান। পুরা টাকাটায় জলে গেলো। দর্শকদের সঙ্গেও প্রতারণা করলো এরা।’
মেলার ৪৩টি স্টলের মধ্যে একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী বলেন, এখানে স্টল দিতে এক মাসের কথা বলে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন ২৫০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। এভাবে প্রতিটি স্টল থেকেই টাকা উত্তোলন হচ্ছে।
মেলার আগত দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফি নেওয়া হচ্ছে ১০ টাকা করে। এই টাকাও চলে যাচ্ছে আয়োজক কমিটির পকেটে। এর বাইরে সার্কাসের প্যান্ডেল থেকে প্রতিদিন ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৩-৪ লাখ টাকা আয় করছেন আয়োজকরা। এর বাইরে স্টল বরাদ্দের নামে আদায় করা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। ফলে এক মাসের এ মেলায় অন্তত কোটি টাকা আয়ের মিশন নিয়ে নেমেছেন ওই প্রভাবশালীরা। কিন্তু পদ্মার চরে এ আয়োজন করা হলেও নেওয়া হয়নি জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমতি।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘এই ধরনের কোনো অনুমতি আমাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। কিন্তু চর দখল করে মেলা কিভাবে চলছে সেটি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের নিকট থেকে ২০ দিনের জন্য মেলাটির অনুমতি নেওয়া হয়েছে। তবে চর দখলের জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানি না।