‘নির্বাচন আসলে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমেই উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, নির্বাচন আসলে যারা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, সেই তারেক জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের যদি আজকের নৌকা প্রতীকের জনসভার এই জনসুমদ্র দেখানো যেত, তাহলে তারা লজ্জা পেত। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পক্ষে হাজার হাজার মানুষ এসে জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করেছে। নির্বাচন আসলে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমেই উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে।
আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য প্রার্থী মুঃ জিয়াউর রহমানকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) বিকেলে রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যারা বলছে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে না, তাদের মুখে ছাই দিয়ে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবারো সরকার গঠন করবে। আমরা হাসি মুখে ভোট কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে যাব ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমানের কুলাঙ্গারপুত্র তারেক জিয়া মুচলেকা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে গেছিল। ওয়াদা ভঙ্গ করে সে রাজনীতি করছে। লন্ডনে বসে কলকাঠি নেড়ে ২০১৪ /২০১৮ সালে আগুন সন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সে কিনা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। ছাগলে কিনা খায়, পাগলে কিনা বলে। নিজ দলের কয়েকজন চামচা ছাড়া তারেক জিয়ার কথা শোনার লোক দেশে নাই।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, নৌকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীক, স্বাধীনতার প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক। নৌকায় ভোট দিয়ে আমরা কোথা থেকে কোথায় পৌছে গেছি। সারাদেশে উন্নয়ন আজ দৃশ্যমান। আজ টেলিভিশন, পত্রিকা দেখলেই এসব উন্নয়ন দেখতে পাওয়া যায়। যারা এসব উন্নয়ন চোখে দেখতে পায় না, জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করে তারা মুর্খের স্বর্গে বাস করছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চল সেজেছে, ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সেই তুলনায় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ পিছিয়ে আছে। এবার নির্বাচনের পর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগেও ব্যাপক উন্নয়ন হবে। পুরো দেশকে জননেত্রী শেখ হাসিনা মায়ের মতো করে দেখেন।
রাসিক মেয়র লিটন আরো বলেন, ভোলাহাটে রেশম শিল্পের রমরমা অবস্থা ছিল।২০০৫ সালে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক এর মাধ্যমে কারাখানা বন্ধ করে দেয় বিএনপি সরকার। আমরা নতুন করে রেশম শিল্পকে জাগিয়ে তুলতে চাই। নামমাত্র জামানত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দিয়ে তুত চাষে উৎসাহিত করা হবে। আপনাদের এলাকার উন্নয়ন ও প্রাণের চাওয়া পূরণে আমি আপনাদের পাশে থাকব। আগামী ৫ বছরে এই অঞ্চলে অনেক উন্নয়ন হবে। এজন্য ৭ জানুয়ারি আমার ও আপনার প্রিয় মানুষ মুঃ জিয়াউর রহমানকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত মেয়াদে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে মানুষের জীবন বাচাতে সরকারে বেশি কাজ করতে হয়েছে। সরকার বিনামূল্যে চার ডোজ করে করোনার টিকা দিয়েছে। বিএনপি নেতারাও জীবন বাঁচাতে টিকা নিয়েছে। এবার নির্বাচনের পর দেশে আরো ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
নির্বাচন বাধা সৃষ্টিকারীদের প্রতিহতের আহবান জানিয়ে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ৭ জানুয়ারি যদি কেউ বাধা সৃষ্টি করে, ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়, তাদেরকে সাহসের সাথে প্রতিহত করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করতে বিভিন্ন ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদি আরো অনেক ভাতা দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশ বেশি ধনী না হলেও সরকারের সদিচ্ছা থাকায় এসব ভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে। দেশের মানুষের জন্য দরদ থাকলে, মানুষকে ভালোবাসলে সব করা সম্ভব-এটি প্রমাণ করেছেন নেত্রী শেখ হাসিনা।
নির্বাচনী জনসভার প্রধান বক্তা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের সংসদ প্রার্থী মুঃ জিয়াউর রহমান বলেন, নৌকা হচ্ছে উন্নয়নের প্রতীক, সমৃদ্ধির প্রতীক। নৌকা হচ্ছে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক। তাই জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দিন। আসুন আমরা একটা সুন্দর সকালের জন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। নৌকায় ভোট দিলে রাস্তাঘাট হবে, বেকার ছেলে-মেয়েদের কর্মসংস্থান হবে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হুমায়ুন রেজার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন গোমস্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজাহার আলী মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন মন্ডল, নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, ভোলাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল গাফফার মুকুল, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আলী শাহ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য সাবিহা শবনম কেয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুজ্জামান আশিক। সঞ্চালনা করেন রহনপুর পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান খান।