১২ সেপ্টেম্বর রোজ সোমবার সকাল ১০ টার সময় গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের হলরুমে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্টিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলমের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা কমিটি
সভার বক্তরা বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং, বাল্যবিবাহ, চোরাচালান, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
গোদাগাড়ীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীরা। এক স্কুলছাত্রকে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে গিয়ে রোমহর্ষক নির্যাতন করেছে তারা। স্কুলছাত্র সামিউল আলম (১৪) তার পুরো শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়েছে কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীরা।
বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায় এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা বেশিরভাগ তাদের অর্থ আসে মাদক থেকে। মাদকের উপার্জিত অর্থ তাদের বেপরোয়া করে তুলেছে। যা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
কিশোর গ্যাংয়ের পাশবিক নির্যাতনের শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী সামিউলকে প্রথমে গোদাগাড়ী ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সামিউল বর্তমান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সভার উপস্থিত বক্তরা বলেন গোদাগাড়ীতে
বিভিন্ন দপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা খুবই শক্তিশালী,। পুলিশ, বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের কর্মকর্তা ও , জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
যেমন সীমান্ত এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া থাকা শর্তেও হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন চোরাচালান আসছে। সীমান্ত এলাকায় আরো নজরদারি বাড়াতে হবে। ইতিপূর্বে গোদাগাড়ীতে অনেক মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকবদ্র্য প্রতিরোধে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিককসহ সকলের একযোগে কাজ করলে অপকর্ম ও অপরাধ থাকবে না ।
গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে । কোন মাদক ব্যবসায়ী পার পাবে না। সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন পুলিশ সদস্য এর সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতা আছে, প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন থানায় আসতে কোন দালাল এর প্রয়োজন লাগে না। শ্রমিক, ভ্যানচালকসহ যে কেউ আসতে পারে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন মাদক ব্যবসায়ী, কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসী, শিশু নির্যাতন, কোন আপরাধ করে পার পাবে না।
সেই সাথে অন্যান্য বক্তাগণ বলেন, গোদাগাড়ীর আইনশৃঙ্খলা ভালই আছে, তবে আরও ভাল রাখার জন্য পুলিশ, বিজিপি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে অনেক সচেতন হতে হবে। গোদাগাড়ীতে মাদক, হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল,গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসায়ী গডফাদার এখানে রয়েছে। গোদাগাড়ীতে পুলিশের তালিকাভুক্ত ১৭৩ জন মাদকব্যসায়ী রযেছে।
চর আষাড়িয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক বলেন, আমার ইউনিয়ন এলাকায় ইদানিং হেরোইন, ইয়াবা,গাঁজা, মাদক ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। গোদাগাড়ী শিশু নিকোতনের অধ্যক্ষ বরজাহান আলী পিন্টু বলেন, গোদাগাড়ী আফজি পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে কিশোর গ্যাং লিডার, সদস্যরা ছাত্রীদের নিয়ে আড্ডা দেয়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ, মোঃ আব্দুল মালেক ভাইস-চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ,।
সভায় আরোও উপস্থিত ছিলেন
বিজিবি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, ও বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা।