সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা এলাকায় রাজশাহীর পদ্মা নদীতে চলছে মা ইলিশ শিকার। শুধু এই এলাকায় নয়, পদ্মার উজানের গোদাগাড়ী থেকে ভাটি রাজশাহী হয়ে বাঘা পর্যন্ত এলাকাজুড়ে পদ্মায় চলছে মা ইলিশ শিকার। প্রশাসন দায়সারা ভাবে নিষেধাজ্ঞার কথা প্রচার করলেও নদীতে নেই কার্যকর পদক্ষেপ বা অভিযান। ফলে বেপরোয়া ভাবে পদ্মায় চলছে মা ইলিশ নিধন কার্য্যক্রম।
সরকার গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সরকার ইলিশ ধরা ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু সরকারী সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে নদীতে চলছে মাছ আহরন ও বিক্রি।এছাড়া বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় ফেরি করে চলছে ইলিশ বিক্রি।
অভিযোগ রয়েছে, মৎস্য কর্মকর্তারা মানুষ দেখানো ঢাকঢোল পিটিয়ে ইলিশ শিকার না করতে প্রচারণা চালাচ্ছে; কিন্তু নেই কার্যকর অভিযান। মাঝে মাঝে মৎস্য অফিসের লোকেরা নদীর কিনারে নৌকায় ডিজিটাল ব্যানার ঝুলিয়ে অভিযান চালালেও বন্ধ হচ্ছে না মা ইলিশ নিধন কার্যক্রম। আর এতে করে মৎস্য কর্মকর্তাদের অভিযান এখন মানুষ দেখানো অভিযানে পরিণত হচ্ছে।
সরজমিন উপজেলার ইউসুফপুর, টাঙ্গন, চারঘাট পিরোজপুর, গোপালপুর, রাওথা ও বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ ও আলাইপুরে পদ্মায় চলছে অবাধে মৎস্য শিকার। এসব এলাকার পদ্মায় দিন-রাত সমান তালেই চলছে মা ইলিশ নিধনের কাজ।
চারঘাটের মীরগঞ্জ এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, দিনে-রাতে সমান তালেই জেলেরা বেপরোয়া ভাবে শিকার করছে মা ইলিশ। জেলেদের জালে যেসব মাছ ধরা পড়ছে সেসব মাছের পেটে রয়েছে অধিক ডিম ও ঝাটকা মাছ। ফলে সরকারের নেয়া উদ্যোগ এখন ভেস্তে যেতে বসেছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন মোটরসাইকেলযোগে ছুটছে পদ্মার ধারে ইলিশ কিনতে। কিছু ইলিশ স্থানীয়ভাবে বিক্রি হলেও অধিকাংশই যাচ্ছে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়।
জানা গেছে, ছোট ছোট জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাঝারি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় এবং ১ কেজি ওজনের ডিমওয়ালা মা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে সাড়ে ১৮০০ টাকায়, আর একজির উপরের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা দরে। তবে, প্রতিটি ইলিশ মাছের পেটে রয়েছে ডিম।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লাহ মোল্লাহ বলেন, মৎস্য রক্ষায় আমরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। গত কয়েক দিনের অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইলিশ মাছ আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে নিষিদ্ধ জাল। তার পরেও কিছু অসাধূ জেলে ইলিশ মাছ ধরছে। তবে দেশী জেলেদের থেকে বেপরোয়া ভারতীয় জেলেরা।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এছাড়া, জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে।