পানাম নগর নারায়ণগঞ্জ জেলার, সোনারগাঁতে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর। বড় নগর, খাস নগর, পানাম নগর -প্রাচীন সোনারগাঁর এই তিন নগরের মধ্যে পানাম ছিলো সবচেয়ে আকর্ষণীয়।[১] এখানে কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। সোনারগাঁওয়ে ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই নগরী গড়ে ওঠে।পানাম নগরীর পুরাতাত্ত্বিক ঐতিহ্যবাহী দালান কাশীনাথ ভবন।পানাম নগরে টিকে থাকা ভবনের অবশেষ১৫ শতকে ঈসা খাঁ বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেছিলেন সোনাগাঁওয়ে। পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত থেকে আসতো বিলাতি থান কাপড়, দেশ থেকে যেতো মসলিন। শীতলক্ষ্যা আর মেঘনার ঘাটে প্রতিদিনই ভিড়তো পালতোলা নৌকা। প্রায় ঐ সময়ই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে ইউরোপীয় অনুপ্রেরণায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যরীতিতে গড়ে উঠে পানাম নগরী। পরবর্তিতে এই পোশাক বাণিজ্যের স্থান দখল করে নেয় নীল বাণিজ্য। ইংরেজরা এখানে বসিয়েছিলেন নীলের বাণিজ্যকেন্দ্র।
ডব্লিউ. ডব্লিউ. হান্টার-এর অভিমত হলো, সুলতানী আমলে পানাম ছিলো সোনারগাঁওয়ের রাজধানী। কিন্তু পানামে, সুলতানী আমলের তেমন কোনো স্থাপত্য নজরে পড়ে না, তাই এই দাবিটির সত্যতা ঠিক প্রমাণিত নয়। এক্ষেত্রে জেম্স টেলর বলেছেন, সোনারগাঁর প্রাচীন শহর ছিলো পানাম। এই তত্ত্বটির সাথে বাস্তবের কোনো বিরোধ নেই। শহরটিতে ঔপনিবেশিক ধাঁচের দোতলা এবং একতলা বাড়ি রয়েছে প্রচুর। যার বেশিরভাগ বাড়িই ঊনবিংশ শতাব্দির (১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দের নামফলক রয়েছে)। মূলত পানাম ছিলো বাংলার সে সময়কার ধনী ব্যবসায়ীদের বসতক্ষেত্র। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ছিলো ঢাকা-কলকাতা জুড়ে। তারাই গড়ে তোলেন এই নগর।
১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে মোঘলদের সোনারগাঁ অধিকারের পর সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানী শহরের সাথে পানাম এলাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়। পানাম পুল (বিলুপ্ত), দুলালপুর পুল ও পানামনগর সেতুর অবস্থান ও তিনদিকের খাল-বেষ্টনী থেকে বোঝা যায় পানাম, সোনারগাঁর একটা উপশহর ছিলো।
বাংলার স্বাধীন রাজা ঈসা খাঁর পদচারণা ছিলো এই নগরীতে। সুলতানী আমল থেকে এখানে বিকশিত ছিলো বাংলার সংস্কৃতি।
ডব্লিউ. ডব্লিউ. হান্টার-এর অভিমত হলো, সুলতানী আমলে পানাম ছিলো সোনারগাঁওয়ের রাজধানী। কিন্তু পানামে, সুলতানী আমলের তেমন কোনো স্থাপত্য নজরে পড়ে না, তাই এই দাবিটির সত্যতা ঠিক প্রমাণিত নয়। এক্ষেত্রে জেম্স টেলর বলেছেন, সোনারগাঁর প্রাচীন শহর ছিলো পানাম। এই তত্ত্বটির সাথে বাস্তবের কোনো বিরোধ নেই। শহরটিতে ঔপনিবেশিক ধাঁচের দোতলা এবং একতলা বাড়ি রয়েছে প্রচুর। যার বেশিরভাগ বাড়িই ঊনবিংশ শতাব্দির (১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দের নামফলক রয়েছে)। মূলত পানাম ছিলো বাংলার সে সময়কার ধনী ব্যবসায়ীদের বসতক্ষেত্র। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ছিলো ঢাকা-কলকাতা জুড়ে। তারাই গড়ে তোলেন এই নগর।
১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে মোঘলদের সোনারগাঁ অধিকারের পর সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানী শহরের সাথে পানাম এলাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়। পানাম পুল (বিলুপ্ত), দুলালপুর পুল ও পানামনগর সেতুর অবস্থান ও তিনদিকের খাল-বেষ্টনী থেকে বোঝা যায় পানাম, সোনারগাঁর একটা উপশহর ছিলো।
বাংলার স্বাধীন রাজা ঈসা খাঁর পদচারণা ছিলো এই নগরীতে। সুলতানী আমল থেকে এখানে বিকশিত ছিলো বাংলার সংস্কৃতি।
মধ্যযুগের সোনারগাঁও বাংলার রাজধানী হওয়ার পর থেকে পানাম নগর ব্যাপক উৎকর্ষ লাভ করে। কিন্তু ব্রিটিশরা বাংলা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে এখানকার সম্ভ্রান্ত মুসলিমরা ব্রিটিশদের সঙ্গে ও সহযোগিতা করায় ব্রিটিশরা এখানকার বাসিন্দাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি কমানোর উদ্যোগ নেই একই সঙ্গে তারা এখানে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের শুধুমাত্র যারা ব্রিটিশদের সঙ্গে সহায়তা করে পুনর্বাসন শুরু করে। ফলে এখানে ক্রমে হিন্দু ব্যবসায়ীর অবস্থান তৈরি হয় একই সঙ্গে অতীতে বসবাসকারী অনেক ব্যবসায়ী যারা ব্রিটিশদের সহায়তা করেনি তারা ক্রমেই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। ফলে পানাম নগরের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভেঙ্গে ফেলা হয় অনেক বাড়িঘর এভাবে পানাম নগরের বিস্তীর্ণ এলাকার ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে পানাম নগর রাস্তার দুই ধারে পুরনো যেসব ভবন দেখা যায় তা মূলত ব্রিটিশদের সহায়তায় গড়ে উঠেছে এবং বিংশ শতাব্দীর হিন্দু উচ্চবর্ণের ব্যবসায়ীদের তৈরি। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর এসব ব্যবসায়ীদের প্রতিপত্তি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়। ফলে ভবন গুলো ক্রমে পরিত্যক্ত হতে থাকে কলে আস্তে আস্তে আশে পাশের লোক দ্বারা দখল হতে থাকে । ২০০৯ সালে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে পানাম নগরী কে সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করা হয়।
সোনারগাঁও পানাম নগরীতে প্রতিবছর এখনো বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা সফরে ছেলেমেয়েরা ভ্রমণে যায়। সরকারের আওতায় দেখভাল করা হলে তার ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে ও আরো সুদর্শন হয়ে উঠবে।