রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার জনাব মো: আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়কে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করেছে আরএমপি।
আজ ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১ টায় আরএমপি পুলিশ লাইন্স ট্রেনিং স্কুল মাঠে পুলিশ কমিশনার জনাব মো: আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের বদলীজনিত বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক ও উপহার প্রদান করা হয়।
আরএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য ও সিভিলস্টাফবৃন্দ বিদায়ী পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের নেতৃত্বে কাজ করার বিভিন্ন অভিজ্ঞতা শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সাথে স্মৃতিচারণ করেন। এসময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে পুলিশ কশিমনার মহোদয়ে আরএমপিতে ২ বছর ৪ মাসের কর্মকালের খন্ড চিত্র নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। বক্তা তাঁর পরবর্তী কর্মস্থলে উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী অতিথি বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর থেকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে এবং পুলিশি সেবাকে তিলোত্তমা মহানগর রাজশাহীবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছি। এই কাজে আপনারা পাশে থেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আপনাদের সহযোগিতার কারণেই পুলিশের সেবা নগরবাসীর দৌড়গোড়ায় পৌঁছি দিয়ে নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছে আরএমপি।
রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আরএমপি সাইবার ক্রাইম ইউনিট। যার সুফল পাচ্ছে এ অঞ্চলের জনগণ। এছাড়াও সিসিটিভি স্থাপন, অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার তৈরি, ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব, হ্যালো আরএমপি অ্যাপস, কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি এবং কাউন্সিলিং, পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক ও আরএমপি ব্লাড ব্যাংক , টেলিমেডিসিন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। আধুনিক বাংলার স্মার্ট পুলিশ হয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে সেবা প্রদানে সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে তিনি দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও সনাক্তকরণে তাঁর নেওয়া বিভিন্ন নীতি ও বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণে রাজশাহী মহানগরী হয়েছে নিরাপদ নগরী, কমেছে অপরাধ, মামলা তদন্তের মানের উন্নতি ঘটেছে এবং বেড়েছে সাজার হার। তিনি তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী ও প্রাজ্ঞ নির্দেশনায় জননিরাপত্তা প্রতিবিধানে অসাধারণ মেধা ও যোগ্যতার সম্মিলন ঘটিয়েছেন। ফলে তারঁ কর্মকালে রাজশাহী মহানগরীতে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ঘটার মত উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকাকে অবিস্মরণীয় করতে পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর, রাজশাহী স্থাপন করা হয়েছে এবং “মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী পুলিশ” নামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে, যা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
পুলিশ কমিশনার তাঁর কর্মজীবনের প্রতিটি কর্মস্থলে যেভাবে সাফল্যস্মৃতি রেখেছেন, ঠিক সে আঙ্গিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশেও অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। তাঁর সকল পুলিশি এবং মানবিক উদ্যোগসমূহ রাজশাহী মহানগরবাসীর নিকট চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো: ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) বিজয় বসাক, বিপিএম, পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক অ্যান্ড ডিবি) জনাব সামসুন নাহার, বিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) জনাব মো: সাইফউদ্দীন শাহীন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ফোর্স ও সিভিলস্টাফবৃন্দ ।