২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ইতিহাসের নৃশংসতম নারকীয় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
রবিবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী বেদীতে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনে অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন সংগঠনের সহ সভাপতি কাজী শহিদুল্লাহ লিটন, মজিবুর রহমান স্বপন, আব্দুল আলীম বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আজিম, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, আব্দুল্লাহ আল সায়েম, আরিফুর রহমান টিটু সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ছিল শনিবার। বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ ছিল। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে মঞ্চ নির্মাণ না করে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি ট্রাককে অস্থায়ী মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বুলেট প্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জে চেপে বিকেল ৫টার একটু আগে সমাবেশস্থলে পৌঁছান শেখ হাসিনা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের পর তিনি বক্তব্য শুরু করেন।
বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে বক্তৃতা শেষ করে শেখ হাসিনা তার হাতে থাকা একটি কাগজ ভাঁজ করতে করতে এগুতে থাকেন ট্রাক থেকে নামার সিঁড়ির কাছে। ঠিক সে মুহূর্তেই শুরু হয় গ্রেনেড হামলা। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে লাগল একের পর এক গ্রেনেড। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে ট্রাকে অবস্থানরত নেতারা এবং শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মানব ঢাল রচনা করে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে। পরে ঘাতকরা শেখ হাসিনার গাড়িকে টার্গেট করে গুলি চালায়। তাকে আড়াল করে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে জীবন দেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ।
পৃথিবীর ইতিহাসে বর্বরোচিত নৃশংস গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী, আজকের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা।
ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমানসহ ২৪ জন মারা গিয়েছিলেন। গ্রেনেডের স্প্রিন্টারের আঘাতে আহত হন ৫ শতাধিক নেতাকর্মী।
২১ আগস্টের সেই রক্তাক্ত ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। বাকিরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নারী নেত্রী আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগস্ট মারা যান। বর্বরোচিত ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন, ইসহাক মিয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় নিহত সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।