ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপদেষ্টা ফারুকীকে অপসারণের দাবিতে জাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

 

রবিবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থীরা।

 

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

 

সমাবেশের বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি এবং টুঙ্গিপাড়ার মাজার। গণঅভ্যুত্থানের পর মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী ৩২ নম্বর বাড়ি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা আমাদের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা মনে করি, স্বাধীনতার পর সেই ভেঙে দেওয়া বাড়ি রেখে দেওয়া উচিত, যেন তা ফ্যাসিস্ট শাসন ভেঙে দেওয়ার প্রতীক হয়ে থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, মুজিববাদের প্রতি সহানুভূতিশীল কারও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো অধিকার নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ছাত্রসমাজের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। যদি এই সরকারে মুজিববাদী কোনো উপাদান থাকে, তবে তাদের সরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই রকম দৃঢ় নেতৃত্ব দেবে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, তিন মাস আগে আমরা হাজারো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন লক্ষ্য করছি এই সরকারও ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা আমাদের আহত ও নিহত ভাইদের হত্যা করেছিল, তাদের বিচার এখনও হয়নি। এর বদলে তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছ।

 

অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছিল। ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে, ছাত্রসমাজ আপনাদের সেই ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতেও পিছপা হবে না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার ও আমাদের ভাবনা শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।

উপদেষ্টা ফারুকীকে অপসারণের দাবিতে জাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় ১১:০৬:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

 

রবিবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার বটতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থীরা।

 

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই কবরে, মুজিববাদী সরকারে’, ‘মুজিববাদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘এক দুই তিন চার, ফারুকী তুই গদি ছাড়’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

 

সমাবেশের বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সমন্বয়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, বিগত সরকার মুজিববাদকে পুঁজি করে একটি ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি এবং টুঙ্গিপাড়ার মাজার। গণঅভ্যুত্থানের পর মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী ৩২ নম্বর বাড়ি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা আমাদের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমরা মনে করি, স্বাধীনতার পর সেই ভেঙে দেওয়া বাড়ি রেখে দেওয়া উচিত, যেন তা ফ্যাসিস্ট শাসন ভেঙে দেওয়ার প্রতীক হয়ে থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, মুজিববাদের প্রতি সহানুভূতিশীল কারও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো অধিকার নেই। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ছাত্রসমাজের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। যদি এই সরকারে মুজিববাদী কোনো উপাদান থাকে, তবে তাদের সরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একই রকম দৃঢ় নেতৃত্ব দেবে।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, তিন মাস আগে আমরা হাজারো ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন লক্ষ্য করছি এই সরকারও ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। যারা আমাদের আহত ও নিহত ভাইদের হত্যা করেছিল, তাদের বিচার এখনও হয়নি। এর বদলে তারা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছ।

 

অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়ে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছিল। ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে, ছাত্রসমাজ আপনাদের সেই ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতেও পিছপা হবে না।