Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
এখনো দেশে আসেনি ১৫ কোটি ডিমের একটিও
ঢাকা ০৮:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনো দেশে আসেনি ১৫ কোটি ডিমের একটিও

ডিমের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে

ডিমের মূল্য বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি তিন দফায় মোট ১৫ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। ডিমের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এই দুই পদক্ষেপ তিন সপ্তাহ আগে নেওয়া হলেও অদ্যাবধি তা বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে দুদিনের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ফের ১৬৫ টাকায় বিক্রি করছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অসাধু বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করে ভোক্তার পকেট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু সরকারের তদারকি সংস্থা একরকম নির্বিকার।

কয়েক মাস ধরে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ডিমের মূল্য নিয়ে কারসাজি করছে। সম্প্রতি সেই চক্র অতি মুনাফা করতে প্রতি পিস ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১৫-১৬ টাকায় নিয়ে ঠেকায়। ফলে মূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাজারে সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়।

দ্বিতীয় দফায় ২১ সেপ্টেম্বর ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। তৃতীয় দফায় রোববার নতুন করে আরও ৫ প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে তিন দফায় ১৫ প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সেই ডিম এখনো দেশের বাজারে আসেনি। তাই অসাধুরা সরকারের আদেশের কোনো তোয়াক্তা করছে না। বিক্রি করছে বাড়তি দরে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে ১৫ কোটি ডিম দিয়ে ৪ দিনের মতো চলতে পারে। এই ডিমের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম হলেও আমদানি করা হলে ডিম ব্যবসায়ীদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি হবে-এমন চিন্তা থেকেই এই ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ডিম আমদানিতে বিলম্ব হওয়ার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেছে।

প্রথম দফায় অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান টাইগার ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান বলেন, এলসি খোলা নিয়ে একটু ঝামেলা ছিল। দাই এলসি খোলার প্রক্রিয়া শেষ করতে দেরি হয়েছে। এখন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ডিম পাঠানোর ওপর নির্ভর করছে কখন তা দেশে আসবে। তবে চলতি সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে ভারতীয় ডিম দেশে আসতে পারে।

এদিকে সোমবার খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা, যা দুদিন আগেও ১৫০ টাকা ছিল। ফলে প্রতি ডজন ডিম ১৬৫ টাকা বিক্রি হলে, হালি হিসাবে দাম হয় ৫৫ টাকা। আর প্রতি পিস কিনতে ক্রেতারা ১৪ টাকা গুনতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করা আছে। সে ক্ষেত্রে ক্রেতার পণ্যটি কিনতে পিসপ্রতি ২ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।

রাজধানীর তেজগাঁও ডিম আড়তের বিক্রেতারা জানান, ডিমের দাম নিয়ে কারা কারসাজি করে তা সবাই জানে। করপোরেট ব্যবসায়ীরা প্রতি রাতে ডিমের দাম কী হবে তা এসএমএসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেয়। ফলে সারা দেশে সেই দামে বিক্রি হয়। এই তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্টরাও জানে কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে আমদানি করা ডিম দেশে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে।

জানতে চাইলে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ডিম আমদানির হাঁকডাক দিলেই হবে না। যথাসময় সেই ডিম দেশে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে। পাশাপাশি ডিমের দাম ভোক্তা সহনীয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য বেঁধে দেওয়া হলো। কিন্তু তদারকি সংস্থার দুর্বলতার কারণে সেই দাম এখনো কার্যকর করা যায়নি। ফলে ক্রেতারা এখনো অসহায়। অসাধুদের কাছে তারা জিম্মি। এই জিম্মিদশা থেকে যারা বের করে আনবে তারা যেন নির্বিকার।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাজারে আমদানি করা ডিম আসেনি। প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে ডিমের। কিন্তু এই ১০-১৫ কোটি ডিম দিয়ে তো চাহিদা মিটবে না। তারপরও সংখ্যা যাই হোক আমদানি হলে কিছুটা প্রভাব পড়বে বাজারে।

এদিকে আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরও আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি নিতে হয়। ওই আইপির বিপরীতে আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খোলে ব্যাংকগুলো। এতদিন আইপি জটিলতায় অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছিল না। গত সপ্তাহের শেষে ১০ প্রতিষ্ঠানকে আইপি দিয়েছে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে শুরু করেছে। আমদানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ভারত থেকে ডিম আমদানি হবে। তবে বাজারে আসতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে।

আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: 24nababani@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালখালী’র লোকমানের বিরুদ্ধে দুদেকে অভিযোগ 

এখনো দেশে আসেনি ১৫ কোটি ডিমের একটিও

আপডেট সময় ০৩:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

ডিমের মূল্য বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি তিন দফায় মোট ১৫ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। ডিমের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে এই দুই পদক্ষেপ তিন সপ্তাহ আগে নেওয়া হলেও অদ্যাবধি তা বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে দুদিনের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ফের ১৬৫ টাকায় বিক্রি করছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অসাধু বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফা করে ভোক্তার পকেট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু সরকারের তদারকি সংস্থা একরকম নির্বিকার।

কয়েক মাস ধরে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ডিমের মূল্য নিয়ে কারসাজি করছে। সম্প্রতি সেই চক্র অতি মুনাফা করতে প্রতি পিস ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১৫-১৬ টাকায় নিয়ে ঠেকায়। ফলে মূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাজারে সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়।

দ্বিতীয় দফায় ২১ সেপ্টেম্বর ৬টি প্রতিষ্ঠানকে ৬ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। তৃতীয় দফায় রোববার নতুন করে আরও ৫ প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে তিন দফায় ১৫ প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সেই ডিম এখনো দেশের বাজারে আসেনি। তাই অসাধুরা সরকারের আদেশের কোনো তোয়াক্তা করছে না। বিক্রি করছে বাড়তি দরে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিদিন ৪ কোটি ডিমের প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে ১৫ কোটি ডিম দিয়ে ৪ দিনের মতো চলতে পারে। এই ডিমের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম হলেও আমদানি করা হলে ডিম ব্যবসায়ীদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টি হবে-এমন চিন্তা থেকেই এই ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ডিম আমদানিতে বিলম্ব হওয়ার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেছে।

প্রথম দফায় অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান টাইগার ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান বলেন, এলসি খোলা নিয়ে একটু ঝামেলা ছিল। দাই এলসি খোলার প্রক্রিয়া শেষ করতে দেরি হয়েছে। এখন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ডিম পাঠানোর ওপর নির্ভর করছে কখন তা দেশে আসবে। তবে চলতি সপ্তাহে না হলেও আগামী সপ্তাহে ভারতীয় ডিম দেশে আসতে পারে।

এদিকে সোমবার খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা, যা দুদিন আগেও ১৫০ টাকা ছিল। ফলে প্রতি ডজন ডিম ১৬৫ টাকা বিক্রি হলে, হালি হিসাবে দাম হয় ৫৫ টাকা। আর প্রতি পিস কিনতে ক্রেতারা ১৪ টাকা গুনতে হচ্ছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করা আছে। সে ক্ষেত্রে ক্রেতার পণ্যটি কিনতে পিসপ্রতি ২ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।

রাজধানীর তেজগাঁও ডিম আড়তের বিক্রেতারা জানান, ডিমের দাম নিয়ে কারা কারসাজি করে তা সবাই জানে। করপোরেট ব্যবসায়ীরা প্রতি রাতে ডিমের দাম কী হবে তা এসএমএসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেয়। ফলে সারা দেশে সেই দামে বিক্রি হয়। এই তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্টরাও জানে কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে আমদানি করা ডিম দেশে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে।

জানতে চাইলে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ডিম আমদানির হাঁকডাক দিলেই হবে না। যথাসময় সেই ডিম দেশে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে। পাশাপাশি ডিমের দাম ভোক্তা সহনীয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য বেঁধে দেওয়া হলো। কিন্তু তদারকি সংস্থার দুর্বলতার কারণে সেই দাম এখনো কার্যকর করা যায়নি। ফলে ক্রেতারা এখনো অসহায়। অসাধুদের কাছে তারা জিম্মি। এই জিম্মিদশা থেকে যারা বের করে আনবে তারা যেন নির্বিকার।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাজারে আমদানি করা ডিম আসেনি। প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে ডিমের। কিন্তু এই ১০-১৫ কোটি ডিম দিয়ে তো চাহিদা মিটবে না। তারপরও সংখ্যা যাই হোক আমদানি হলে কিছুটা প্রভাব পড়বে বাজারে।

এদিকে আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরও আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি নিতে হয়। ওই আইপির বিপরীতে আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খোলে ব্যাংকগুলো। এতদিন আইপি জটিলতায় অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে পারছিল না। গত সপ্তাহের শেষে ১০ প্রতিষ্ঠানকে আইপি দিয়েছে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ঋণপত্র খুলতে শুরু করেছে। আমদানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহেই ভারত থেকে ডিম আমদানি হবে। তবে বাজারে আসতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে।