২৪ ঘন্টার ব্যবধানে রাজশাহীতে দুই চিকিৎসককে পরিকল্পিত হত্যা ও একটা চিকিৎসককে খূন করার জন্য পথরোধ করে এলোপাতাড়ি দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে।মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেলেও অবস্থা ভালোনয়।
বেছে বেছে চিকিৎসককে হত্যা করায় শংকিত চিকিৎসক সমাজ ও মেডিকেল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহীতে কর্মরত সকল চিকিৎসক সংগঠন,কর্তরত চিকিৎসক , শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে খুনীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছে।
চিকিৎসক গোলাম কাজেম আলী আহমেদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে চিকিৎসকরা। এ সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে ধর্মঘটে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার সকালে এক বিশাল মানববন্ধন থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। রাজশাহী মেডিকেল এসোসিয়েশনের আয়োজনে মেডিকেল কলেজের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে চিকিৎসকরা ছাড়াও রাজশাহী মেডিকের কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।
রাজশাহী মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এবি সিদ্দীকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. নওশার আলী। তিনি বলেন, শান্তির নগরীর রাজশাহীতে হত্যার ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা যারা ডাক্তার আছি চরম আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছি। আমরা আমাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবায় মনোনিবেশ করতে পারছি না।
তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো ডা. কাজেমের খুনিদের সনাক্ত করতে পারে নি। আমরা চাই আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার না হলে ধর্মঘটসহ বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারী দেন তিনি।
উল্লেখ্য গত রোববার রাতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজশাহীতে দুই চিকিৎসক খুনের ঘটনা ঘটে। দু’জনকেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন, রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ গোলাম কাজেম আলী আহমেদ ও নগরীর চন্দ্রিমা থানার কচুয়াতৈল এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলাল।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি কাজেম আলীকে বাসায় ফেরার পথে বর্ণালীর মোড়ে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আর কৃষ্টগঞ্জ বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলীকে নিজের ফার্মেসি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার লাশ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে দুই চিকিৎসকের খূনের পরদিন রাতেই নগরীর ভদ্রা মোড়ে রাজু আহমেদ(৪৫) নামের একটা চিকিৎসকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তের। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার তালাইমারি আমেনা ক্লিনিকের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক চিকিৎসক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়াটারে বসবাস করেন। রাজু নাটোরের নজরুল ইসলামের ছেলে।
রাজশাহীতে এক রাতে দুই চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যার একদিন পর আরেক চিকিৎসকের উপর এ হামলার ঘটনা ঘটল।
বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, ডা. রাজু তালাইমারি আমেনা ক্লিনিকে রোগি দেখেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে চেম্বার থেকে বের হওয়ার পর কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার উপর হামলা করে। এ সময় তারা ডা. রাজুকে কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শারীরিকবাবে জখম করে চলে যায়। পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাতে সাড়ে ১১টার দিকে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখনে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।