আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় আড়ৎ সংলগ্ন রমজান আলী মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে মার্কেটের ৮ দোকান পুড়ে ভস্মিভূত এবং আশেপাশের কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আধাপাকা এই টিনশেড মার্কেটে প্রায় বিভিন্ন সাইজের ২০ থেকে ২৫ টি দোকান রয়েছে ।এর ভিতর আছে কয়েকটি হোটেল, মিষ্টির দোকান, মুদি ও গ্রোসারী দোকান, পাইকারি পিলিথিন দোকানসহ বিভিন্ন পণ্য গুদামজাত করার ঘর ।
ঢাকার আশুলিয়ায় বাইপাইলে মশলা ও নিষিদ্ধ পলিথিনের পাইকারি দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮টি দোকান এবং দোকানে থাকা সমস্ত মালামাল আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট প্রায় দেড় ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল মোড় এলাকায় রমজান আলী সুপার মার্কেটে আগুনের এ ঘটনা ঘটে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত আটটি দোকানের ৬টারই মালিক অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট দেলোয়ার জানান, আমি প্রতিদিনের মতই ৯ টা থেকে দশটার মধ্যে দোকান বন্ধ করে চলে যাই । হঠাৎ পৌনে এগারোটার দিকে ফোনে জানতে পারি যে মার্কেটে আগুন লেগেছে ।এসে দেখি সবকিছু শেষ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে । ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকার মত আর্থিক ক্ষতি হতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায় , তারা প্রথমে একটি দোকান থেকে ধোয়া বের হতে দেখেন। পরে আশেপাশের দোকানদারের সাথে অন্যান্য লোকজন দোকানের শাটার ভেঙ্গে ফেলার পর ভেতরে আগুন দেখতে পান। মুহুর্তের মধ্যে ওই দোকান থেকে আগুন আশপাশের দোকানেও ছড়িয়ে পড়ে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আগুনের সূত্রপাত দোকানের পূর্ব পাশে খান হোটেলের মালিক মানারুল ইসলাম খান রানা জানান, রাত আনুমানিক দশটা বা সোয়া দশটার দিকে আমার হোটেলের পিছনের দিক দিয়ে দেখি হঠাৎ করে ধোঁয়া আসতেছে ।কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ বোঝার চেষ্টা করলাম পরক্ষণেই দেখি আগুনের শিখা আমার হোটেলের দিকে আসছে।দ্রুতই সবাই গিয়ে পানি মারার সাথে সাথে আগুন টা ভিতরের দিকে চলে গেল আল্লাহর রহমতে । সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে কল করলে তারা আমাদেরকে জানায় আমরা ইতিমধ্যে খবর পেয়েছি আসতেছি। আমরা আতঙ্কিত হয়ে বাইরে আসার পরেই দেখতে পেলাম আগুন টিন শেডের উপর দিয়ে দাউদাউ করে জ্বলছে। দেখি তার কিছুক্ষণ পরেই ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি গাড়ি এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে।
এখানে বেশকয়েকটি দোকানে ছিল নিষিদ্ধ পলিথিন এবং প্লাস্টিক ব্যাগ। কয়েকটি দোকানে মসলা থাকলেও অধিকাংশ দোকানেই পলিথিন থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেও দেড়ি হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, রাতে আড়ৎ এর একটি দোকানে আগুনের সূত্রপাত হয়। এসময় আগুনের মাত্রা বেশি থাকায় আশপাশের দোকানেও ছড়িয়ে পরে। স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ডিইপিজেড স্টেশন থেকে প্রথমে তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। কিন্ত আগুন আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পরলে জিরাবো স্টেশন (ডেন্ডাবর পল্লীবিদ্যু) থেকে আরো তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিসের জোন-ফোর ডিএডি মোহাম্মদ আলাউদ্দিন সাংবাদিকদেরকে বলেন, আমরা আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগুন লাগার বিষয়টি জানতে পারি। তখন প্রথমে ডিইপিজেড স্টেশন থেকে তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে জিরাবো ফায়ার স্টেশন (ডেন্ডাবর পল্লীবিদ্যু) থেকে আরও তিনটি ইউনিট এসে যোগ দেয় । দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসে। কি কারণে আগুন লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে জানা যাবে। এছাড়া আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কেও এখন কিছু বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।