শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ রেলওয়ে স্টেশনটি ময়মনসিংহের গফরগাঁও, পাগলা থানা এবং গাজীপুরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সীমান্ত ঘেঁষা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হিসেবে বিবেচিত। প্রায় পাঁচটি ইউনিয়নের ১২ থেকে ১৪ লক্ষ জনসাধারণের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি। যদিও প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১০০০ লোক এই স্টেশনে যাত্রা প্রত্যাশায় আসেন, তবে স্টেশন থাকা সত্ত্বেও এখানে কোনো ট্রেন থামে না। ফলে এই অঞ্চলের মানুষকে সড়ক পথে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, কারণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ।
এই সমস্যার সমাধানে, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে আসছেন।
এই দাবিকে সামনে রেখে কাওরাইদে ছাত্র-জনতা ঐক্যপরিষদের উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন আহ্বায়ক আফজাল হোসেন মন্ডল এবং যুগ্ম আহ্বায়ক আফতাব উদ্দিন আতা। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন এমদাদ হোসেন মন্ডল, মাজেদুল হক চান মিয়া, খায়রুল প্রধান, আলতাফ হোসেন মন্ডল, আব্দুল্লাহ ফকির, মমিন খান এবং এ্যাডভোকেট মাসুদ করিম উজ্জ্বল,আমান উল্লাহ আমান, রিয়াদ মন্ডল, ফাহাদ মন্ডলসহ আরো অনেকেই।
মানববন্ধনে বক্তারা স্পষ্ট করে বলেন, কাওরাইদ রেলওয়ে স্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি শুধুমাত্র এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা নয়, এটি তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা হতে পারে। স্টেশনে ট্রেন না থামায় এখানকার মানুষকে বিকল্প রাস্তায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এদিকে, কাওরাইদ রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী স্টেশন মাস্টার জাফর আহমেদ জানান, এলাকার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছেন। ইতোমধ্যে দু’দিনের জন্য সাময়িকভাবে যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসী স্থায়ী সমাধানের জন্য দাবি জানাচ্ছে।মানববন্ধনে নেতৃত্বদানকারী আফজাল হোসেন মন্ডল বলেন, “আমরা অস্থায়ী ব্যবস্থা চাই না। আমরা চাই বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রুটিন অনুযায়ী যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি কাওরাইদ স্টেশনে স্থায়ীভাবে নিশ্চিত করুক।” এ অঞ্চলের সাধারণ জনগণের এই দাবির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দ্রুত স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস না আসলে, ভবিষ্যতে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন বলে জানান।এতদিন পর, জনগণের চাপে সাময়িক যাত্রাবিরতির সিদ্ধান্ত এলেও, এলাকাবাসীর আশা বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কাওরাইদ স্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি স্থায়ীভাবে চালু করে তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করবে।