আসন্ন ২১ জুন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বিএনপি-জামাত নির্বাচনে আসতে ভয় পায়। তারা জনগণের রায়ের মুখোমুখী হতে ভয় পাচ্ছে। তাদেরকে অনেকবার নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সহ অনেক নেতা বলেছেন, আমাদের জায়গা থেকে আমিও বলেছি। কিন্তু তারা নির্বাচনে না এসে আবারো ২০১৪/২০১৫ সালের জ্বালাও-পোড়াও এর মতো অবস্থা তৈরি করতে চাচ্ছে।
শনিবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কাইছার রহমান চৌধুরী মিলনায়তনে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতি বিজড়িত রাজশাহীর তানোর-গোদাগাড়ীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি-জামাত তাদের পুরাতন খেলা আবার খেলছে। তারা নির্বাচনে আসতে চায় না, তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চায়। তাদের শর্ত মেনে নিলে তারা নির্বাচনে আসবে। তাদের শর্ত মানার মতো নয়। তাদের শর্ত অসাংবিধানিক, সেটি মামার বাড়ির আবদার বলে জাতির কাছে মনে হচ্ছে। তাদের দাবি হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। অথচ সংবিধান বলছে, তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। দেশের সর্বোচ্চ আদালত বলে দিয়েছে তত্ত্ববধায়ক সরকারের আর প্রয়োজন নেই। ভারত, ইংল্যান্ড সহ উন্নত দেশে যেভাবে নির্বাচনকালীন সরকার হয়। সেইভাবেই সরকার হবে, তার প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি উন্নত, সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে হয়। আমরা এখন যথেষ্ট উন্নত। আয়ের দিক দিয়েও একট পর্যায়ে পৌছে গেছি। আমাদের কাউকে মাঝখানে রেখে ভোট করতে হবে সেই বাস্তবতা নেই।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচনে আসেনি। এরপর তারা জ্বালাও- পোড়াও আন্দোলন করেছে, মানুষের সর্বনাশ করেছে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যারা অগ্নিদদ্ধ তারা বুঝছে পুড়ে যাওয়ার কষ্ট। তারা আবারো মানুষকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দূর রাখতে চায়। সেটি কি সম্ভব? ২০১৪ সালে নির্বাচন বন্ধ করতে পেরেছিলেন? পারেননি। নির্বাচন থেমে থাকেনি। এবারো থেমে থাকবে না।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা সংসদে গিয়ে সরকার গঠন করবে-সেই নির্বাচন তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সঠিক হবে? নাকি জিয়াউর রহমানের যে হ্যা/না ভোট ছিল। যে ভোটে জিয়াউর রহমান কোন কোন ভোটকেন্দ্র্রে শতভাগের বেশি ভোট পেয়ে যায়। বিশাল মাপের কারচুপি, ভোট বাক্স শুধু ধানের শীষে ভর্তি হয়ে থাকবে, সেই রকম ভোট কী তারা চান?। সেই দিন আর কোনদিন আসবে না। কারণ দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যথেষ্ট ভালো আছে।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী শুধু দৃষ্টিনন্দর শহর নয়, উন্নয়নের বাতিঘর হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। একটি সিটি এলাকা কেমন হতে পারে তার একটি প্রতিরূপ দেখতে পাচ্ছেন। এখানে সুন্দর ভবন হয়েছে, প্রশস্ত রাস্তা হয়েছে, আলোকায়ন হয়েছে, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, সড়কে সারা বছর ফুল ফোটে। এই কাজগুলো ধরে রেখে রাজশাহীকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শহরকে বড় করতে হবে। শহর সম্প্রসারণ করার পরে সেসব এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। ২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই প্রকল্পের ১২০০ কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আরো ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এরসাথে আরো প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প আনতে চাই। তাহলে আগামীতে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ বদরুজ্জামান রবু মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, কাকনহাট পৌরসভার মেয়র একেএম আতাউর রহমান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এ্যাড. একরামুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি এ্যাড মকবুল হোসেন খান, সাবেক সচিব জিল্লার রহমান, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান আখতার, মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী, রাজশাহী জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ তাজবুল হক, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আজম সেন্টু, কামারগাঁ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুসলেম উদ্দিন। সঞ্চালনায় করেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।#