Notice: Function _load_textdomain_just_in_time was called incorrectly. Translation loading for the all-in-one-wp-security-and-firewall domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home2/nababani/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114
রাজশাহীতে ভেসে গেছে ৫০০ পুকুর, শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
ঢাকা ১০:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ভেসে গেছে ৫০০ পুকুর, শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

বিলের শতাধিক পুকুর ভেসে গেছে

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কমলাপুর বিলে মোয়াজ্জেম হোসেনের ১২০ বিঘার পুকুর রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ভেসে গেছে তার পুকুরের মাছ। একইভাবে এই বিলের শতাধিক পুকুর ভেসে গেছে।

এদিক, পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে বিলগুলোতে মাছ ধরতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার মানুষ। গোদাগাড়ীর প্রেমতলীর এক ব্যক্তিই ধরেছেন প্রায় ১০ মণ মাছ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলাপুর বিলে মানুষের ঢল দেখা গেছে। শনিবারও সকাল থেকে লোকজনকে মাছ ধরতে দেখা গেছে। ফেসবুকে মাছ ধরার দৃশ্য দেখে সেখানে মাছ কিনতে ভিড় জমান অনেকে। দুদিন ধরে কমলাপুর বিলে রীতিমতো মাছের মেলা বসে।

গোদাগাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরুণ কুমার মণ্ডল বলেন, গোদাগাড়ীর ভূমির গঠন একটু আলাদা। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কমলাপুর ও পলাশবাড়ি এলাকাটা একটু নিচে। চারদিকের পানি এই এলাকা দিয়ে নেমে বারোনই নদীতে গিয়ে পড়ে। ঢলের পানি এই দিক দিয়ে এমনভাবে নেমে এসেছে যে ওই বিলের সব পুকুর ভেসে গেছে। বিলে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বিঘা এলাকায় শতাধিক পুকুর রয়েছে। এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো হিসাব করা হয়নি।

শুক্রবার বিকেলে ওই বিলে দেখা গেছে, হাজার হাজার মানুষ জাল ফেলে মাছ ধরছে। যত মানুষ পানিতে, তত মানুষ বিলের ধারে। কেউ পানিতে নেমে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। কেউ মাছ নিয়ে আসছেন। অনেকে বস্তায় মাছ ভরে টেনে নিয়ে আসছেন। অনেকেই বরফ দিয়ে মাছ প্যাকেটে সংরক্ষণ করছেন। আর সেই সঙ্গে চলছে কেনাবেচার ধুম।

উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের আকবর আলী (৫০) জানান, তিনি ফাঁস জাল দিয়ে প্রায় ১০ মণ মাছ ধরেছেন। তার সঙ্গে তিনজন ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সারা দিনে তিনি এই মাছ ধরেছেন।

ফেসবুকে পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর দেখে তানোরের মুন্ডুমালা এলাকা থেকে শাহ আলী (৪২) যান ওই বিলে মাঝ ধরতে। খেপলা জাল দিয়ে তিনি শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় তিন মণ মাছ ধরেছেন। এছাড়াও কমলাপুর গ্রামের মুকুল হোসেন (৪৫) খেপলা জাল দিয়ে শুক্রবার সারা দিনে ২০ কেজি মাছ ধরেছেন। খেপলা জাল দিয়ে শুক্রবার সারা দিন প্রায় এক মন মাঝ ধরেছেন গোদাগাড়ীর কাজীহাটা গ্রামের পান্না (৫২)।

দেখা গেছে, রাস্তায় সারি সারি মোটরসাইকেল রেখে মানুষ বিলের ধারে গিয়ে মাছ কিনছেন। তিন থেকে চার কেজি ওজনের রুই-কাতলা মাছ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী জানান, ওই বিলে তার ১০০ বিঘার চারটি পুকুর রয়েছে। তার ১৬ বিঘার একটি পুকুর ছাড়া সব মাছ ভেসে গেছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ঢলের পানি এই বিল দিয়ে নেমে যায়। ৪-৫ ফিট ওপর দিয়ে পানি নামছিল। পানির স্রোতের মুখে দাঁড়ানোর কোনো উপায় ছিল না। এই জন্য তিনি মাছের আশা করে বিলে লোক নামাতে যাননি। এই বিলের প্রায় ১০০ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে বলে তার ধারণা।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর ও বাগমারা উপজেলার ৫০০ পুকুর ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ী এলাকায় প্রায় ২০০, তানোর উপজেলায় ১৫০ এবং বাগমারা এলাকায় ১৬০টি। এছাড়াও যেসব বিলের নিম্ন এলাকায় পুকুর রয়েছে সেগুলোও ভেসে গেছে। তবে কতগুলো পুকুর ভেসে গেছে এবং সেখানে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপনের কাজ চলছে। রোববার বিকেলে চুড়ান্ত তথ্য জানানো যাবে বলে জানান এই মৎস কর্মকর্তা।

আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: 24nababani@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীর মাধবদীতে আবাসিক হোটেলে আবারও চলছে অ’বৈধ কার্যকলাপ।

রাজশাহীতে ভেসে গেছে ৫০০ পুকুর, শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

আপডেট সময় ০৫:২৭:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কমলাপুর বিলে মোয়াজ্জেম হোসেনের ১২০ বিঘার পুকুর রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ভেসে গেছে তার পুকুরের মাছ। একইভাবে এই বিলের শতাধিক পুকুর ভেসে গেছে।

এদিক, পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর পেয়ে বিলগুলোতে মাছ ধরতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার মানুষ। গোদাগাড়ীর প্রেমতলীর এক ব্যক্তিই ধরেছেন প্রায় ১০ মণ মাছ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলাপুর বিলে মানুষের ঢল দেখা গেছে। শনিবারও সকাল থেকে লোকজনকে মাছ ধরতে দেখা গেছে। ফেসবুকে মাছ ধরার দৃশ্য দেখে সেখানে মাছ কিনতে ভিড় জমান অনেকে। দুদিন ধরে কমলাপুর বিলে রীতিমতো মাছের মেলা বসে।

গোদাগাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বরুণ কুমার মণ্ডল বলেন, গোদাগাড়ীর ভূমির গঠন একটু আলাদা। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু। কমলাপুর ও পলাশবাড়ি এলাকাটা একটু নিচে। চারদিকের পানি এই এলাকা দিয়ে নেমে বারোনই নদীতে গিয়ে পড়ে। ঢলের পানি এই দিক দিয়ে এমনভাবে নেমে এসেছে যে ওই বিলের সব পুকুর ভেসে গেছে। বিলে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বিঘা এলাকায় শতাধিক পুকুর রয়েছে। এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো হিসাব করা হয়নি।

শুক্রবার বিকেলে ওই বিলে দেখা গেছে, হাজার হাজার মানুষ জাল ফেলে মাছ ধরছে। যত মানুষ পানিতে, তত মানুষ বিলের ধারে। কেউ পানিতে নেমে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। কেউ মাছ নিয়ে আসছেন। অনেকে বস্তায় মাছ ভরে টেনে নিয়ে আসছেন। অনেকেই বরফ দিয়ে মাছ প্যাকেটে সংরক্ষণ করছেন। আর সেই সঙ্গে চলছে কেনাবেচার ধুম।

উপজেলার প্রেমতলী গ্রামের আকবর আলী (৫০) জানান, তিনি ফাঁস জাল দিয়ে প্রায় ১০ মণ মাছ ধরেছেন। তার সঙ্গে তিনজন ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সারা দিনে তিনি এই মাছ ধরেছেন।

ফেসবুকে পুকুর ভেসে যাওয়ার খবর দেখে তানোরের মুন্ডুমালা এলাকা থেকে শাহ আলী (৪২) যান ওই বিলে মাঝ ধরতে। খেপলা জাল দিয়ে তিনি শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় তিন মণ মাছ ধরেছেন। এছাড়াও কমলাপুর গ্রামের মুকুল হোসেন (৪৫) খেপলা জাল দিয়ে শুক্রবার সারা দিনে ২০ কেজি মাছ ধরেছেন। খেপলা জাল দিয়ে শুক্রবার সারা দিন প্রায় এক মন মাঝ ধরেছেন গোদাগাড়ীর কাজীহাটা গ্রামের পান্না (৫২)।

দেখা গেছে, রাস্তায় সারি সারি মোটরসাইকেল রেখে মানুষ বিলের ধারে গিয়ে মাছ কিনছেন। তিন থেকে চার কেজি ওজনের রুই-কাতলা মাছ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী জানান, ওই বিলে তার ১০০ বিঘার চারটি পুকুর রয়েছে। তার ১৬ বিঘার একটি পুকুর ছাড়া সব মাছ ভেসে গেছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ঢলের পানি এই বিল দিয়ে নেমে যায়। ৪-৫ ফিট ওপর দিয়ে পানি নামছিল। পানির স্রোতের মুখে দাঁড়ানোর কোনো উপায় ছিল না। এই জন্য তিনি মাছের আশা করে বিলে লোক নামাতে যাননি। এই বিলের প্রায় ১০০ কোটি টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে বলে তার ধারণা।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর ও বাগমারা উপজেলার ৫০০ পুকুর ভেসে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ী এলাকায় প্রায় ২০০, তানোর উপজেলায় ১৫০ এবং বাগমারা এলাকায় ১৬০টি। এছাড়াও যেসব বিলের নিম্ন এলাকায় পুকুর রয়েছে সেগুলোও ভেসে গেছে। তবে কতগুলো পুকুর ভেসে গেছে এবং সেখানে কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপনের কাজ চলছে। রোববার বিকেলে চুড়ান্ত তথ্য জানানো যাবে বলে জানান এই মৎস কর্মকর্তা।