বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারকে সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে মিয়া গোলাম পরওয়ার এই রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অসংগতি রয়েছে, তা পুনঃগঠনে সময়ের প্রয়োজন অসংগতি দূর করতে যতদিন দরকার জামায়াত সরকারকে সহায়তা করবে ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাগেরহাট জেলা শাখার উদ্যোগে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও শহীদ পরিবারে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠান আজ শনিবার বিকাল ৩ টায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। শহীদদের জন্য দোয়া পরিবারকে সান্তনা দিয়ে গোলাম পরওয়াল বলেন, ছাত্র জনতা দীর্ঘ স্বৈরশাসনের পতনের জন্য যে আন্দোলনের বীন বাজিয়ে ছিল সেই আন্দোলনে শরিক হয়ে এদেশের ১০০০ ছাত্র-জনতা শাহাদাত বরণ করেছে। জীবন-মৃত্যুর মালিক একমাত্র সৃষ্টি কর্তা আল্লাহই। যারা দেশের প্রয়োজনে, স্বৈরশাসক উৎখাতের জন্য জীবন দিয়ে ইমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়েছে। তাদেরকে যুগ যুগ ধরে এদেশের মানুষ স্মরণ করবে। হকের জন্য তারা জীবন দিয়েছে। তাদের কে কেউ মৃত্যু বলিও না।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, রক্তের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি সেই বাংলাদেশে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দৃঢ প্রতিজ্ঞ। নতুন রাষ্ট্র নির্মানে এই সরকারকে সহযোগীতা করার অঙ্গীকার করেছে জামায়াতে ইসলামী। এই রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অসংগতি রয়েছে তা পুনঃগঠনে সময়ের প্রয়োজন। তাই জামায়াতে ইসলামী যতটুকু সময় প্রয়োজন এই সরকারকে সহযোগীতা করবে। সকল অসংগতি গুলো দূর হওয়ার পর একটি অবাধ ও সুষ্ঠ, গ্রহন যোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করে। যার ভোট সে দিবে। এতে কেই বাঁধা হতে পারবে না। এই ভোটেরে মাঠ সৃষ্টি করতে যত অসংগতি আছে তা দূর করার জন্য এই সরকারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহয়োগীতা করবে।
এই সরকার যাতে স্থায়ীত্ব পেতে না পারে সে জন্য চক্রান্ত চলেছে। মিলিটারী ক্যু, জুড়িশিয়ালী ক্যু শুধু নয় নতুন নতুন চক্রান্ত করে এই সরকারকে হটাচ্ছে চাচ্ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধোয়া তুলেছিল জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে। কিন্তু সকল চক্রান্ত নস্যাত করেছে জামায়াত শিবির। বাংলাদেশের মন্দিরে মন্দিরে জামায়াত শিবির পাহারা দিয়েছে। সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশী। হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রীষ্টান, মুসলমান সকলের এই দেশ। বাংলাদেশে সমান অধিকার নিয়ে বসবাসের অধিকার সবার আছে। মূলত হিন্দুদের জমি দখল, মন্দির ভাংচুর, নির্যাতনের যত ঘটনা সবিই আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ ঘটিয়েছে। মূলতঃ এরাই সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধোয়া তুলে সেকুলারদের নিকট ইসলামকে প্রশ্ন বিদ্ধ করতে চেয়েছিল। তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবশিত হয়েছে। তাই তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপন দেওয়ার ৪ দিনের মধ্যে সমূলে পলায়ন করেছে।
বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রিয় মজলিশের সূরা সদস্য মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দোয়ার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রিয় কর্মপরিষদ সদস্য, খুলনা মহানগরীর সাবেক আমীর ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাও. আবুল কালাম আজাদ, খুলনা মহানগরী আমীর, সাবেক কাব সদস্য ও কেন্দ্রিয় শূরা সদস্য অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান,বাগেরহাটের সাবেক জেলা আমীর ও খুলনা অঞ্চল টিমের সদস্য অধ্যক্ষ মাও. মশিউর রহমান খাঁন, জেলা নায়েবে আমীর, কেন্দ্রিয় মজলিশে শূরার সদস্য ও বাগেরহাট -৩ এর সংসদ সদস্য প্রার্থী এ্যাড. মাও. শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, জেলা সেক্রেটারী ও সাবেক ছাত্র নেতা শেখ মোহাম্মদ ইউনুস আলী, জেলা সহকারী সেক্রেটারী ও সাবেক ছাত্র নেতা অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন, মিজানুর রহমান মল্লিক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও বাগেরহাট-৪ আসনের এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল আলিম, যুব বিভাগ সভাপতি ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জরুল হক রাহাদ, ইসলামী ছাত্রশিবিরের বাগেরহাট জেলা সভাপতি নাজমুল হাসান সাইফ, সাবেক কাব সদস্য শেখ এনামুল কবির, বাগেরহাট পৌরসভা আমীর এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ ও বাগেরহাট সদর উপজেলা আমীর ডা. ফেরদৌস আলী প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, এই ভাংগা-চুরা দেশে আজ গড়ব আমরা নতুন তাজমহল। আমাদের দামাল ছেলেরা তাদের বুকের রক্ত দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশে গড়ে দিয়েছে। তা ধরে রাখতে আমারে অনেক ত্যাগ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাগেরহাট জেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৫ শহীদ পরিবারের প্রত্যেক অভিভাবককে দুই লক্ষ করে টাকা প্রদান করেন।