ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুনভাবে সংযুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের অন্তর্গত দক্ষিণক্ষান ও উত্তরখানের প্রধান সড়কের চলমান কাজ আগামী ডিসেম্বর মাসে পুরোপুরি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল হাসান এনডিসি।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর ২০২৪) বিকালে রাজধানীর দক্ষিণখানে চলমান উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
দক্ষিণখান এলাকায় চলমান রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি’র প্রশাসক এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শোনেন এবং সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেন।
ডিএনসিসি’র প্রশাসক বলেন, ‘আগামী নভেম্বরের মধ্যে দক্ষিণখান ও উত্তরখানের প্রধান দুটি সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি সম্পন্ন হবে। এই এলাকায় স্থায়ীভাবে টেকসই উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন কাজ চলমান। রাস্তা ও ড্রেনেজের কাজগুলো করতে গিয়ে জনগণের ভোগান্তি হয়েছে। এবছর বর্ষায় সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসেও প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক গতিতে কাজ চালিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। এই এলাকার মানুষের ভোগান্তি লাঘবে কাজের গতি বাড়িয়ে দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করা হবে। এই বিষয়ে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজটি করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসিতে নতুনভাবে সংযুক্ত এই এলাকার সকল নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এটি প্রথম ধাপের প্রকল্প। প্রথম ধাপের প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পরবর্তী ধাপে আবার প্রকল্প নেয়া হবে। চলমান প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ডিএনসিসির পুরনো উন্নত এলাকার এবং দক্ষিণখান ও উত্তরখান এলাকার নাগরিক সেবার কোন পার্থক্য থাকবে না।’
উপস্থিত নগরবাসীর উদ্দেশে ডিএনসিসি প্রশাসক আরও বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এই এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রশস্ত রাস্তা ও ড্রেনেজ নির্মাণের কাজ করছে। স্থায়ীভাবে ব্যাপক কাজ হওয়ায় জনগণের চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমান সরকার আপনাদের দুর্ভোগ লাঘব করে, প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সচেষ্ট। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের উপর এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। আর কিছুদিন ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি। বিরতিহীনভাবে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে। আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই৷ আমাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত কাজের অগ্রগতি মনিটরিং করবে। আপনারা এলাকাবাসীও আমাদের যেকোনো বিষয়ে জানাবেন, পরামর্শ দিবেন। আপনাদের প্রয়োজন ও পরামর্শ অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করা হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি’র প্রশাসক বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র নিয়মিত কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পুরো এলাকাকে ভাগ করে সকালে লার্ভিসাইডিং ও বিকালে ফগিং করা হচ্ছে। মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। পুরো কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করা হচ্ছে। গতবছরের তুলনায় ডিএনসিসি এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম হলেও আমরা চাই একজন মানুষও যেন ডেঙ্গুতে মারা না যায়। এবছর দীর্ঘ সময় বর্ষার বৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। আমরা জনগণকেও সচেতন করছি। কোথাও পানি জমে যেন লার্ভা জন্মাতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ডেঙ্গু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মোঃ মঈন উদ্দিন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শরীফ উদ্দীন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেনেজ সার্কেল) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ছাদেকুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মোঃ আল মাসুদ প্রমুখ।