রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতের ১৪৪ ধারা নিষেধাক্কা অমান্য করে জোরপূর্বক জমি দখল ও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি অভিযোগ উঠেছে। একটি পক্ষের হয়ে এমন অবৈধ কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলে তাকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত চেয়ে গত ২ আগস্ট রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবার আবেদন করেছেন পাকড়ী ইউনিয়নের মোশড়া পাড়া গ্রামের আজাহার আলী। জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন আজাহার আলী বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার ৩ নং পাকড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন একজন মাতাল ও সন্ত্রাসী। পাকড়ী ইউনিয়নের হাজী মানিকুল্লাহ্ ওয়াক্ফ এস্টেটের মোতওয়াল্লী আসিকুল ইসলাম চাঁদের নিকট থেকে এস্টেটের ৫১ বিঘা সম্পত্তি লিজ গ্রহণ করি এবং তার সাথে ৫ বছরের জন্য লিজ চুক্তি সম্পাদিত হয়। এক বছরের লিজ মানি বাবদ তিন লক্ষ ছয় হাজার টাকা প্রদান করা করি।এর পর থেকেই পাকড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীনের সহযোগিতায় সেই সম্পত্তি থেকে বেদখল করার চেষ্টা করলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহীনির বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়। যার নং ৭৪১ পি/২২ (গোদাগাড়ী)। আদালত প্রতিপক্ষ আসিকুল, ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন, রজব আলীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গত ১৩ জুলাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রোজ সাবিহা সুলতানা ১৪৪ ধারা আদেশ প্রদান করেন।এই ১৪৪ ধারার বিষয়টি চেয়ারম্যান অবহিত হওয়ার পর তার সন্ত্রাসী বাহীনিকে লিজকৃত সম্পত্তি জোর পূর্বক দখলের প্রকাশ্যে হুকুম দিলে তারা ওই সম্পত্তিতে লাঠি-লাদনা নিয়ে নেমে পড়ে এবং জমিতে কর্মরত আজাহার আলীর কামলাদেরকে লাঠি-লাদনা, হাসুয়াদিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ্র পর চেয়ারম্যানসহ তার সন্ত্রাসী বাহীনির বিরুদ্ধে আমলী আদালতে মামলা করা হয়। মামলায় চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন গত ২৪ ফেব্রুয়ারী আদালতে আত্নসমার্পন করে জামিন চাইতে গেলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলা হাজতে প্রেরণ করেন। সেই মামলায় ৭ দিন হাজত বাসের পর অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহীনি দিয়ে খুন-জখমের হুমকি দিয়ে আজাহারের বাড়ীতে লাঠি,রড় ও হাসুয়া নিয়ে উপস্থিত হয়ে আজাহারের ছোট ভাই আবুল বাশার এবং ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার গুরুতর জখম করে। এই ঘটনায় পুনরায় চেয়ারম্যানসহ তার লোকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয় । ওই মামলাতেও সে জামিন গ্রহণ করে। বর্তমানে চেয়ারম্যান আজাহার আলীসহ তার পরিবারকে মামলা তুলে না নিলে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি অব্যহত রেখেছেন বলে আজাহার আলী ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করছেন।এই বিষয়ে পাকড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এমন কোন তথ্য জানা নেই বা কোন নোটিশ আমার কাছে আসেনি। আর জমি দখলের বিষয়ে আমি জড়িত না। আজাহার আলী একের পর এক মামলায় আমাকে জাড়াচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে মিমাংসার উদ্যোগ নিলেও আজাহার আলী অনুপস্থিত ছিলেন। থানার ওসি এই বিষয়টি অবগত আছেন বলেও জানান।এই বিষয়ে গোদাগাড়ী থানার কাকনহাট তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মতিউর রহমান বলেন, ১৪৪ ধারা জারির বিষয়ে যাদের নাম আছে তারা সকলেই অবগত আছেন এবং এর প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান।চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোর চেষ্টা করা হলেও ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।