ভিক্ষুক, পথচারীসহ ক্ষুধার্ত, মানুষকে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার তরী রেস্টুরেন্ট। বিনা পয়সায় খাবার পেয়ে খুশি গরিব অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষজন। এদিকে, হোটেলটির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজারের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত তরী চাইনিজ ও বাংলা রেস্টুরেন্ট।
প্রতিদিনই গরিব, অসহায়, ক্ষুধার্ত মানুষরা হোটেলটিতে বসে বিনা পয়সায় খাবার খান।
এছাড়া প্রতি বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ওই হোটেল মালিক সাদ্দাম হোসেন অনন্ত প্রায় ২০০ মানুষকে খাবার খাওয়ান। খাবারের তালিকায় থাকে সাদা ভাত, গরুর মাংস, মুরগির মাংস, ছোট মাছ, সবজি, ডাল এবং মাঝেমধ্যে খিচুড়িও থাকে। ব্যবসার পাশাপাশি অনাহারী মানুষের মুখে খাবার তুলে দিয়ে নিজের শান্তি খুঁজে পান। প্রায় ৩ বছর ধরে এই মানবিক কাজটি করছেন সাদ্দাম হোসেন অনন্ত।
খাবার খেতে আসা বৃদ্ধ ফজুল করিম বলেন, আমার সন্তান নাইগো বাবা। এর লাইগ্যা আমারে কে খাওয়াবো, আর কেডা কিতা করবো? এর লাইগ্যা বাধ্য ওয়ে এই বয়সে মাইনসের কাছে আত পাইত্তা নিজের লাইগ্যা খাওন জোগাড় করি। আমার বাড়ি মমিসিনের ভালহায় গ্রেরামে ভিত্তে। পত্তেকদিনের মতো সহালে পেটের দায়ে বাড়ি থেইক্যা বেড় ওয়ে আইছি।
সহাল গড়িয়ে দুহুর ঐয়া গেছে, ক্ষিদা লাগছে। একজনের কাছে হুনছি এ হোটেলে ফ্রি ফ্রি, টেহা পয়সা ছরা খাওন খাওয়ায়। এর লাইগ্যা খাওন খাইতে আইছি। হোটেলে আওয়ার ঢোহা মাত্র ক্ষিদা লাগছে হুনে চেয়ারে বয়া খাওন দিল। এরপর থেইক্যা এ হোডেলে আইলে খাওন লইয়া চিন্তা করুন লাগেনা। খায়া যাওয়ার সময় টেহাও দিয়াদে আমগো।
ভালুকা থেকে বৃদ্ধা আনুয়ারা খতুন বলেন, সারাদিন ভিক্ষা করার পর দুপুরে খাবার খেতে আসলে আমাদের পেট ভরে খাবার খেতে দেয়। তাও আবার গরু ও মুরগির মাংস দিয়ে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি এই হোটেল মালিকের জন্য।
বৃদ্ধা রমিজা বেগম বলেন, ‘আমি গরিব। স্বামী-সন্তান কেউ এই দুনিয়াতে নেই। তাই আমি ভিক্ষা করে খাই। পেটে ক্ষুধা লাগলে আমি এই হোটেলে চলে আসি। এখানে আমাদেরকে পেট ভরে খাবার দেয়, কোনও পয়সা নেয় না।
ভিক্ষুক আমেনা খাতুন দুপুরে খেতে এসে বলেন, ‘পেট ভরে খাইছি, এইনের খাওন খুব স্বাদ লাগে। আমরা তার লাইগ্যা হাত তুইল্লা দোয়া করি।