ঢাকার আশুলিয়ায় ডেন্ডাবর পল্লীবিদ্যু পলাশবাড়ি এলাকায় তিতাস গ্যাসের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বাড়ির মালিকেরা। আশুলিয়ায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করে স্থানীয় তিতাসের গ্রাহকেরা।
সোমবার (৬জানুয়ারী) দুপুরে আশুলিয়ার পলাশবাড়ি আমার স্কুলের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তিতাস গ্যাসের কয়েক হাজার গ্রাহক।
পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল সহকারে আশুলিয়ার বাইপাইলে অবস্থিত তিতাসের জোনাল বিপনন অফিসের সামনে এসে থামে।এক পযার্য়ে মানববন্ধন থেকে একটি প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাস না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন । পরে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন ভুক্তভোগী গ্রাহকদের।
অত্র এলাকার ভুক্তভোগী তিতাসের গ্রাহকরা জানান, তারা দীর্ঘ ৯ বছর ধরে নিয়মিতভাবে তিতাসের গ্যাস বিল পরিশোধ করলেও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন না। বাসায় গ্যাস সংযোগ থাকলেও যথাযথ প্রেসার না থাকায় তারা গ্যাসের অভাবে বিকল্প উপায়ে কষ্ট করে রান্না করেন। তাই বাধ্য হয়ে তারা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষনা করতে বাধ্য হয়েছেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এলাকাবাসী বিভিন্ন অসুবিধার কথা তুলে ধরে বলেন, বৈধ গ্যাস লাইন থাকা সত্ত্বেও সকাল থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত গ্যাসের চুলা জ্বলছে না। তারা জানান, ডেন্ডাবর দশ তলা রোড হয়ে ডেন্ডাবর উত্তরপাড়া, নরিঙ্গার টেক, সারেং টেক পর্যন্ত প্রায় দুই থেকে তিন হাজার গ্রাহক। আমাদের এলাকার বৈধ গ্যাস লাইন থাকলেও প্রায় তিন থেকে চার বছর পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। যার ফলে গ্যাসের অভাবের কারনে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছে। এমন কি সকাল থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত গ্যাসের চুলা সামান্য পরিমানেও জ্বলছে না। কিন্তু আমাদের গ্যাস বিল আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরিশোধ করে আসছি। আরও ক্ষতির বিষয় যে, আমাদের এলাকার বাসিন্দারা বাসা ভাড়ার উপর জীবিকা নির্বাহ করে আসছে এবং অনেকেই ব্যাংক লোন করে বাড়ী বানিয়েছেন। কিন্তু গ্যাস না থাকার কারনে ভাড়াটিয়া থাকে না। যাহার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের কিস্তি বকেয়া পড়ে যাচ্ছে। যার কারনে অনেকে ব্যাংক ঋণ খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, সরকার গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে মাসিক গ্যাস বিল নেওয়া বন্ধ করুন।
আরেক অভিযোগে বলেন, তিতাস অফিসের অবাক করা কাজ হলো পাশের এলাকা ডেন্ডাবর নতুন পাড়া, পলাশবাড়ী, বাতানটেকের গ্রাহকেরা ২৪ ঘন্টাই গ্যাস পাচ্ছে। যার ফলে আমাদের ভাড়াটিয়ারা ঐসব এলাকায় চলে যাচ্ছে এবং আমাদের এলাকার অনেক বাড়িই খালি পড়ে থাকে মাসের পর মাস।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থার কারনে এলাকার বাড়ির মালিক-ভাড়াটিয়াসহ সাধারন জনগনে মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে কোন সমাধান না পেয়েই তার প্রতিবাদে অত্র এলাকার সকল তিতাস গ্যাসের গ্রাহকসহ জনগণ একত্রিত হয়ে রাস্তায় নেমেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি,আশুলিয়া জোনাল বিপনন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন জানান, সবেমাত্র কিছুদিন হলো তিনি এ এলাকার দায়িত্ব নিয়েছেন। সকল অভিযোগ ও অনিয়ম এবং যে অসুবিধার কথা বলা হচ্ছে সব বিষয়ে তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন । কিন্তু উত্তেজিত গ্রাহকরা তার এই আশ্বাস মানতে অপ্রগতা প্রকাশ করলে তাদের দাবির মুখে তাৎক্ষণিক তিনি ভুক্তভোগী গ্রাহকদের এলাকাতে গিয়ে পরিদর্শন করে সাত দিনের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।