ঢাকা ১১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বঙ্গবন্ধুর ডাকেই বাংলার জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদযাপিত

  • সাইদুল ইসলাম
  • আপডেট সময় ০৮:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২
  • ৪৪৭ বার পড়া হয়েছে

ফাইল ছবি।

নানা আয়োজনে আজ (৭ মার্চ) রাজশাহীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে দশ’টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘৭ মার্চ : স্বাধীনতার জীয়নকাঠি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালেহ মোঃ আশরাফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, ডা. মো. আব্দুল মান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে একটি মানুষও অমনোযোগী ছিল না। ৫১ বছর পরেও সবাই মনযোগের সাথে তাঁর ভাষণ শুনেছেন। তাঁর বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ ব্যাকরণের মত। তিনি বলেন, যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছে, বয়সের ভারে নুয়ে গেছে তাদের যদি ৭ মার্চের ভাষণ শুনানো হয় তারাও উজ্জীবিত হবে। এ ভাষণ যদি রোগীকে প্রেসক্রিপশন হিসেবে তুলে দেওয়া যায় তবে সেটাও হবে পথ্য। তিনি কবির ভাষায় বলেন, ‘‘ তোমরা জানো না ইতিহাস জানে আমার বিনাশ নাই! এই বাংলায় প্রতিটি দিবসে আমি রোজ জন্মাই’’ ।
আলোচনা সভায় বক্তাগণ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। বক্তাগণ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বিশ্বনন্দিত অলিখিত ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়-স্পন্দনে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি জনতার মনের ভাষা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বক্তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দিন স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তোমরা ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ডাকেই বাংলার জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শত্রুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে আনে লাল-সবুজের পতাকা।
তাঁরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বিলাশবহুল গাড়িতে ছিল না, তাঁর রাজনীতি ছিল মাঠে-ঘাটে জনতার সাথে একাত্ম হয়ে। তিনি জনতাকে আগুনের মুখে রেখে পালিয়ে যাননি। তিনি বাংলার মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ে ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সে কারণে বঙ্গবন্ধুর উপর জনগণের বিশ্বাস ছিল অপরিসীম। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ১০ লক্ষ জনতাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমার উপর তোমাদের বিশ্বাস আছে, সবাই একযোগে বলেছিল হ্যাঁ আছে।
সভা শেষে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেয়া হয়।
এদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল দশ’টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে সোয়া দশ’টায় একই স্থানে ‘৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

রামু সেনানিবাসে যথাযথ মর্যাদায় সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৪ পালিত

বঙ্গবন্ধুর ডাকেই বাংলার জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উদযাপিত

আপডেট সময় ০৮:০৮:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০২২

নানা আয়োজনে আজ (৭ মার্চ) রাজশাহীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে দ্বিতীয়বারের মত যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে দশ’টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘৭ মার্চ : স্বাধীনতার জীয়নকাঠি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্ এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালেহ মোঃ আশরাফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, ডা. মো. আব্দুল মান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে একটি মানুষও অমনোযোগী ছিল না। ৫১ বছর পরেও সবাই মনযোগের সাথে তাঁর ভাষণ শুনেছেন। তাঁর বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ ব্যাকরণের মত। তিনি বলেন, যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছে, বয়সের ভারে নুয়ে গেছে তাদের যদি ৭ মার্চের ভাষণ শুনানো হয় তারাও উজ্জীবিত হবে। এ ভাষণ যদি রোগীকে প্রেসক্রিপশন হিসেবে তুলে দেওয়া যায় তবে সেটাও হবে পথ্য। তিনি কবির ভাষায় বলেন, ‘‘ তোমরা জানো না ইতিহাস জানে আমার বিনাশ নাই! এই বাংলায় প্রতিটি দিবসে আমি রোজ জন্মাই’’ ।
আলোচনা সভায় বক্তাগণ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। বক্তাগণ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বিশ্বনন্দিত অলিখিত ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়-স্পন্দনে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি জনতার মনের ভাষা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বক্তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু এ দিন স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তোমরা ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ডাকেই বাংলার জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে উদ্বুদ্ধ বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শত্রুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে আনে লাল-সবুজের পতাকা।
তাঁরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বিলাশবহুল গাড়িতে ছিল না, তাঁর রাজনীতি ছিল মাঠে-ঘাটে জনতার সাথে একাত্ম হয়ে। তিনি জনতাকে আগুনের মুখে রেখে পালিয়ে যাননি। তিনি বাংলার মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ে ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সে কারণে বঙ্গবন্ধুর উপর জনগণের বিশ্বাস ছিল অপরিসীম। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে ১০ লক্ষ জনতাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমার উপর তোমাদের বিশ্বাস আছে, সবাই একযোগে বলেছিল হ্যাঁ আছে।
সভা শেষে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেয়া হয়।
এদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল দশ’টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে সোয়া দশ’টায় একই স্থানে ‘৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়।