ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাজারে এখন মাছ কেটে আঁইশ সংগ্রহ করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে

এক সময় ফেলে দেওয়া কিছু জিনিস, বৈদেশিক মুদ্রা আনছে বাংলাদেশে।

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের অভিনব চারটি ব্যবসা – মাছের আঁইশ, সেলুন থেকে চুল, পরিত্যক্ত সুতা ও কাপড় এবং ছাই

একসময় বাতিল বা ফেলে দেয়ার জিনিস হিসাবে বিবেচনা করা হতো, এমন কিছু পণ্যই এখন বৈদেশিক মুদ্রা আনতে শুরু করেছে বাংলাদেশে।

বিদেশের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে রীতিমত শিল্প আকারে এসব পণ্যের সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির ব্যবসা শুরু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।

অথচ এসব ব্যবসার বেশিরভাগই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে গত দুই দশকের মধ্যে।

করোনাভাইরাসের কারণে অনেকটা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মতো রপ্তানিমুখী এসব ব্যবসা বড় ক্ষতির মুখোমুখি হলেও এখন আবার সেটা কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তারা।

মাছের আঁশ
মাছে-ভাতে বাঙালি হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে মাছ বরাবরই জনপ্রিয় থাকলেও, মাছের আঁশের কোন কদর ছিল না।

কিন্তু প্রায় দেড় দশক আগে থেকে এই ফেলে দেয়া পণ্যটি রপ্তানি আয় আনতে শুরু করেছে। এখন বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার বেশি মাছের আঁশ সাত-আটটি দেশে রপ্তানি হয়।

দুই হাজার আট সালে মাছের আঁশ রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শামসুল আলম।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”সেই সময় আমার একজন বন্ধু সিএন্ডএফের এজেন্ট ছিল। তার একজন জার্মান ক্রেতা তাকে বললেন যে, আমাদের মাছের আঁশ লাগবে, দেখো তো তোমরা এটা রপ্তানি করতে পারো কিনা। সেই বন্ধুর কাছ থেকে পরামর্শ পেয়ে আমি আঁশ সংগ্রহ করার কাজ কাজ শুরু করি।”

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাজারে এখন মাছ কেটে আঁইশ সংগ্রহ করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে

সেই থেকে তিনি এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যদিও প্রথম দিকে মানুষ এ ব্যাপারে সচেতন না হওয়ায় পুরো এক বছর ধরে চেষ্টার পর মাত্র ৬০ টন আঁশ সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।

এরপর আস্তে আস্তে সারা দেশে তাদের একটি সাপ্লাই চেইন গড়ে ওঠে।

আরেকজন রপ্তানিকারক জুলফিকার আলম বলছেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় প্রতিটি বাজারে যারা মাছ কাটেন, তারা সবাই আর আঁশ ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করে রেখে দেন। সারা দেশ থেকেই আমরা আঁশ সংগ্রহ করি। এক সময় যে পণ্যটি ফেলে দেয়া হতো, সেটি থেকে আমরা এখন রপ্তানি আয় করছি।

তাদের কাছ থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসব আঁশ সংগ্রহ করে ময়লা দূর করে ধুয়ে শুকিয়ে নেন। এরপর রপ্তানিকারকরা সেগুলো প্রক্রিয়া করে বিদেশে রপ্তানি করেন। যদিও মাত্র ১০-১২ জন ব্যক্তি আঁশ রপ্তানি করেন, কিন্তু সব মিলিয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার ও আমাদের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাজারে এখন মাছ কেটে আঁইশ সংগ্রহ করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে

এক সময় ফেলে দেওয়া কিছু জিনিস, বৈদেশিক মুদ্রা আনছে বাংলাদেশে।

আপডেট সময় ০৪:১৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

বাংলাদেশের অভিনব চারটি ব্যবসা – মাছের আঁইশ, সেলুন থেকে চুল, পরিত্যক্ত সুতা ও কাপড় এবং ছাই

একসময় বাতিল বা ফেলে দেয়ার জিনিস হিসাবে বিবেচনা করা হতো, এমন কিছু পণ্যই এখন বৈদেশিক মুদ্রা আনতে শুরু করেছে বাংলাদেশে।

বিদেশের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে রীতিমত শিল্প আকারে এসব পণ্যের সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির ব্যবসা শুরু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।

অথচ এসব ব্যবসার বেশিরভাগই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে গত দুই দশকের মধ্যে।

করোনাভাইরাসের কারণে অনেকটা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মতো রপ্তানিমুখী এসব ব্যবসা বড় ক্ষতির মুখোমুখি হলেও এখন আবার সেটা কাটিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তারা।

মাছের আঁশ
মাছে-ভাতে বাঙালি হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে মাছ বরাবরই জনপ্রিয় থাকলেও, মাছের আঁশের কোন কদর ছিল না।

কিন্তু প্রায় দেড় দশক আগে থেকে এই ফেলে দেয়া পণ্যটি রপ্তানি আয় আনতে শুরু করেছে। এখন বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ২০০ কোটি টাকার বেশি মাছের আঁশ সাত-আটটি দেশে রপ্তানি হয়।

দুই হাজার আট সালে মাছের আঁশ রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শামসুল আলম।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”সেই সময় আমার একজন বন্ধু সিএন্ডএফের এজেন্ট ছিল। তার একজন জার্মান ক্রেতা তাকে বললেন যে, আমাদের মাছের আঁশ লাগবে, দেখো তো তোমরা এটা রপ্তানি করতে পারো কিনা। সেই বন্ধুর কাছ থেকে পরামর্শ পেয়ে আমি আঁশ সংগ্রহ করার কাজ কাজ শুরু করি।”

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বাজারে এখন মাছ কেটে আঁইশ সংগ্রহ করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে

সেই থেকে তিনি এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যদিও প্রথম দিকে মানুষ এ ব্যাপারে সচেতন না হওয়ায় পুরো এক বছর ধরে চেষ্টার পর মাত্র ৬০ টন আঁশ সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন।

এরপর আস্তে আস্তে সারা দেশে তাদের একটি সাপ্লাই চেইন গড়ে ওঠে।

আরেকজন রপ্তানিকারক জুলফিকার আলম বলছেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় প্রতিটি বাজারে যারা মাছ কাটেন, তারা সবাই আর আঁশ ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করে রেখে দেন। সারা দেশ থেকেই আমরা আঁশ সংগ্রহ করি। এক সময় যে পণ্যটি ফেলে দেয়া হতো, সেটি থেকে আমরা এখন রপ্তানি আয় করছি।

তাদের কাছ থেকে পাইকারি ক্রেতারা এসব আঁশ সংগ্রহ করে ময়লা দূর করে ধুয়ে শুকিয়ে নেন। এরপর রপ্তানিকারকরা সেগুলো প্রক্রিয়া করে বিদেশে রপ্তানি করেন। যদিও মাত্র ১০-১২ জন ব্যক্তি আঁশ রপ্তানি করেন, কিন্তু সব মিলিয়ে এই ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।