রাজশাহীতে এক রাতে অপহরণ করে গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলালকে কুপিয়ে হত্যা ও নিজ চেম্বার থেকে বাড়ী ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞডা. কাজেম আলী নামের অপর এক চিকিৎসককে খুনের ঘটনা ঘটেছে।
গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলালকে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে তার চেম্বার থেকে ফিল্ম স্টাইলে এসে অপহরণ করে নিয়ে গেছে হত্যা করা হয়। অপর দিকে চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞডা. কাজেম আলী রাত পৌনে ১২ টার দিকে নিজ বাসা উপশহরে ফেরার পথে বর্ণালী মোড়ে মোটর সাইকেল গতিরোধ করে একদল দুর্বৃত্তরা তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত্যু ঘোষণা করা হয়।
মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে একই রাতে দুটি হত্যা কান্ডের ঘটনা এবং তাদের ধরতে না পারায় রাজশাহী মহানগরীতে এক রকম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী দুলালকে হত্যা করার তিন ঘণ্টা আগে তাকে অপহরণ করা হয়েছে।রোববার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টায় অপহরণের ঘটনা ঘটলেও রাত ৯টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত গ্রাম্য চিকিৎসকের নাম এরশাদ আলী দুলাল (৪৫)। তিনি নগরীর উপকণ্ঠ কচুয়াতৈল এলাকার শমির উদ্দিনের ছেলে। রোববার রাত নয়টার দিকে নগরীর সিটিহাট এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের বলছে, দুলালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যায় দুলালের এলাকা অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা একটি মাইক্রোবাস নিয়ে এসে চোখ বেধে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এর তিন ঘণ্টা পর সিটিহাট এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপর দিকে, দুর্বৃত্তদের হামলায় ডা. কাজেম আলী আহমেদ নামের একজন চিকিৎসক খুন হয়েছেন। রোববার (২৯ অক্টোবর) রাত পৌনে ১২টার দিকে চেম্বার শেষে বাড়ি ফেরার পথে নগরীর বর্ণালী মোড়ে লক্ষ্মীপুর এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত তার বুকে ছুরিকাঘাত করে। এ সময় স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মুকুল হোসেন সকালে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হাসপাতালে একটি সূত্রের দেওয়া তথ্য মতে, নিহত চিকিৎসক ডা. কাজেম আলী আহমেদ চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে লেখাপড়া শেষ করেছেন। ডা. কাজেম আলী রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। তিনি প্রতিদিনের মতো রোববার লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চেম্বার শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় পথে বর্ণালীর মোড়ে তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে একদল দুর্বৃত্তরা তার বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ মুকুল হোসেন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।