ইকলী সাউথ এশিয়া কর্তৃক Urban LEDS-II প্রকল্পের আওতায় প্রণীত রাজশাহী মহানগরীর জন্য ‘জলবায়ু সহনশীল নগর কর্মপরিকল্পনা-২০২১’ হস্তান্তর এবং বাস্তবায়িত কাজের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবন সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভা কক্ষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন স্থায়ী কমিটির ২৬তম সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এটি হস্তান্তর করা হয়। সভায় কর্মপরিকল্পনা হস্তান্তরের পাশাপাশি গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ ইনভেন্টরি, জলবায়ু ঝুঁকি এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন শীর্ষক প্রতিবেদন, নগর ভবনের এনার্জি অডিট শীর্ষক প্রতিবেদন, রাজশাহী শহরের গাছের সচিত্র হ্যান্ডবুক, রাজশাহী শহরের প্রাকৃতিক সম্পদের মানচিত্র, রাজশাহী শহরের গাছের অবস্থান চিহ্নিতকরণ মানচিত্র এবং রাজশাহী শহরে সবুজায়ন এবং জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধির কেস স্টাডি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল হামিদ সরকার টেকন। বক্তব্য দেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ.বি.এম. শরীফ উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আহমেদ আল মঈন ও উন্নয়ন পরিবেশ কর্মকর্তা সৈয়দ মাহামুদ উল ইসলাম। সভায় ইকলি সাউথ এশিয়া, বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মোঃ জুবায়ের রশীদ, প্রকল্প কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল কাফি, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলী, ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুস সোবাহান, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নাদিরা বেগম, সচিব মশিউর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুর ইসলাম তুষার, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মোঃ নূর-ঈ-সাঈদ, বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, নগর পরিকল্পনাবিদ বনি আহসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তা সৈয়দ জুবায়ের হোসেন মুন, সহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান সুইট প্রমুখ।
সভায় ইকলীর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মোঃ জুবায়ের রশীদ কর্মপরিকল্পনার সুফল এবং এর বাস্তবায়ন উপযোগিতা তুলে ধরেন। তিনি জানান, নগর কর্মপরিকল্পনাটিতে ১০ টি বিশেষ বিভাগে ১৮ প্রকার কর্মসূচি উল্লেখ করা হয়েছে, যা রাজশাহী নগরীকে জলবায়ু সহনশীল, কার্বন মুক্ত এবং সর্বোপরি একটি সবুজ এবং পরিবেশবান্ধব নগরী হিসেবে গড়ে তুলবে। এই কর্মপরিকল্পনাটিতে সেক্টরভিত্তিক (বাণিজ্যিক, আবাসিক, বর্জ্য, যানবাহন, উৎপাদন শিল্প এবং নির্মাণ) গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণের কারণ, পরিমাণ এবং ভবিষ্যৎ কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ যথাযথভাবে উল্লেখ করা আছে যা নীতিনির্ধারকদের উল্লেখিত সেক্টর সমূহের জন্য নীতিমালা এবং প্রকল্প গ্রহণে সহায়তা করবে। কর্মপরিকল্পনাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন নাগরিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যেমন কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন, পরিবহন ব্যবস্থা, স্ট্রীট লাইটিং, নিষ্কাশন ব্যবস্থা, বায়ুর মান উন্নয়ন, সুপেয় পানি সরবরাহ, শহরের জীববৈচিত্র্য, সবুজ স্থান এবং গণপরিসরের সুযোগ বৃদ্ধি করা প্রভৃতি ক্ষেত্রে জলবায়ু বান্ধব প্রকল্প গ্রহণের জন্য বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ চাহিদা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজতর হবে। এটি রাজশাহী নগরবাসী এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের জন্য একটি তথ্যবহুল এবং সময়পোযোগী গাইডলাইন হিসেবে গণ্য হবে। সর্বোপরি এই পরিকল্পনাটি বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর এবং জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এবং ইকলী – লোকাল গভর্নমেন্টস ফর সাসটেইনেবিলিটি, সাউথ এশিয়া (ইকলী সাউথ এশিয়া) যৌথভাবে রাজশাহী নগরীর জন্য একটি ‘জলবায়ু সহনশীল নগর কর্মপরিকল্পনা-২০২১’ প্রণয়ন করেছে। ইউরোপিয়ান কমিশন-এর অর্থায়নে পরিচালিত Accelerating climate action through the Promotion of Urban Low Emission Development Strategies (Urban LEDS, Phase II) প্রকল্পের আওতায় এই পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ রাসিক এবং ইকলী সাউথ এশিয়া এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল।