গুটি জাতের আম দিয়ে মৌসুম শুরুর পর গোপালভোগের পর এবার রাজশাহীর বাজারে এলো সুস্বাদু আম লক্ষণভোগ ও রাণিপছন্দ। গত বুধবার থেকেই চাষিরা এসব জাতের আম গাছ থেকে পাড়তে শুরু করেছেন।
বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে এসব আম বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এখন রাজশাহীর বাজারে গুটি জাতের আমের পাশাপাশি গোপালভোগ ও লক্ষনভোগ বিক্রি হচ্ছে। তবে সীমিত পরিসরে এসেছে রাণীপছন্দ আম।
জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ২৮ মে বাজারে আসবে খিরসাপাত ও হিমসাগর। এরই মধ্যে আমের হাট জমে উঠেছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকাররা আসতে শুরু করেছেন। তারা আম কিনছেন।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সরেজমিনে রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারে গোপালভোগ ও বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আমের সঙ্গে লক্ষণভোগ বা লখনা জাতের আম বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের নিকট জানা গেছে, প্রতিমণ লখনা জাতের আম সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই বাজারে প্রতিদিন প্রায় প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাক আম আসছে।আনুমানিক ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ক্যারেট আম এই বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বাজারে আমের সরবরাহ বাড়ছে। সেই সঙ্গে ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ী ও চাষীদের মুখে।
বানেশ্বরের আমের আড়ৎদার আকবর আলী জানান, প্রথম দিনেই তিনি ৫ থেকে ৬ হাজার ক্যারেট লক্ষণভোগ আম বাজারে উঠেছে। গোপালভোগ, লক্ষণভোগ ও বিভিন্ন আটিঁর আমসহ ১০ হাজার ক্যারেট অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার মণ মন আম বাজারে এসেছে বলে জানান তিনি।
বানেশ্বরের বাজারে আসা আম ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, গোপাল ভোগ আমের দাম বেড়েছে। গত ২২ মে গোপাল ভোগ আম সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন রাজশাহীর আম এখন কুরিয়ার সার্ভিস ও অনলাইনে বিক্রি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিদেশেও যাচ্ছে।
এজন্য গোপালভোগ আমের দাম বেড়ে সর্বনিম্ন ১৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও বাজারে বিভিন্ন ধরনের আটিঁর আম ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানোর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ২৮ মে খিরসাপাত-হিমসাগর, ৬ জুন ল্যাংড়া, ১৫ জুন আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই বারি-৪ ও আশ্বিনা, ১৫ জুলাই গোলমতী, ২০ আগস্ট ইলমতি আম চাষিরা গাছ থেকে নামাতে পারবেন।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাকশাইল থেকে আসা জামাল উদ্দীন নামের আম চাষি বলেন, প্রতিবছর বাগান লিজ নিয়ে থাকি । এবছরও ৯ টি বাগান নিয়েছি প্রায় ১০ লাখ টাকা দিয়ে। এরইমধ্যে বাজারে ৫ মণ লক্ষণ ভোগ আম নিয়ে এসেছি। দাম একটু কম। তাপরও ফলন ভালো হয়েছে। এবছর ব্যবসা ভালো হবে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আম নামানো বা বাজারে বিক্রির সময়সূচি দেয়ায় খুব ভালো হয়েছে। কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার করে আম পাকাতে বা জোর করে বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। তাড়াহুড়ো করার কোন প্রয়োজন নেই। সময়মত আম বাজারে আসবে। মানুষ পরিপক্ক সুস্বাদু আমই পাবে।
বাজারের ইজাদার সুমন শেখ বলেন, ফরমালিন মুক্ত ও ভেজালমুক্ত আম বিক্রি হচ্ছে রাজশাহীতে। যাচাই করার জন্য আমের স্যাম্পল প্রতিটি গাড়িতেই থাকে। আমে কোন সমস্যা থাকলে ধরা পড়ে যাবে।